একই নামায দুইবার পড়া নিষিদ্ধ। মহানবী (ﷺ) বলেন, “একই নামাযকে একই দিনে দুইবার পড়ো না।” (আবূদাঊদ, সুনান ৫৭৯নং)
একদা তিনি এক সাহাবীকে ফজরের পরে নামায পড়তে দেখে বললেন, “এটি আবার কোন্ নামায? (ফজরের নামায কি দুইবার?)” (আহমাদ, মুসনাদ, আবূদাঊদ, সুনান ১২৬৭, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান ১১৫৪, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ, ইবনে হিব্বান, সহীহ)
কিন্তু যদি কেউ কোন অসুবিধার কারণে বাসায় নামায পড়ে নিয়ে মসজিদে এসে দেখে যে, তখনও জামাআত চলছে, তাহলে জামাআতের ফযীলত পাওয়ার আশায়, এক জামাআতে (মসজিদে) নামায পড়ার পর দ্বিতীয় জামাআতে (মসজিদে) কোন কাজের খাতিরে গিয়ে জামাআত চলছে দেখলে অধিক সওয়াবের আশায়, ইমাম অত্যন্ত দেরী করে নামায পড়লে আওয়াল অক্তে নামায পড়ে নেওয়ার পর পুনরায় ঐ ইমামের জামাআতে এবং এ সকল ক্ষেত্রে নফলের নিয়তে ও বেনামাযী বা জামাআত ত্যাগী হওয়ার অপবাদ অপনোদন করার উদ্দেশ্যে একই নামায দ্বিতীয়বার পড়া উত্তম। অনুরুপ কোন সাধারণ মসজিদের ইমাম শ্রেষ্ঠতর মসজিদে (মাহাত্মপূর্ণ ৪ মসজিদের কোন একটিতে) নামায পড়ার পর নিজের মসজিদে ইমামতি করার জন্য, অথবা একাকী নামাযীকে জামাআতের সওয়াব অর্জন করাবার উদ্দেশ্যেও পড়ে নেওয়া নামায নফলের নিয়তে পুনরায় পড়া যায়।
একদা মসজিদে খাইফে তিনি ফজরের নামাযে সালাম ফিরে দেখলেন, মসজিদের এক প্রান্তে দুই ব্যক্তি জামাআতে নামায পড়েনি। কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বলল, ‘আমরা আমাদের বাসায় নামায পড়ে নিয়েছি।’ তিনি বললেন, “এমনটি আর করো না। বরং যখন তোমাদের কেউ নিজ বাসায় নামায পড়ে নেয়, অতঃপর (মসজিদে এসে) দেখে যে, ইমাম নামায পড়ে নি, তখন সে যেন (দ্বিতীয়বার) তাঁর সাথে নামায পড়ে। আর এ নামায তার জন্য নফল হবে।” (আবূদাঊদ, সুনান ৫৭৫, তিরমিযী, সুনান ২১৯, নাসাঈ, সুনান, মিশকাত ১১৫২, জামে ৬৬৭নং)
সাহাবী মিহ্জান (রাঃ) এক মজলিসে আল্লাহর রসূল (ﷺ)-এর সাথে বসেছিলেন। ইতিমধ্যে আযান (ইকামত) হলে আল্লাহর রসূল (ﷺ) উঠে গেলেন। তিনি নামায পড়ে এসে দেখলেন, মিহ্জান তাঁর সেই মজলিসেই বসে আছেন। আল্লাহর রসূল (ﷺ) তাঁকে বললেন, “লোকেদের সাথে নামায পড়তে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি কি মুসলিম নও?” মিহ্জান বললেন, ‘অবশ্যই, হে আল্লাহর রসূল! তবে আমি আমার ঘরে নামায পড়ে নিয়েছি।’ এ কথা শুনে আল্লাহর রসূল (ﷺ) তাঁকে বললেন, “তুমি নামায পড়ার পর যখন মসজিদে আস এবং নামাযের জামাআত শুরু হয়, তখন তুমিও লোকেদের সাথে নামায পড়ে নাও; যদিও তুমি পূর্বে সে নামায পড়ে নিয়ে থাক।” (মালেক, মুঅত্তা, নাসাঈ, সুনান, মিশকাত, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১৩৩৭নং)
একদা মহানবী (ﷺ) আবূ যার (রাঃ)-কে বললেন, “তোমার অবস্থা কি হবে, যখন এমন এমন আমীর হবে, যারা নামায মেরে ফেলবে অথবা যথাসময় থেকে দেরী করে পড়বে?” আবূ যার (রাঃ) বললেন, ‘আপনি আমাকে কি আদেশ করেন?’ তিনি বললেন, “তুমি যথাসময়ে নামায পড়ে নাও। অতঃপর যদি সেই নামায তাদের সাথে পাও, তাহলে তা আবার পড়ে নাও; এটা তোমার জন্য নফল হবে।” (মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান, মিশকাত ৬০০নং)
মুআয বিন জাবাল (রাঃ) মহানবী (ﷺ) এর সাথে তাঁর মসজিদে (নববীতে) নামায পড়তেন। অতঃপর নিজ গোত্রে ফিরে এসে ঐ নামাযেরই ইমামতি করতেন। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১১৫০ নং)
মহানবী (ﷺ) একদা এক ব্যক্তিকে একাকী নামায পড়তে দেখলে তিনি অন্যান্য সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বললেন, “এমন কেউ কি নেই, যে এর সাথে নামায পড়ে একে (জামাআতের সওয়াব) দান করে?” এ কথা শুনে এক ব্যক্তি উঠে তার সাথে নামায পড়ল। (আবূদাঊদ, সুনান ৫৭৪, তিরমিযী, সুনান, মিশকাত ১১৪৬ নং) অথচ সে মহানবী (ﷺ) এর সাথে ঐ নামায পূর্বে পড়েছিল।
দুটি নামাযের মধ্যে কোন্ নামাযটি নফল হবে সে বিষয়ে হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, ‘উভয় নামাযের মধ্যে কোন্টি আমার (ফরয) নামায গণ্য করব?’ উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘এ এখতিয়ার কি তোমার আছে? এ এখতিয়ার আছে একমাত্র আল্লাহ আয্যা জাল্লারই। তিনি উভয়ের মধ্যে যেটিকে ইচ্ছা ফরয রুপে গণ্য করবেন।’ (মালেক, মুঅত্তা, মিশকাত ১১৫৬নং) অবশ্য পূর্বোক্ত অনেক বর্ণনায় স্পষ্ট আছে যে, শেষের নামাযটাই নফল গণ্য হবে।