পূর্ববর্তী আলোচনা থেকে আরেকটা বৈপরীত্য আমরা দেখছি, তা হল ক্রুশের সময় পুরুষ শিষ্যদের বা সাহাবীদের উপস্থিতি বিষয়ক।
মথি ও মার্কের বর্ণনা থেকে আমরা দেখছি যে, যীশু একদল মহিলা সেবিকা নিয়ে গালীল থেকে জেরুজালেম পর্যন্ত প্রায় শতমাইল পথ ধর্ম প্রচারে অতিক্রম করেন। গালীল থেকে আসা যীশুর এ সকল মহিলা সেবিকারাই শুধু ক্রুশের সময় দূর থেকে দৃশ্য অবলোকন করছিলেন। এ থেকে জানা যায় যে, কোনো পুরুষ শিষ্য সেখানে ছিলেন না।
ইঞ্জিলগুলোর অন্যান্য বর্ণনা থেকেও তা জানা যায়। মথি লেখেছেন (২৬/৫৬): ‘‘শিষ্যেরা সবাই তখন ঈসাকে ফেলে পালিয়ে গেলেন।’’ মার্ক (১৪/৫০-৫১) লেখেছেন: ‘‘ সেই সময় শিষ্যেরা সবাই তাঁকে ফেলে পালিয়ে গেলেন। একজন যুবক কেবল একটা চাদর পরে যীশুর পিছনে পিছনে যাচ্ছিল। লোকেরা যখন তাকে ধরল তখন সে চাদরখানা ছেড়ে দিয়ে উলংগ অবস্থায় পালিয়ে গেল।’’ (মো.-১৩)
এছাড়া ইঞ্জিলগুলো উল্লেখ করেছে যে, যীশুকে গ্রেফতার করার পর তাঁর প্রধান শিষ্য পিতরকে কেউ কেউ যীশুর শিষ্য বলে চিনতে পারলে তিনি শপথ করে এবং গালি দিয়ে যীশুর সাথে তাঁর সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেন। (মথি ২৬/৫৯-৭৫; মার্ক ১৪/৫৪, ৬৬০৭২; লূক ২২/৫৪-৬২; যোহন ১৮/১৫-১৮, ২৫-২৭)
এ সকল তথ্য নিশ্চিত করে যে, যীশুর গ্রেফতারের পর যীশুর পুরুষ শিষ্যরা সকলেই মহা-আতঙ্কিত হয়ে পালিয়ে যান। এমনকি কেউ উলঙ্গ হয়ে পালিয়ে যান এবং কেউ শপথ করে ও গালি দিয়ে নিজের গুরুকে অস্বীকার করেন। ক্রশের ঘটনার সময় কেউই সেখানে ছিলেন না। বিষয়টা আরো নিশ্চিত হয় যখন আমরা দেখি যে, ক্রুশ থেকে মৃতদেহ নামানোর পর তাঁর দ্বাদশ শিষ্যের কেউ তাঁকে কবর দিতে এগিয়ে আসেননি। বরং অন্য মানুষেরা তাঁর কবর দিয়েছিল।
কিন্তু এর বিপরীতে যোহন বলছেন যে, যীশুর মাতার সাথে তাঁর একজন প্রিয় শিষ্য ক্রুশের একেবারে পাশেই ছিলেন, ফলে যীশু তাঁর সাথে কথা বলেন।