আমরা দেখেছি যে, শিরকের মূল হলো মহান আল্লাহর বিষয়ে কু-ধারণা বা ‘‘অব-ভক্তি’ এবং বান্দার বিষয়ে ‘অতি-ধারণা’ বা ‘অতিভক্তি’। আর এর অন্যতম কারণ মহান আল্লাহকে মানুষের সাথে তুলনা করা। মুশরিকদের যুক্তিই ছিল পৃথিবীর রাজা-বাদশাহগণের নিকট আবেদন করতে যেমন মন্ত্রী, খাদেম, দারোয়ান, সামন্তরাজা বা অনুরূপ ব্যক্তিবর্গের সুপারিশ বা মধ্যস্থতার প্রয়োজন হয়, আল্লাহর ক্ষেত্রেও অনুরূপ মধ্যস্থতার প্রয়োজন হবে না কেন। দুনিয়ার সাধারণ একজন রাজা এত আমত্য-পরিষদ রাখেন আর সকল রাজার মহারাজা মহান আল্লাহ তা রাখবেন না কেন? ইত্যাদি।
কুরআনে এরূপ তুলনা করতে বারংবার নিষেধ করা হয়েছে। মহান আল্লাহকে মানুষের সাথে তুলনা করা যায় না। একজন মানুষ মহারাজা তার সেনাপতি, খাদেম, সামন্ত শাসক বা কর্মকর্তাদের সহযোগিতার মুখাপেক্ষী, তিনি নিজে সবকিছু দেখতে, শুনতে বা জানতে পারেন না। তিনি অনেক সময় নিজের ইচ্ছা না থাকলেও তাদের সুপারিশ গ্রহণ করেন, অথবা মূল বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না, তাই সংশ্লিষ্ট অফিসারের সুপারিশের ভিত্তিতেই তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, সব কিছু নিজে জানা ও বিচার করা তো তার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু মহান আল্লাহকে এরূপ মানুষ মহারাজার সাথে তুলনা করার অর্থ তার রুবূবিয়্যাতের সাথে কুফরী করা ও তাঁর বিষয়ে ‘কু-ধারণা’ পোষণ করা। মহান আল্লাহ বলেন:
فَلا تَضْرِبُوا لِلَّهِ الأَمْثَالَ إِنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ وَأَنْتُمْ لا تَعْلَمُونَ
‘‘সুতরাং আল্লাহর জন্য কোনো তুলনা-উদাহরণ স্থাপন করো না। আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।’’[1]