আমরা দেখেছি যে, অদৃশ্য জগতের বিষয়ে আল্লাহ আমাদেরকে কেবলমাত্র সে সকল বিষয়ই জানিয়েছেন এবং বিশ্বাস করতে নির্দেশ দিয়েছেন যার বিশ্বাস আমাদের জীবনে কল্যাণ ও পূর্ণতা বয়ে আনে। আমরা একটু চিন্তা করলেই মালাকগণে বিশ্বাসের কল্যাণ অনুভব করতে পারব।
এই বিশ্বাসের সবচেয়ে বড় কল্যাণ, আমরা আল্লাহর এই সম্মানিত বান্দাদের সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভ করি এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন সমাজে প্রচলিত নানা ধরণের কূসংস্কার, অলীক বিশ্বাস, অতিভক্তি, শিরক ইত্যাদি থেকে আমরা রক্ষা পাই, যে সকল কুসংস্কার মানুষের ইহলৌকিক জীবনকে অস্থিরচিত্ত, ভীত সন্ত্রস্থ করে তুলে, কল্যাণের কামনায় তারা এখানে সেখানে ছুটে বেড়ায়, তাদের ব্যক্তিত্ব হয়ে যায় বহুবিভক্ত। উপরন্তু এসকল কুসংস্কার তাদের জন্য বয়ে আনে পরলৌকিক ধ্বংস ও সর্বনাশ, কারণ আমরা জানি যে, শিরকের একমাত্র পরিণতি জাহান্নামের অনন্ত শাস্তি।
এছাড়া ফিরিশতাদের উপর বিশ্বাস আনার ফলে আমরা আল্লাহর সৃষ্টির মহত্ব জানতে পারি। এ বিশ্বাস আমাদের মনে শান্তি বয়ে আনে। একজন বিশ্বাসী কখনই নিজেকে অসহায় মনে করেনা। একাকিত্বের অনুভূতি কখনই তাকে গ্রাস করবে না। তিনি সর্বদা অনূভব করেন যে, আল্লাহর অগণিত ফিরিশতা তাকে ঘিরে রেখেছেন, তাঁদের দু‘আ তাকে কল্যাণের পথে নিয়ে যাবে। সকল কষ্ট, সকল বেদনা উত্তরণে তিনি সাহস ও প্রেরণা পাবেন। ধৈর্য ও দৃঢ়তা নিয়ে তিনি সকল হতাশাকে জয় করতে পারবেন।
মালাকগণে বিশ্বাস মানুষকে কল্যাণ ও সততার পথে চলতে উদ্বুদ্ধ করে। তিনি জানেন যে, কল্যাণ-কর্মে রত মানুষের জন্য প্রার্থনা করেন মালাকগণ। একজন মুসলিম অন্যান্য মুসলিমের কল্যাণের জন্য তাদের অনুপস্থিতে অন্তরের আকুতি দিয়ে দু‘আ করেন, কারণ তিনি জানেন যে, এ দু‘আর ফলে তিনিও লাভবান হবেন। আল্লাহর মালাকগণ তার জন্য দু‘আ করেন। এমনিভাবে সকল ন্যায় ও কল্যাণের কাজে তিনি প্রেরণা ও উৎসাহবোধ করেন।
এ ছাড়া মালাকগণের ঈমান আমাদেরকে আল্লাহর সৃষ্টির মহত্ব, বিশালত্ব ও বৈচিত্র সম্পর্কে জ্ঞানদান করে। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অনুপ্রেরণা দেয়। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সত্যিকারের ঈমান দান করুন।