ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
আল ইরশাদ-সহীহ আকীদার দিশারী الأصل الخامس: الإيمان باليوم الآخر - পঞ্চম মূলনীতি: শেষ দিবসের প্রতি ঈমান শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান
২- خروج الدجال - ২. দাজ্জালের আগমন

 সে হলো মাসীহ দাজ্জাল, ফিতনাবাজ, মিথ্যুক এবং গোমরাহ। আমরা আল্লাহ তা‘আলার নিকট তার ফিতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। প্রত্যেক নবীই নিজ নিজ সম্প্রদায়কে দাজ্জালের ভয় দেখিয়েছেন, তার ফিতনা থেকে সতর্ক করেছেন এবং তার স্বভাব-চরিত্র বর্ণনা করেছেন। আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার থেকে সবচেয়ে বেশী সতর্ক করেছেন। তিনি তার উম্মতের জন্য দাজ্জালের বৈশিষ্টগুলো এত খোলাসা করে বর্ণনা করেছেন যে, বিবেকবান লোকদের কাছে তা মোটেই অস্পষ্ট থাকার কথা নয়। তিরমিযী শরীফের হাদীছে আছে, সে খোরাসান থেকে বের হবে। সহীহ মুসলিমে আনাস রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে মারফু হিসাবে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘‘ইস্পাহানের সত্তর হাজার ইয়াহূদী দাজ্জালের অনুসরণ করবে। তাদের সবার পরনে থাকবে তায়ালেসা বা সেলাই বিহীন চাদর’’।[1]

দাজ্জালকে المسيح বলার কারণ হলো, তার এক চোখ অন্ধ থাকবে। কেউ কেউ বলেছেন, সে যেহেতু মক্কা ও মদীনা ব্যতীত সমগ্র ভূপৃষ্ঠে পরিভ্রমণ করবে, তাই তার নাম দেয়া হয়েছে মাসীহ বা ভূপৃষ্ঠে পরিভ্রমণকারী। আর الدجال শব্দটি الدجل থেকে নেয়া হয়েছে। এর অর্থ হলো, الخلط বিভ্রান্তিতে নিপতিত করা, ধোঁকাবাজি করা। কেউ যখন বিভ্রান্তিতে ফেলে এবং ধোঁকাবাজি করে তখন বলা হয়, خَلَطَ وَمَوَّهَ বিভ্রান্তিতে ফেলেছে ও ধোঁকা দিয়েছে। دجال শব্দটি فَّعال এর ওজনে আধিক্য বাচক বিশেষ্য। তার থেকে যেহেতু প্রচুর পরিমাণ মিথ্যাচার ও ধোঁকাবাজি প্রকাশিত হবে, তাই তাকে দাজ্জাল বলা হয়। মাহদীর জীবদ্দশাতেই সে বের হবে।

হাফেয ইবনে কাছীর রাহিমাহুল্লাহ বলেন, অতঃপর আখেরী যামানায় দাজ্জালকে বের হওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। প্রথমত সে প্রভাবশালী বাদশাহর বেশে প্রকাশিত হবে। অতঃপর সে নবুওয়াত দাবি করবে। অতঃপর রুবুবীয়াত দাবি করবে। বনী আদমের অজ্ঞ, মূর্খ এবং ইতর শ্রেণী ও সাধারণ লোকেরা তার অনুসরণ করবে। আল্লাহ তা‘আলা যাদেরকে হেদায়াতের পথে রাখবেন, তারা তার প্রতিবাদ করবেন। সে এক এক করে দেশ, ঘাটি, অঞ্চল ও গ্রাম দখল করতে থাকবে। সে তার অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনীসহ মক্কা ও মদীনা ব্যতীত সবদেশেই প্রবেশ করবে।

সাহাবীগণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেছেন দাজ্জাল পৃথিবীতে কতদিন অবস্থান করবে? উত্তরে তিনি বলেছেন, সে চল্লিশ দিন অবস্থান করবে। প্রথম দিনটি হবে এক বছরের মতো লম্বা। দ্বিতীয় দিনটি হবে এক মাসের মতো। তৃতীয় দিনটি হবে এক সপ্তাহের মতো। আর বাকী দিনগুলো দুনিয়ার স্বাভাবিক দিনের মতই হবে। সে গড়ে একবছর আড়াই মাস অবস্থান করবে। আমরা বললাম, যে দিনটি এক বছরের মত দীর্ঘ হবে সে দিন কি এক দিনের সালাত ই যথেষ্ট হবে? উত্তরে তিনি বললেন, না; বরং তোমরা অনুমান করে সময় নির্ধারণ করে সালাত  পড়বে।[2]

