ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
ফাতাওয়া ও প্রশ্নোত্তর দৈনন্দিন জীবন এবং সমসাময়িক বিষয় সম্পর্কে আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
গর্ভবতী মহিলাদেরকে সরকারি যে অনুদান বা ভাতা দেওয়া হয় তা নেওয়া কি জায়েজ?​

বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়-এর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় দরিদ্র মা’র জন্য মাতৃত্ব কালীন ভাতা প্রদান করা হয়। এই ভাতা গ্রহণের কয়েকটি শর্তের মধ্যে অন্যতম একটি শর্ত হচ্ছে, পরিবারের আয় মাসিক সর্বনিম্ন ৮ হাজার টাকা হওয়া। (যা দারিদ্র্যতার সূচক হিসেবে ধরা হয়েছে)।
[সূত্র: বাংলাদেশ সরকার, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মাতৃত্বকাল ভাতা কর্মসূচী-mowca-portal-gov bd]

অতএব যে ব্যক্তি উক্ত ভাতা গ্রহণের জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শর্তাবলীর যথাযথভাবে পূরণ করতে সক্ষম হবে সে স্বাচ্ছন্দ্যে তা গ্রহণ করতে পারে। কেননা এটি সরকারি অনুদান।
বাংলাদেশ সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের বক্তব্য অনুযায়ী, দেশে মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, শীর্ণকায় ও খর্বাকার শিশুর সংখ্যা কমিয়ে আনা এবং শিশুর বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ মানবসম্পদ তৈরিতে অবদানের উদ্দেশ্যে এই অনুদান প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
সুতরাং নির্ধারিত শর্তাবলী পূরণ সাপেক্ষে একজন দরিদ্র মার জন্য তা গ্রহণ করতে কোন বাধা নেই। তবে কোনোভাবেই শর্ত লঙ্ঘন করে বা দুর্নীতির মাধ্যমে এই অনুদান গ্রহণ করা বৈধ নয়। এ ক্ষেত্রে দুর্নীতিকারী এবং দুর্নীতিতে সহযোগিতাকারী দুজন্যই আল্লাহর নিকট গুনাহগার বলে বিবেচিত হওয়ার পাশাপাশি দেশের প্রচলিত আইনেও অপরাধী বলে গণ্য হবে।
অনুরূপভাবে সরকার যদি এই ভাতা গ্রহণের জন্য ইসলামি শরিয়তের সাথে সাংঘর্ষিক কোনও শর্তারোপ করে তাহলে ভাতা পাওয়ার জন্য উক্ত শর্ত পূরণ করা জায়েজ নেই।

এই বিধান সরকার কর্তৃত্ব প্রদত্ত বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা সহ সর্ব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

ফতোয়া: সৌদি আরবের সাবেক প্রধান মুফতি বিশ্ববরেণ্য আলেম আব্দুল আজিজ বিন বায রাহ. [মৃত্যু: ১৯৯ খৃষ্টাব্দ]-এর ফতোয়া:
যাদের অভাব নেই তাদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার জন্য নিবন্ধনের বিধান

প্রশ্ন: যার অভাব নেই তার জন্য কি ‘সামাজিক নিরাপত্তা’ গ্রহণ করা জায়েজ?
উত্তর:


الذي نعلم أن الحكومة وفقها الله جعلت الضمان الاجتماعي للفقير، فالذي لا تتوفر فيه الشروط ليس له أخذ الضمان وليس له أن يكذب، أما الذي يكذب ويزعم أنه فقير أو تزعم أنها ليست ذات زوج وهي ذات زوج أو ما أشبه ذلك فليس له أخذ ذلك.
فالحاصل: أنه لا يجوز أخذ الضمان إلا للذي توافرت فيه الشروط التي وضعتها الدولة، هذا هو الواجب عليه، الواجب أن يتقي الله المؤمن وأن يحذر أخذ شيء لا يحل له، الله المستعان

“যেটা আমরা জানি, সরকার (আল্লাহ তাদেরকে তাওফিক দান করুন) গরিবদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। সুতরাং যার মধ্যে শর্তাবলী যথাযথভাবে পাওয়া যাবে না তার জন্য এই ‘নিরাপত্তা’ নেওয়ার অধিকার নেই। মিথ্যা বলাও তার জন্য বৈধ নয়।
সুতরাং সে ব্যক্তি এই নিরাপত্তা গ্রহণ করবে যার মধ্যে প্রয়োজনীয় শর্তাবলী বিদ্যমান রয়েছে। আর যে ব্যক্তি মিথ্যা বলে বা মিথ্যা দাবি করে যে, সে দরিদ্র অথবা দাবী করে যে, তার স্বামী নেই অথচ তার স্বামী আছে ইত্যাদি তার জন্য তা গ্রহণ করা বৈধ নয়।
মোটকথা, যার মধ্যে রাষ্ট্র কর্তৃক নির্ধারিত শর্তাবলী পরিপূর্ণভাবে পাওয়া যাবে সে ছাড়া অন্য কারও জন্য নিরাপত্তা অনুদান গ্রহণ করা জায়েজ নয়। এটাই তার উপর অত্যাবশ্যক। একজন ইমানদার ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব হলো, সে আল্লাহকে ভয় করবে এবং এমন কিছু গ্রহনের ব্যাপারে সতর্ক থাকবে যা তার জন্য হালাল নয়। আল্লাহ সাহায্য করুন।” [binbaz. org]

আল্লাহু আলাম।