তাওহীদে রুবুবিয়্যাহ হল দৃঢ়ভাবে এ বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ তা’আলা সব কিছুর প্রতিপালক, তিনিই সব কিছুর মালিক, সৃষ্টি কর্তা, ব্যবস্থাপক ও পরিচালক। তার রাজত্বে কোন অংশীদার নেই। তিনি দুর্দশাগ্রস্ত হন না, যে কারণে তাঁর কোন সাহায্যকারীর প্রয়োজন হতে পারে। তাঁর ফয়সালাকে কেউ পরিবর্তন করতে পারে না, তার আদেশ প্রত্যাখ্যান করার মত কেউ নেই, তাঁর কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, তাঁর অনুরূপ আর কেউ নেই, নেই তাঁর কোন সমতুল্য। তাঁর প্রতিপালনাধীন কোন বিষয়ের বিরোধী কেউ নেই এবং তাঁর নাম ও গুণাবলীতেও তাঁর কোন শরীক নেই। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ وَجَعَلَ الظُّلُمَاتِ وَالنُّورَ ثُمَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ يَعْدِلُونَ
‘‘যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্যে যিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং সৃষ্টি করেছেন আলো ও অন্ধকার অতঃপর কাফেররা তাদের প্রতিপালকের সাথে শিরক করে’’। (সূরা আন-আমঃ ১) আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
‘‘যাবতীয় প্রশংসা কেবল আল্লাহরই জন্য যিনি বিশ্বচরাচরের পালনকর্তা।’’ (সূরা ফাতিহাঃ ১) আল্লাহ্ তা’আলা আরো বলেনঃ
قُلْ مَنْ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ قُلْ اللَّهُ قُلْ أَفَاتَّخَذْتُمْ مِنْ دُونِهِ أَوْلِيَاءَ لاَ يَمْلِكُونَ لأَنفُسِهِمْ نَفْعًا وَلاَ ضَرًّا قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الأَعْمَى وَالْبَصِيرُ أَمْ هَلْ تَسْتَوِي الظُّلُمَاتُ وَالنُّورُ أَمْ جَعَلُوا لِلَّهِ شُرَكَاءَ خَلَقُوا كَخَلْقِهِ فَتَشَابَهَ الْخَلْقُ عَلَيْهِمْ قُل اللَّهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ
‘‘বলুন! কে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর প্রতিপালক? বলুনঃ আল্লাহ। বলুনঃ তবে কি তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করেছো, যারা নিজেদের লাভ ও ক্ষতি সাধনে সক্ষম নয়? আপনি বলুনঃ অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান? অথবা অন্ধকার ও আলো কি এক? তবে কি তারা আল্লাহর এমন শরীক স্থাপন করেছে যারা তাঁর সৃষ্টির মত সৃষ্টি করেছে যে কারণে সৃষ্টি তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ঘটিয়েছে? বলুনঃ আল্লাহ সকল বস্ত্তর স্রষ্টা; তিনি একক ও পরাক্রমশালী’’। (সূরা রা’দঃ ১৬) আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
اللَّهُ الَّذِي خَلَقَكُمْ ثُمَّ رَزَقَكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ هَلْ مِنْ شُرَكَائِكُمْ مَنْ يَفْعَلُ مِنْ ذَلِكُمْ مِنْ شَيْءٍ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ
‘‘আল্লাহই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদেরকে রিযিক দিয়েছেন। তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন ও পরে তোমাদেরকে জীবিত করবেন। তোমাদের শরীকদের এমন কেউ আছে কি যে এ সবের কোন একটি করতে পারে? তারা যাদেরকে শরীক করে আল্লাহ তা হতে পবিত্র ও মহান’’। (সূরা রোমঃ ৪০) আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ
هَذَا خَلْقُ اللَّهِ فَأَرُونِي مَاذَا خَلَقَ الَّذِينَ مِنْ دُونِهِ
‘‘এটা আল্লাহর সৃষ্টি। সুতরাং তিনি ছাড়া অন্যরা যা সৃষ্টি করেছে তা আমাকে দেখাও’’। (সূরা লুকমানঃ ১১) আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ
أَمْ خُلِقُوا مِنْ غَيْرِ شَيْءٍ أَمْ هُمْ الْخَالِقُونَ * أَمْ خَلَقُوا السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ بَل لاَ يُوقِنُونَ
‘‘তারা কি কোন কিছু ব্যতীতই সৃষ্টি হয়েছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা? না কি তারা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছে? বরং তারা বিশ্বাস করে না’’। (সূরা তুরঃ ৩৫-৩৬) আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ
رَبُّ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا فَاعْبُدْهُ وَاصْطَبِرْ لِعِبَادَتِهِ هَلْ تَعْلَمُ لَهُ سَمِيًّا
‘‘ তিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং এতোদু’ভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সবারই প্রতিপালক; সুতরাং তুমি তাঁরই এবাদত কর এবং তাঁর এবাদতে প্রতিষ্ঠিত থাক। তুমি কি তাঁর সমমান সম্পন্ন কাউকে জান? (সূরা মারইয়ামঃ ৬৫) আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ
لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ البَصِيرُ
‘‘কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নয়। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা’’। (সূরা শূরাঃ ১১) আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ
وَقُلْ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي لَمْ يَتَّخِذْ وَلَدًا وَلَمْ يَكُنْ لَهُ شَرِيكٌ فِي الْمُلْكِ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ وَلِيٌّ مِنْ الذُّلِّ وَكَبِّرْهُ تَكْبِيرًا
‘‘যাবতীয় প্রশংসা কেবল আল্লাহর জন্য যিনি সন্তান গ্রহণ করেন নি, তাঁর রাজত্বে কোন অংশীদার নেই। তিনি দুর্দশাগ্রস্ত হন না যে কারণে তাঁর কোন সাহায্যকারীর প্রয়োজন। সুতরাং আপনি তাঁর যথাযত বড়ত্ব ঘোষণা করুন’’। (সূরা বানী ইসরাঈলঃ ১১) আল্লাহ তা’আলা আরো বলেনঃ
قُلْ ادْعُوا الَّذِينَ زَعَمْتُمْ مِنْ دُونِ اللَّهِ لاَ يَمْلِكُونَ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ فِي السَّمَوَاتِ وَلاَ فِي الأَرْضِ وَمَا لَهُمْ فِيهِمَا مِنْ شِرْكٍ وَمَا لَهُ مِنْهُمْ مِنْ ظَهِيرٍ * وَلاَ تَنفَعُ الشَّفَاعَةُ عِنْدَهُ إِلاَّ لِمَنْ أَذِنَ لَهُ حَتَّى إِذَا فُزِّعَ عَنْ قُلُوبِهِمْ قَالُوا مَاذَا قَالَ رَبُّكُمْ قَالُوا الْحَقَّ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيرُ
‘‘বলুনঃ তোমরা আহবান কর তাদেরকে যাদেরকে তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে উপাস্য মনে করতে। তারা আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে অণু পরিমাণ কিছুর মালিক নয়, এতোদু’ভয়ে তাদের কোন অংশও নেই এবং তাদের কেউ আল্লাহর সহায়কও নয়। যার জন্যে অনুমতি দেয়া হয় তাঁর জন্যে ব্যতীত অন্য কারো সুপারিশ আল্লাহর নিকট ফলপ্রসু হবে না। পরে যখন তাদের অন্তর থেকে ভয়-ভীতি দূর হয়ে যাবে তখন তারা পরস্পরে বলবেঃ তোমাদের প্রতিপালক কী বললেন? তারা বলবেঃ তিনি সত্য বলেছেন। তিনি সর্বোচ্চ, মহান’’। (সূরা সাবাঃ ২২-২৩)