আল্লাহ তা‘আলা দাজ্জালের হাতে অনেক অস্বাভাবিক জিনিস সৃষ্টি করবেন। এর মাধ্যমে তিনি যাকে ইচ্ছা সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত করবেন। মুমিনগণ এগুলো দেখেও ঈমানের উপর অটল থাকবেন। তাদের ঈমানের সাথে আরো ঈমান বৃদ্ধি পাবে এবং হেদায়াতের সাথে আরো হিদায়াত বৃদ্ধি পাবে। হেদায়াতের প্রদীপ ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহিস সালাম এ গোমরাহ মিথ্যুক ধোঁকাবাজের জীবদ্দশাতেই বের হবেন। মুমিনগণ ঈসা ইবনে মারইয়ামের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হবেন। আল্লাহর মুত্তাকী বান্দারা তার সাথে যোগদান করবেন। তিনি তাদেরকে নিয়ে দাজ্জালের উদ্দেশ্যে বের হবেন। দাজ্জাল তখন বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে যেতে থাকবে। তাকে দেখে দাজ্জাল পালানোর চেষ্টা করবে। অতঃপর ঈসা আলাইহিস সালাম লুদ্দ শহরের ফটকের নিকট তার সাক্ষাত পাবেন। দাজ্জাল যখন লুদ্দ শহরে প্রবেশ করতে চাইবে তখন ঈসা আলাইহিস সালাম বর্শার আঘাতে তাকে হত্যা করবেন। তিনি তখন দাজ্জালকে লক্ষ্য করে বলবেন, আমি তোমাকে একটি আঘাত করবো, যা থেকে তুমি কখনো পালাতে পারবেনা। ঈসা আলাইহিস সালামের সামনে পড়ার সাথে সাথে সে পানিতে লবণ গলার মতই গলতে থাকবে। তারপরও তিনি অগ্রসর হয়ে লুদ্দ শহরের গেইটের নিকট যুদ্ধের বর্শা দিয়ে তাকে একটি আঘাতের মাধ্যমে হত্যা করবেন। সেখানেই সে মারা যাবে। এভাবেই দাজ্জালের পরিসমাপ্তির কথা একাধিক সহীহ হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। তার উপর আল্লাহর লা’নত বর্ষিত হোক। সহীহ হাদীছের বর্ণনা মোতাবেক ইমাম ইবনে কাছীরের বর্ণনায় সংক্ষিপ্তভাবে এখানেই দাজ্জালের কাহিনী শেষ হলো। এ সংক্ষিপ্ত বর্ণনাটি খুবই উপকারী।

দাজ্জাল ও তার ফিতনা সম্পর্কিত হাদীছগুলো প্রমাণ করে যে, যারা দাজ্জালের আহবানে সাড়া দিবে, সে তাদের জন্য আসমানকে বৃষ্টি বর্ষণ করতে বলার সাথে আসমান বৃষ্টি বর্ষণ করবে, যমীনকে ফল ও ফসল উৎপন্ন করার আদেশ দেয়ার সাথে সাথে যমীন তা উৎপন্ন করবে। তা থেকে তারা ও তাদের পশু-পাখিগুলো আহার করবে। এতে করে তাদের পশুপাল মোটা-তাজা ও প্রচুর দুধ ওয়ালা হয়ে যাবে।

আর যারা তার আহবানে সাড়া দিবে না; বরং তার প্রতিবাদ করবে, তারা দুর্ভিক্ষ, ফসলহানি, অনাবৃষ্টি, ধন-সম্পদের কমতি, চতুষ্পদ জন্তুর প্রাণহানি, জান-মাল ও ফলফলাদির ঘাটতিসহ আরো অনেক বিপদাপদে নিপতিত হবে। আর দাজ্জালের পিছনে ভূগর্ভস্থ গুপ্তধন মৌমাছির ন্যায় ছুটে চলবে। সে একজন মুমিন যুবককে হত্যা করে পুনরায় জীবিত করবে।[3] এসবগুলোই ফিতনা। এর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আখেরী যামানায় তার মুমিন বান্দাদেরকে পরীক্ষা করবেন। এর মাধ্যমে অনেকেই বিভ্রান্ত ও বিপথগামী হবে।

