উপরের তথ্যাদির ভিত্তিতে যে কোনো বিবেকবান মানুষ নিশ্চিত হবেন যে, যীশু তাঁর শিক্ষা বা ইঞ্জিল তাঁর শিষ্যদের ও তাঁর জাতির কাছে হিব্রু বা আরামাইক ভাষায় প্রচার করেছিলেন। তিনি গ্রিক ভাষা জানতেন বা বলতেন কিনা তা বিবেচ্য নয়, তবে তাঁর জাতি ফিলিস্তিনের ইহুদিরা গ্রিক ভাষা ব্যবহার করতেন না। অনুরূপভাবে মথি, যোহন ও তাঁর অন্যান্য শিষ্যও ফিলিস্তিনের ইহুদি ছিলেন। গ্রিক তাঁদের মাতৃভাষা বা ধর্মীয় ভাষা কোনোটাই ছিল না। গ্রিক ছিল দখলদার শাসকদের ভাষা, যাদেরকে ইহুদিরা অত্যন্ত ঘৃণা করতেন এবং বারবার যাদের আধিপত্য থেকে মুক্ত হতে যুদ্ধ করতেন। কাজেই যুক্তি ও বিবেকের দাবি যে, যীশুর হিব্রু বা আরামাইক ইঞ্জিল তাঁরা মূল ভাষাতেই লেখবেন ও প্রচার করবেন।
কিন্তু প্রকৃত বাস্তবে আমরা দেখি যে, ইঞ্জিলের সকল প্রাচীন ও আধুনিক পাণ্ডুলিপিই গ্রিক ভাষায় রচিত। পরবর্তী আলোচনায় আমরা দেখব যে, প্রাচীন খ্রিষ্টান ধর্মগুরুরা উল্লেখ করেছেন যে, মথির ইঞ্জিলটা হিব্রু ভাষায় রচিত ছিল। অবশিষ্ট তিন ইঞ্জিল এবং অন্যান্য পুস্তক মূলতই গ্রিক ভাষায় রচিত। আধুনিক গবেষকরা মথির ইঞ্জিলও গ্রিক ভাষায় রচিত বলে দাবি করেন। ‘নতুন নিয়ম’ পুরোটাই গ্রিক ভাষায় রচিত বলে খ্রিষ্টান ধর্মগুরু ও বাইবেল গবেষকরা বর্তমানে একমত।
বিষয়টা বড়ই বিষ্ময়কর! একজন ধর্ম প্রচারক ও তাঁর শিষ্যরা তাঁদের জাতির নিকট ধর্মপ্রচার করছেন তাঁদের জাতির ভাষা বাদ দিয়ে বিজাতীয় ভাষায়! কেউ যদি বলেন রবীন্দ্র, নজরুল বা লালন সাহিত্য তৎকালীন রাজভাষা ইংরেজিতে রচিত তবে তাকে আপনি কী বলবেন?