উপরোক্ত আলোচনা থেকে জানা গেল, রসূল (ﷺ) এবং তিনি যেই সুন্নাত ও দ্বীন নিয়ে আগমণ করেছেন, সে সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা এবং তাঁর আনুগত্য করার প্রয়োজন হচ্ছে সকল প্রকার প্রয়োজনের উর্ধ্বে। কেননা রসূল (ﷺ)-এর মাধ্যম ছাড়া দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের পথ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা, অপবিত্র বস্ত্ত থেকে পবিত্র বস্ত্তকে পার্থক্য করা এবং আল্লাহর রেযামন্দি অর্জন করা সম্ভব নয়। নাবী (ﷺ) যে বাণী, আমল, আখলাক ও হিদায়াত নিয়ে এসেছেন, তার সবই পবিত্র। সুতরাং তাঁর কথা, কাজ এবং আখলাক দিয়ে উম্মাতের সকল কথা, আমল ও আখলাকসমূহ ওজন করা হবে। তাঁর অনুসরণের মাধ্যমেই হিদায়াত প্রাপ্তগণ পথভ্রষ্টদের থেকে আলাদা হবেন। বান্দার যত প্রয়োজন রয়েছে, তার চেয়ে নাবী (ﷺ)-এর হিদায়াত সম্পর্কে জানা ও তাঁর অনুসরণের প্রয়োজন সর্বাধিক। কেননা তিনি যে পবিত্র সুন্নাত ও হিদায়াত নিয়ে এসেছেন, সে সম্পর্কে যে ব্যক্তি অজ্ঞ থাকবে, তার জীবনে বিভ্রান্তি শুরু হবে এবং সে ঐ মাছের মতই হবে, যাকে পানি থেকে উঠিয়ে ডাঙ্গায় ফেলে রাখা হয়েছে। সুতরাং যে বান্দা নাবী-রসূলের হিদায়াত থেকে দূরে থাকবে, তার অবস্থা এই মাছের ন্যায়ই হবে। শুধু তাই নয়; বরং তার অবস্থা এর চেয়েও অধিক ভয়াবহ হবে। জীবন্ত ও সতেজ আত্মার অধিকারী ব্যতীত অন্য কেউ এই মহান সত্যটি উপলব্ধি করতে সক্ষম নয়। যাদের অন্তর মৃত, তারা এ বিষয়টি অনুভবই করতে পারেনা।
যেহেতু উভয় জগতের (ইহ-পরকালের) সফলতা নাবী (ﷺ)-এর বরকতময় জীবনী এবং তাঁর সুন্নাতে তাইয়্যিবাহ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন ও তা বাস্তবায়নের উপর নির্ভরশীল, তাই প্রত্যেক নাজাত ও সৌভাগ্যকামী লোকের জন্য জরুরী হচ্ছে, নাবী (ﷺ), তাঁর পবিত্র সীরাত, তাঁর সুন্নাতে তাইয়্যিবা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা। যাতে করে সে জাহেল ও জাহেলিয়াতের অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়ে তাঁর পবিত্র অনুসারী ও সাথীদের কাতারে শামিল হতে পারে।
কিছু লোক এমন রয়েছে, যে নাবী (ﷺ) এর পবিত্র জীবনী, তাঁর সুন্নাত ও হিদায়াতের আলো থেকে সম্পূর্ণ মাহরূম (বঞ্চিত), কেউ বা তা থেকে খুব সামান্য গ্রহণ করাকেই যথেষ্ট মনে করেছে। আবার কতিপয় লোক এ থেকে পরিপূর্ণ অংশ গ্রহণ করেছে। বস্ত্ততঃ সকল প্রকার ফজল ও করম (অনুগ্রহ ও নিয়ামাত) আল্লাহর হাতে। তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে তা প্রদান করেন। আল্লাহ্ তা‘আলা অফুরন্ত কল্যাণের মালিক।