দাজ্জালের মাধ্যমে এত কিছু প্রকাশিত হওয়ার পরও সে হবে আল্লাহর নিকট খুব তুচ্ছ, সুস্পষ্ট ত্রুটিযুক্ত। তার থেকে পাপাচার ও যুলুম প্রকাশিত হবে। যদিও তার সাথে অনেক অস্বাভাবিক ও অসাধারণ জিনিস থাকবে। তার দুই চোখের মাঝখানে কাফের লেখা থাকবে। তার হাতে যা কিছু ঘটবে তা কেবল আল্লাহর পক্ষ হতে তার বান্দাদেরকে পরীক্ষা করার জন্যই। এটি একটি বিরাট পরীক্ষা। ঈমানদার ও সুদৃঢ় বিশ্বাসের অধিকারীরাই এ থেকে রেহাই পাবে। তার ভয়ানক ক্ষতি ও ফিতনার কারণেই সমস্ত নবী নিজ নিজ উম্মতকে সতর্ক করেছেন। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উম্মতকে সবচেয়ে বেশি সতর্ক করেছেন।

আবু উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন, আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, নূহ আলাইহিস সালামের পরে যত নবী আগমন করেছেন, তাদের সকলেই নিজ নিজ সম্প্রদায়কে দাজ্জালের ফিতনা সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। আর আমিও তার থেকে তোমাদেরকে সতর্ক করছি। ইমাম আবু দাউদ, আহমাদ ও তিরমিযী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।

প্রত্যেক সালাতের শেষাংশে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাজ্জালের ফিতনা থেকে আল্লাহ তা‘আলার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করার আদেশ দিয়েছেন। আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

«إِذَا فَرَغَ أَحَدُكُمْ مِنْ التَّشَهُّدِ الْآخِرِ فَلْيَتَعَوَّذْ بِاللَّهِ مِنْ أَرْبَعٍ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ شَرِّ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ»

‘‘তোমাদের কেউ যখন সালাতের শেষ তাশাহুদ পাঠ শেষ করবে, তখন সে যেন আল্লাহর কাছে চারটি বিষয় থেকে আশ্রয় চায়। হে আল্লাহ! জাহান্নামের আযাব থেকে, কবরের আযাব থেকে, জীবন-মরণের ফিতনা থেকে এবং মিথ্যুক দাজ্জালের ফিতনা থেকে’’।[4] ইমাম আহমাদ ও মুসলিম হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।

দাজ্জাল বের হওয়া, তার ফিতনা এবং তার ফিতনা থেকে আশ্রয় প্রার্থনার ব্যাপারে বিভিন্ন সূত্রে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। আখেরী যামানায় তার বের হওয়ার উপর আলেমদের ইজমা সংঘটিত হয়েছে। আকীদা সংক্রান্ত আলোচনার সাথেই তারা দাজ্জালের আলোচনা করেছেন। যে ব্যক্তি দাজ্জালের আগমন অস্বীকার করবে, সে মুতাওয়াতের সূত্রে বর্ণিত সহীহ হাদীছসমূহের বিরোধীতাকারী হিসাবে গণ্য হবে। সেই সঙ্গে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বিরোধীতাকারী বলে গণ্য হবে। খারেজী, জাহমীয়া, কতিপয় মু‘তাযিলা এবং সমসাময়িক কিছু লেখক ও স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবি ছাড়া অন্য কেউ দাজ্জালের আগমন অস্বীকার করেনি। এ ব্যাপারে তাদের নিকট বিবেক-বুদ্ধি ও প্রবৃত্তির অনুসরণ ছাড়া আর কোনো দলীল নেই। এসব লোকের কথার কোনো মূল্য নেই।

আল্লাহ তা‘আলা ও তার রসূল থেকে সহীহ সূত্রে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে, মুমিনদের উপর তা বিশ্বাস করা এবং আকীদা হিসাবে গ্রহণ করা আবশ্যক। তারা যেন ঐসব লোকের অন্তর্ভুক্ত না হন, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿بَلْ كَذَّبُوا بِمَا لَمْ يُحِيطُوا بِعِلْمِهِ وَلَمَّا يَأْتِهِمْ تَأْوِيلُهُ﴾

‘‘বরং তারা এমন বিষয়কে অস্বীকার করেছে, যা তারা জ্ঞান দ্বারা আয়ত্ত করতে পারেনি। তাদের কাছে এখনো সেটার পরিণাম ফল আগমন করেনি’’। (সূরা ইউনুস: ৩৯)

