মহান প্রতিপালক আল্লাহ আমাদেরকে কত নেয়ামত দান করেছেন, তা গুনে শেষ করা যায় না। এই সকল নেয়ামতের শুক্র আদায় করা বান্দার জন্য ফরয। শুক্র আদায়ের নিয়ম হল, প্রথমত: অন্তরে এই স্বীকার করা যে, এই নেয়ামত আল্লাহর তরফ থেকে আগত। দ্বিতীয়ত: মুখে তার শুক্র আদায় করা। তৃতীয়ত: কাজেও শুক্র প্রকাশ করা। অর্থাৎ, সেই নেয়ামত তাঁরই সন্তুষ্টির পথে খরচ করা। অন্যথা নাশুকরী বা কৃতঘ্নতা হবে।
হ্ঠাৎ কোন সুসংবাদ, সুখের খবর বা সম্পদ লাভের খবর পেলে অথবা বড় বিপদ দূর হওয়ার সংবাদ শুনলে মহান আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে শুকরানার (একটি) সিজদাহ মুস্তাহাব।
মহানবী (ﷺ) কোন আনন্দদায়ক সংবাদ শুনলে অথবা শুভ সংবাদ পেলে আল্লাহ তাআলাকে শুকরিয়া জানানোর জন্য সিজদায় পতিত হতেন। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, মিশকাত ১৪৯৪নং)
হযরত আলী (রাঃ) যখন মহানবী (ﷺ)-কেহামাযান গোত্রের লোকেদের ইসলামে দীক্ষিত হওয়ার কথা লিখলেন, তখন তিনি সিজদাহ করলেন এবং উঠে বললেন, “হামাযানের উপর সালাম,হামাযানের উপর সালাম।” (বায়হাকী)
আব্দুর রহ্মান বিন আওফ (রাঃ) বলেন, একদা আল্লাহর রসূল (ﷺ) বের হয়ে এক খেজুর বাগানে প্রবেশ করে সিজদায় গেলেন। তিনি এত লম্বা সময় ধরে সিজদায় থাকলেন যে, আমি আশঙ্কা করলাম, হয়তো বা আল্লাহ তাঁর প্রাণ হ্রণ করে নিয়েছেন। আমি নিকটে উপস্থিত হয়ে দেখতে গেলাম। তিনি মাথা তুলে বললেন, “আব্দুর রহ্মান! কি ব্যাপার তোমার?” আমি ঘটনা খুলে বললে তিনি বললেন, “জিবরীল (আঃ) আমাকে বললেন, আমি কি আপনাকে সুসংবাদ দেব না? আল্লাহ আয্যা জাল্ল্ আপনাকে বলেন, ‘যে ব্যক্তি তোমার প্রতি দরুদ পড়বে, আমি তার প্রতি রহ্মত বর্ষণ করব। আর যে ব্যক্তি তোমার প্রতি সালাম জানাবে, আমি তাকে শান্তি দান করব।’ এ খবর শুনে আমি আল্লাহ আয্যা অজাল্লার নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে সিজদাহ করলাম।” (আহমাদ, মুসনাদ,হাকেম, মুস্তাদরাক)
তওবা কবুল হওয়ার সুসংবাদ এলে কা’ব বিন মালেক সিজদাহ করেছিলেন। (বুখারী)
শুকরানার সিজদার জন্য ওযূ জরুরী নয়। জরুরী নয় তকবীরও।