চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর শয়তান উঁচু একটি টিলার উপর উঠে চিৎকার করে বলল- হে মীনাবাসী! মুহাম্মাদ এবং বে-দ্বীন লোকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে একত্রিত হয়েছে। তোমরা কি তা অবগত আছ? আওয়াজ শুনে নাবী (ﷺ) বললেন- এটা হচ্ছে এই ঘাঁটির শয়তান। ওরে আল্লাহর দুশমন অচিরেই আমি তোর জন্যে সময় পাবো। অতঃপর তিনি লোকদেরকে নিজ নিজ তাঁবুতে চলে যেতে বললেন।
পরদিন সকাল হতে না হতেই কুরাইশদের একদল বিশিষ্ট লোক মদ্বীনাবাসীদের তাঁবুর কাছে গিয়ে বলল- আমাদের কাছে এই মর্মে সংবাদ পৌঁছেছে যে, গতরাতে তোমরা আমাদের এই লোকটির সাথে সাক্ষাত করেছ এবং আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য তাঁর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছ। আল্লাহর শপথ! আরবের যে কোন গোত্রের সাথে যুদ্ধ করার চেয়ে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করা আমাদের জন্য অধিক অপছন্দনীয়। অর্থাৎ আমরা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে মোটেই প্রস্ত্তত নই। যেহেতু খাযরাজ গোত্রের মুশরিক লোকেরা এই বায়আতের বিষয়বস্ত্ত সম্পর্কে অবগত ছিলনা তাই তারা আল্লাহর নামে শপথ করে বলতে লাগল- এ রকম কিছুই হয়নি। আমরা এ ব্যাপারে কিছুই জানিনা। আব্দুল্লাহ্ ইবনে উবাই মুনাফেকও সেখানে উপস্থিত ছিল। সে বলতে লাগল- এটি বানোয়াট খবর। আমার গোত্রের লোকেরা আমাকে না জানিয়ে এমন কিছু করতে পারেনা। আর আমি যদি মদ্বীনাতেও থাকতাম তারপর তারা আমার সাথে পরামর্শ না করে এ রকম কোন সিদ্বান্ত নিতনা। (মুসলমানগণ একজন অন্যজনের দিকে আড়চোখে তাকালেন এবং তারা ছিলেন চুপচাপ। কাফেরদের কথা তারা সমর্থনও করলেন না এবং প্রত্যাখ্যানও করলেন না) কুরাইশরা মদ্বীনার মুশরিকদের কথায় বিশ্বাস করে ফেরত চলে গেল। এভাবেই শান্তিপূর্ণভাবে আকাবার দ্বিতীয় বায়আত সমাপ্ত হলো।
বারা বিন মারুর স্বীয় সাথীদেরকে নিয়ে মদ্বীনার উদ্দেশ্যে ইয়াজিজ উপত্যকার দিকে রওয়ানা দিলেন। তাদের রওয়ানা দেয়ার পর বায়আতের খবর কুরাইশদের নিকট সত্য বলে প্রমাণিত হল। কুরাইশরা তাদের সন্ধানে বের হল। তারা ধাওয়া করে সা’দ বিন উবাদাকে পাকড়াও করে ফেলল এবং প্রহার করতে করতে মক্কায় নিয়ে গেল। মুতইম বিন আদী এবং হারিছ বিন হারব এসে তাকে উদ্ধার করে মদ্বীনার পথে ছেড়ে দিল।
ঐদিকে সা’দকে না পেয়ে পিছনে ফেরত আসার ব্যাপারে পরামর্শ করল। এমন সময় সা’দ এসে তাদের সাথে যোগ দিলেন। এবার তারা সকলেই মিলে মদ্বীনার পথে যাত্রা করলেন।