বাইবেলের মূল আলোচ্য বিষয় বনি-ইসরাইল বা ইসরাইল সন্তানদের দ্বাদশ বংশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, ধর্ম ও কর্ম। কিন্তু অবাক বিষয় হল, এ দ্বাদশ বংশের নামকরণেও বাইবেলের পুরাতন ও নতুন নিয়মের মধ্যে বৈপরীত্য বিদ্যমান। আদিপুস্তকের বক্তব্য অনুসারে দ্বাদশ বংশ নিম্নরূপ: (১) রুবেণ (Reuben), (২) শিমিয়োন (Simeon), (৩) লেবি (Levi), (৪) যিহূদা (Judah), (৫) সবলূন (Zebulun), (৬) ইযাখর (Issachar), (৭) দান (DAN), (৮) গাদ (Gad), (৯) আশের (Asher), (১০) নপ্তালি (Naphtali), (১১) যোষেফ (Joseph), (১২) বিন্যামীন (Benjamin)। আদিপুস্তকের ৪৯ অধ্যায়ের ১-২৮ শ্লোকে এদের নাম ও তাঁদের প্রতি যাকোবের আশীর্বাদ বর্ণনা করে বলা হয়েছে: ‘‘ইহারা সকলে ইস্রায়েলের দ্বাদশ বংশ’’।
কিন্তু যোহনের নিকট প্রকাশিত বাক্য পুস্তকে বংশ তালিকা থেকে দানকে বাদ দিয়ে ‘মনঃশি’ (Manasseh)-এর নাম লেখা হয়েছে। প্রকাশিত বাক্যের ৭ অধ্যায়ের ৪-৮ শ্লোকের বর্ণনা অনুসারে দ্বাদশ বংশ নিম্নরূপ: (১) যিহূদা, (২) রুবেণ, (৩) গাদ, (৪) আশের, (৫) নপ্তালি, (৬) মনঃশি (Manasseh), (৭) শিমিয়োন, (৮) লেবি, (৯) ইযাখর, (১০) সবলূন, (১১) যোষেফ, (১২) বিন্যামীন।’’
উল্লেখ্য যে, মনঃশি (Manasseh) যোষেফ (ইউসুফ)-এর প্রথম পুত্র। যোষেফের দ্বিতীয় পুত্র ইফ্রয়িম (Ephraim) (আদিপুস্তক ৪১/৫১; ৪৬/২০; ৪৮/১; ৪৮/৫...) এ সকল বিষয় বনি-ইসরাইলের প্রত্যেকের জানা। বনি-ইসরাইল জাতির অতি সাধারণ কোনো মানুষও এ ক্ষেত্রে ভুল করে না। যদি প্রকাশিত বাক্যের লেখক যোষেফের পরিবর্তে মনঃশি বা ইফ্রয়িম লেখতেন তবে একটা ব্যাখ্যা দেওয়া যেত যে, তিনি পিতার বংশের জন্য সন্তানের নাম ব্যবহার করেছেন বা বংশের একটা শাখার নাম নিয়ে পুরো বংশ বুঝাচ্ছেন। কিন্তু প্রকাশিত বাক্যের লেখক যোষেফকে বংশ তালিকায় রেখে দানকে বাদ দিয়ে সেখানে যোষেফের পুত্র মনঃশির নাম লেখেছেন। পবিত্র আত্মা তো দূরের কথা বনি-ইসরাইলের কোনো সাধারণ মানুষের জন্যও এরূপ ভুল অকল্পনীয়।