কেননা আল্লাহর প্রতি এবং তার রসূলের প্রতি ঈমান আনয়নের দাবি হলো আল্লাহ ও তার রসূলের নিকট থেকে যা কিছু এসেছে, তা সম্পূর্ণরূপে মেনে নেয়া এবং তার প্রতি পরিপূর্ণরূপে ঈমান আনয়ন করা। যে ব্যক্তি তা করবেনা, সে আল্লাহর হিদায়াত ছাড়াই স্বীয় প্রবৃত্তির অনুসরণকারী হিসাবে গণ্য হবে। আমরা আল্লাহ তা‘আলার কাছে সন্দেহ, শিরক, ফুফুরী, নিফাকী এবং মন্দ আখলাক-চরিত্র নিরাপত্তা কামনা করছি এবং আমরা আরো প্রার্থনা করছি, তিনি যেন সঠিক পথ দেখানোর পর আমাদের অন্তরসমূহকে বক্র না করে দেন। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ রাববুল আলামীনের জন্য।


[1]. মুসলিম, অধ্যায়: কিতাবুল ফিতান।

[2]. মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান।  

[3]. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, দাজ্জাল বের হয়ে মদীনার দিকে অগ্রসর হবে। যেহেতু মদীনায় দাজ্জালের প্রবেশ নিষেধ তাই সে মদীনার নিকটবর্তী একটি স্থানে অবস্থান করবে। তার কাছে একজন মুমিন লোক গমন করবেন। তিনি হবেন ঐ যামানার সর্বোত্তম মু’মিন। দাজ্জালকে দেখে তিনি বলবেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি সে দাজ্জাল যার সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে সাবধান করেছেন। তখন দাজ্জাল উপস্থিত মানুষকে লক্ষ্য করে বলবে, আমি যদি একে হত্যা করে জীবিত করতে পারি তাহলে কি তোমরা আমার ব্যাপারে কোন সন্দেহ পোষণ করবে? লোকেরা বলবে, না। অতঃপর সে উক্ত মুমিনকে হত্যা করে পুনরায় জীবিত করবে। এ পর্যায়ে যুবকটি বলবেঃ আল্লাহর শপথ! তুমি যে মিথ্যুক দাজ্জাল- এ সম্পর্কে আমার বিশ্বাস আগের তুলনায় আরো মজবুত হলো। দাজ্জাল তাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করার চেষ্টা করবে। কিন্তু তাকে হত্যা করতে সক্ষম হবেনা।

মুসলিম শরীফের বর্ণনায় এসেছে উক্ত যুবক দাজ্জালকে দেখে বলবে, হে লোক সকল! এটি সে দাজ্জাল যা থেকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে সাবধান করেছেন। অতঃপর দাজ্জাল তার অনুসারীদেরকে বলবে, একে ধর এবং প্রহার কর। তাকে মেরে-পিটিয়ে যখম করা হবে। অতঃপর দাজ্জাল তাকে জিজ্ঞাসা করবে এখনও কি আমার প্রতি ঈমান আনবেনা? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, উক্ত যুবক বলবেন, তুমি মিথ্যাবাদী দাজ্জাল। তারপর দাজ্জালের আদেশে তার মাথায় করাত লাগিয়ে দ্বিখন্ডিত করে ফেলবে। দাজ্জাল দু’খন্ডের মাঝ দিয়ে হাঁটাহাঁটি করবে। অতঃপর বলবে: উঠে দাড়াও। তিনি উঠে দাড়াবেন। দাজ্জাল বলবে এখনও ঈমান আনবে না? তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যুক দাজ্জাল হওয়ার ব্যাপারে এখন আমার বিশ্বাস আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। অতঃপর তিনি বলবেনঃ হে লোক সকল! আমার পরে আর কারো সাথে এরূপ করতে পারবে না। অতঃপর দাজ্জাল তাকে পাকড়াও করে আবার যবেহ করার চেষ্টা করবে। কিন্তু তার গলায় যবেহ করার স্থানটি তামায় পরিণত হয়ে যাবে। কাজেই সে যবেহ করতে ব্যর্থ হবে। অতঃপর তার হাতে-পায়ে ধরে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। লোকেরা মনে করবে তাকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছে। অথচ সে জান্নাতে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘এই ব্যক্তি হবে পৃথিবীতে সেদিন সবচেয়ে মহা সত্যের সাক্ষ্য দানকারী’’।

[4]. সহীহ মুসলিম ৫৮৮, অধ্যায়: সালাতে যা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা চাই, আবূ দাউদ ৯৮৩, সহীহ।।