উপরের আয়াতগুলিতে আমরা দেখেছি যে, আল্লাহ পুনরুত্থানের পরে হিসাব এবং প্রতিফল দানের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। কুরআন কারীমে অসংখ্য স্থানে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এক স্থানে মহান আল্লাহ বলেন:
يَوْمَئِذٍ يُوَفِّيهِمُ اللَّهُ دِينَهُمُ الْحَقَّ وَيَعْلَمُونَ أَنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَقُّ الْمُبِينُ
‘‘সে দিন আল্লাহ তাদেরকে প্রাপ্য প্রতিফল পুরাপুরি দিবেন এবং তারা জানবে, আল্লাহই সত্য স্পষ্ট প্রকাশক।’’[1]
অন্যত্র বলা হয়েছে:
وَكُلَّ إِنْسَانٍ أَلْزَمْنَاهُ طَائِرَهُ فِي عُنُقِهِ وَنُخْرِجُ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كِتَابًا يَلْقَاهُ مَنْشُورًا اقْرَأْ كِتَابَكَ كَفَى بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ حَسِيبًا
‘‘প্রত্যেক মানুষের কর্ম আমি তার গ্রীবালগ্ন করেছি এবং কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য বের করব এক কিতাব, যা সে পাবে উম্মুক্ত। ‘তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব নিকাশের জন্য যথেষ্ট।’’[2]
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন:
يَا أَيُّهَا الإِنْسَانُ إِنَّكَ كَادِحٌ إِلَى رَبِّكَ كَدْحًا فَمُلاقِيهِ فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا وَيَنْقَلِبُ إِلَى أَهْلِهِ مَسْرُورًا وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ وَرَاءَ ظَهْرِهِ فَسَوْفَ يَدْعُو ثُبُورًا وَيَصْلَى سَعِيرًا إِنَّهُ كَانَ فِي أَهْلِهِ مَسْرُورًا إِنَّهُ ظَنَّ أَنْ لَنْ يَحُورَ بَلَى إِنَّ رَبَّهُ كَانَ بِهِ بَصِيرًا
‘‘হে মানুষ তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট পৌছানো পর্যন্ত কঠোর সাধনা করে থাক, পরে তুমি তাঁর সাক্ষাৎ লাভ করবে। যাকে তার আমলনামা তার দক্ষিণ হস্তে দেওয়া হবে তার হিসাব-নিকাশ সহজেই নেওয়া হবে। এবং সে তাহার স্বজনদিগের নিকট প্রফুল্লচিত্তে ফিরে যাবে। এবং যাকে তার আমলনামা তার পৃষ্ঠের পশ্চাৎদিক হতে দেওয়া হবে সে অবশ্য তার ধ্বংস আহবান করিবে; এবং জ্বলন্ত অগ্নিতে প্রবেশ করবে; সে তার স্বজনদিগের মধ্যে তো আনন্দে ছিল। সে ভাবত যে, সে কখনই ফিরে যাবে না; নিশ্চয় ফিরে যাবে; তার প্রতিপালক তার উপর সবিশেষ দৃষ্টি রাখেন।’’[3]
অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন:
إِذَا زُلْزِلَتِ الأرْضُ زِلْزَالَهَا وَأَخْرَجَتِ الأرْضُ أَثْقَالَهَا وَقَالَ الإِنْسَانُ مَا لَهَا يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا بِأَنَّ رَبَّكَ أَوْحَى لَهَا يَوْمَئِذٍ يَصْدُرُ النَّاسُ أَشْتَاتًا لِيُرَوْا أَعْمَالَهُمْ فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ
‘‘পৃথিবী যখন আপন কম্পনে প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে, এবং পৃথিবী যখন তার ভার বের করে দিবে, মানুষ বলবে, ‘এর কি হল?’ সে দিন পৃথিবী তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে, কারণ তোমার প্রতিপালক তাকে আদেশ করিবেন, সে দিন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন দলে বের হবে, কারণ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম দেখান হবে; কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে তাও দেখবে। কেউ অণু পরিমাণ অসৎ কর্ম করলে তাও দেখবে।[4]
[2] সূরা (১৭) ইসরা/বানী ইসরাঈল: ১৩-১৪ আয়াত।
[3] সূরা (৮৪) ইনশিকাক: ৬-১৫ আয়াত।
[4] সূরা (৯৯) যিলযাল: ১-৮ আয়াত।