ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
কিয়ামতের আলামত কিয়ামতের বড় আলামত আব্দুল্লাহ্ শাহেদ আল-মাদানী
৬. বিশাল একটি ধোঁয়ার আগমণ

কিয়ামতের অন্যতম বড় আলামত হচ্ছে আখেরী যামানায় কিয়ামতের সন্নিকটবর্তী সময়ে বিশাল আকারের একটি ধোঁয়া বের হয়ে আকাশ এবং যমীনের মধ্যবর্তী খালি জায়গা পূর্ণ করে ফেলবে। এই ধোঁয়া মুমিন ব্যক্তিদেরকে সামান্য একটু সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত করে দিবে। কাফেরদের শরীরের ভিতরে প্রচন্ডভাবে প্রবেশ করবে। ফলে তাদের শরীর ফুলে যাবে এবং শরীরের প্রতিটি ছিদ্র দিয়ে ধোঁয়া বের হবে। এটি তাদের জন্য একটি যন্ত্রনাদায়ক আযাবে পরিণত হবে। আললাহ তাআলা বলেনঃ

)فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ (১০) يَغْشَى النَّاسَ هَذَا عَذَابٌ أَلِيمٌ (১১) رَبَّنَا اكْشِفْ عَنَّا الْعَذَابَ إِنَّا مُؤْمِنُونَ (১২) أَنَّى لَهُمْ الذِّكْرَى وَقَدْ جَاءَهُمْ رَسُولٌ مُبِينٌ (১৩) ثُمَّ تَوَلَّوْا عَنْهُ وَقَالُوا مُعَلَّمٌ مَجْنُونٌ (১৪) إِنَّا كَاشِفُوْا الْعَذَابِ قَلِيْلًا إِنّكُمْ عَائِدُوْنَ (১৫)(

‘‘অতএব তুমি অপেক্ষা করো সেই দিনের যেদিন আকাশ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হবে এবং তা আচ্ছন্ন করে ফেলবে মানব জাতিকে। এটা হবে এক যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। তখন তারা বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এই শাস্তি হতে মুক্তি দিন আমরা ঈমান আনয়ন করবো। তারা কি করে উপদেশ গ্রহণ করবে? তাদের কাছে তো এসেছে সুস্পষ্ট একজন রাসূল। অতঃপর তারা তাঁকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে বলেছেঃ সে তো শেখানো কথা বলছে, সে তো একজন পাগল’’। আমি আযাব একটুখানি সরিয়ে নিচ্ছি। কিন্তু এরপরও তোমরা পূর্বের ন্যায় আচরণ করবে। (সূরা দুখানঃ ১০-১৫)

মুসলিম শরীফে হুজায়ফা ইবনে উসায়েদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ

اطَّلَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَيْنَا وَنَحْنُ نَتَذَاكَرُ فَقَالَ مَا تَذَاكَرُونَ قَالُوا نَذْكُرُ السَّاعَةَ قَالَ إِنَّهَا لَنْ تَقُومَ حَتَّى تَرَوْنَ قَبْلَهَا عَشْرَ آيَاتٍ فَذَكَرَ الدُّخَانَ وَالدَّجَّالَ وَالدَّابَّةَ وَطُلُوعَ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا وَنُزُولَ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَأَجُوجَ وَمَأْجُوجَ وَثَلَاثَةَ خُسُوفٍ خَسْفٌ بِالْمَشْرِقِ وَخَسْفٌ بِالْمَغْرِبِ وَخَسْفٌ بِجَزِيرَةِ الْعَرَبِ وَآخِرُ ذَلِكَ نَارٌ تَخْرُجُ مِنَ الْيَمَنِ تَطْرُدُ النَّاسَ إِلَى مَحْشَرِهِمْ

‘‘একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছে আগমণ করলেন। আমরা তখন কিয়ামত সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি বললেনঃ যতদিন তোমরা দশটি আলামত না দেখ ততদিন কিয়ামত হবেনা। (১) ধোঁয়া (২) দাজ্জালের আগমণ (৩) দাববা (ভূগর্ভ থেকে নির্গত অদ্ভুত এক জানোয়ারের আগমণ) (৪) পশ্চিম আকাশে সূর্যোদয় (৫) ঈসা ইবনে মারিয়ামের আগমণ ৬) ইয়াজুয-মা’জুযের আবির্ভাব (৭) পূর্বে ভূমিধস (৮) পশ্চিমে ভূমিধস (৯) আরব উপদ্বীপে ভূমিধস (১০) সর্বশেষে ইয়ামান থেকে একটি আগুন বের হয়ে মানুষকে সিরিয়ার দিকে হাঁকিয়ে নিবে’’।[1] তিনি আরো বলেনঃ

إِنَّ رََّبكُمْ أَنْذَرَكُمْ ثَلَاثًا: الدُّخَانَ يَأْخُذُ الْمُؤْمِنِ كَالزَّكَمَةِ وَيَأْخُذُ الْكَافِرَ فَيَنْتَفِخُ حَتَّى يَخْرُجُ مِنْ كُلِّ مَسْمَعٍ مِنْهُ وَالثَّانِيَةَ الدَّابَّةَ وَالثَّالِثَةَ الدَّجَّالَ

‘‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে তিনটি বিষয়ে সতর্ক করছেন। (১) ধোঁয়া, যা মু’মিনকে কেবল এক প্রকার সর্দিতে আক্রান্ত করে দেবে এবং কাফেরের শরীরের প্রতিটি ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করে প্রতিটি ছিদ্র দিয়ে বের হতে থাকবে। (২) ভূগর্ভ থেকে নির্গত অদ্ভুত এক জানোয়ারের আগমণ। (৩) দাজ্জালের আগমণ।[2]

মোটকথা কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে ধোঁয়ার আলামতটি বের হয়ে সমগ্র পৃথিবী ছেয়ে ফেলবে। কুরআনের আয়াত ও বিশুদ্ধ হাদীছের মাধ্যমে প্রমাণিত বিধায় তাতে বিশ্বাস করা প্রত্যেক মুমিনের উপর ওয়াজিব।

[1] - মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।

[2] - তাফসীরে তাবারী, ইবনে কাছীর।