চাশতের নামায মুস্তাহাব নফল। এই নামাযের রয়েছে বিরাট মাহাত্ম ও সওয়াব।
হযরত আবু যার (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, “প্রত্যহ্ সকালে তোমাদের প্রত্যেক অস্থি-গ্রন্থির উপর (তরফ থেকে) দাতব্য সদকাহ্ রয়েছে; সুতরাং প্রত্যেক তাসবীহ্ হল সদকাহ্ প্রত্যেক তাহ্মীদ (আলহামদু লিল্লা-হ্ পাঠ) সদকাহ্, প্রত্যেক তাহ্লীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লা-হ্ পাঠ) সদকাহ্, প্রত্যেক তকবীর (আল্লা-হু আকবার পাঠ) সদকাহ্, সৎকাজের আদেশকরণ সদকাহ্, এবং মন্দ কাজ হতে নিষেধকরণও সদকাহ্। আর এসব থেকে যথেষ্ট হবে চাশতের দুই রাকআত নামায।” (মুসলিম ৭২০ নং)
হযরত বুরাইদাহ্ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ) এর নিকট শুনেছি, তিনি বলেছেন, “মানবদেহে ৩৬০টি গ্রন্থি আছে। প্রত্যেক ব্যক্তির উপর ঐ প্রত্যেক গ্রন্থির তরফ থেকে দেয় সদকাহ্ রয়েছে।” সকলে বলল, ‘এত সদকাহ্ দিতে আর কে সক্ষম হবে, হে আল্লাহর রসূল?’ তিনি বললেন, “মসজিদ হতে কফ (ইত্যাদি নোংরা) দূর করা, পথ হতে কষ্টদায়ক বস্তু (কাঁটা-পাথর প্রভৃতি) দূর করা এক একটা সদকাহ্। যদি তাতে সক্ষম না হও তবে দুই রাকআত চাশতের নামায তোমার সে প্রয়োজন পূর্ণ করবে।” (আহ্মদ,ও শব্দগুলি তাঁরই, আবু দাঊদ, ইবনে খুযাইমাহ্, ইবনে হিব্বান, সহীহ তারগীব ৬৬১ নং)
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আম্র বিন আস (রাঃ) প্রমুখাৎ বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) এক যোদ্ধাবাহিনী প্রেরণ করেন। এই যুদ্ধ সফরে তারা বহু যুদ্ধলব্ধ সম্পদ লাভ ক’রে খুব শীঘ্রই ফিরে আসে। লোকেরা তাদের যুদ্ধক্ষেত্রের নিকটবর্তিতা, লব্ধ সম্পদের আধিক্য এবং ফিরে আসার শীঘ্রতা নিয়ে সবিময় বিভিন্ন আলোচনা করতে লাগল। তা শুনে আল্লাহর রসূল (ﷺ) বললেন, “আমি কি তোমাদেরকে ওদের চেয়ে নিকটতর যুদ্ধক্ষেত্র, ওদের চেয়ে অধিকতর লব্ধ সম্পদ এবং ওদের চেয়ে শীঘ্রতর ফিরে আসার কথার সন্ধান বলে দেব না? যে ব্যক্তি সকালে ওযু করে চাশতের নামাযের উদ্দেশ্যে মসজিদে যায় সে ব্যক্তি ওদের চেয়ে নিকটতর যুদ্ধক্ষেত্রে যোগদান করে, ওদের চেয়ে অধিকতর সম্পদ লাভ করে এবং ওদের চেয়ে অধিকতর শীঘ্র ঘরে ফিরে আসে।” (আহ্মদ, ত্বাবারানী, সহীহ তারগীব ৬৬৩ নং)
হযরত উক্ববাহ্ বিন আমের জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, “আল্লাহ আয্যা অজাল্ল্ বলেন, ‘হে আদম সন্তান! দিনের প্রথমাংশে তুমি আমার জন্য চার রাকআত নামায পড়তে অক্ষম হ্য়ো না, আমি তার প্রতিদানে তোমার দিনের শেষাংশের জন্য যথেষ্ট হ্ব।” (আহ্মদ, আবু য়্যালা, সহীহ তারগীব ৬৬৬ নং)
প্রকাশ থাকে যে, যুহার নামায পড়ে ‘বাবুয যুহা’ দিয়ে জান্নাতে যাওয়ার হাদীস সহীহ নয়। (দেখুন : যাদুল মাআদ, ইবনুল কাইয়েম ১/৩৪৯ টীকা নং ১)