মার্ক বলেন: ‘‘তারপর সেই এগার জন সাহাবী ভোজনে বসলে পর তিনি তাঁদের কাছে প্রকাশিত হলেন .... তাঁদের সঙ্গে কথা বলবার পর প্রভু ঈসাকে ঊর্ধ্বে, বেহেশতে তুলে নেওয়া হল ...।’’ (মার্ক ১৬/১৪-১৯ কি. মো-১৩) এ থেকে আমরা জানছি যে, শিষ্যরা খাওয়ার টেবিলে থাকা অবস্থায় যীশু ঊর্ধ্বগমন করেন। মার্কের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, এটা জেরুজালেম বা জেরুজালেমের নিকটবর্তী কোনো স্থান ছিল।
কিন্তু লূক লেখেছেন যে, শিষ্যদের সাথে সাক্ষাতের পরে তাঁদের নিকট থেকে রুটি ও মাছ চেয়ে নিয়ে তিনি তাদের সামনে ভোজন করেন। ‘‘পরে যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে বৈথনিয়া পর্যন্ত গেলেন। সেখানে তিনি হাত তুলে তাঁদের আশীর্বাদ করলেন। আশীর্বাদ করতে করতেই তিনি তাঁদের ছেড়ে গেলেন এবং তাঁকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল।’’ (লূক ২৪/৫০-৫১: বাইবেল-২০০০)
তাহলে খাওয়ার সময়ে নয়, বরং খাওয়ার পরে জেরুজালেম থেকে বৈথনিয়া পর্যন্ত পথ চলার পরে বৈথনিয়া থেকে তিনি ঊর্ধ্বারোহণ করেন। এর বিপরীতে ‘প্রেরিতদের কার্য-বিবরণ’ পুস্তক থেকে জানা যায় যে, ৪০ দিন প্রেরিতদের সাথে থাকার পরে যিরুশালেমের নিকটবর্তী জৈতুন পর্বত (mount Olivet) থেকে তিনি ঊর্ধ্বারোহণ করেন। ( প্রেরিত ১/৯-১২)
মথি ঊর্ধ্বারোহণের কথা উল্লেখ করেননি। তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, যীশু পূর্বের প্রতিশ্রুতি অনুসারে গালীলের পাহাড়ে প্রেরিতদের সাথে শেষ সাক্ষাৎ করেন। তাহলে ঊর্ধ্বারোহণ যদি ঘটেই থাকে তবে তা গালীলের পাহাড় থেকেই হয়েছিল। গালীলের পাহাড়েই মথির ইঞ্জিল সমাপ্ত হয়েছে। (মথি ২৮/৬-২০)
সম্মানিত পাঠক, যীশুর জীবন নিয়েই ইঞ্জিলগুলো রচিত। অথচ যীশুর জীবনের প্রায় সকল ঘটনাতেই চার ইঞ্জিলের মধ্যে অকল্পনীয় বৈপরীত্য। বিশেষত যীশুর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা মৃত্যু ও পুনরুত্থান বর্ণনায় ইঞ্জিলগুলো ও নতুন নিয়মের অন্যান্য পুস্তকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাংঘর্ষিক বৈপরীত্য বিদ্যমান। এখানে কয়েকটা নমুনা পাঠক দেখলেন। এগুলো থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এ ইঞ্জিলগুলো ঐশ্বরিক প্রেরণায় বা পাক-রূহের মাধ্যমে লেখা নয়। এমনকি এগুলো যীশুর কোনো শিষ্য বা কোনে প্রত্যক্ষদর্শীর লেখা মানবীয় ঐতিহাসিক কর্মও নয়।