ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
মানহাজ (আল-আজবিবাতুল মুফীদাহ) নিত্য নতুন মানহাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উপকারী জবাব শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান
প্রশ্ন-২৩ : ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ.) সম্পর্কে বলা হয় যে ‘‘তিনি জাহমিয়্যাহদের পেছনে সালাত আদায় করেছেন’’ একথা কি সঠিক?

উত্তর : আমি এ সম্পর্কে জানি না। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ.) জাহমিয়্যাহদের ব্যাপারে খুবই কঠোর ছিলেন। আমার জানা মতে তিনি কখনো জাহমিয়্যাহদের পেছনে সালাত আদায় করেননি।[1]

তবে হ্যাঁ, শাসকের পেছনে সালাতের ক্ষেত্রে শাসক যদি এমন ইসলাম বিরোধী কাজ না করে যা কুফুরির পর্যায়ে পড়ে তাহলে সেই শাসকের ইমামতিতে সালাত আদায় করা জায়েয। সে আল্লাহভীরু হোক চাই ফাজির বা পাপাচারী হোক। আল কুফর আল বাওয়াহ বা প্রকাশ্য কুফুরী না করা পর্যন্ত শাসক ফাসিক হলেও তার পেছনে সালাত করা যাবে।

ছাহাবায়ে কিরাম হাজ্জায ইবনে ইউসুফ ও অন্যান্য শাসকদের পেছনে সালাত আদায় করেছেন। তারা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নীতি ‘শ্রবণ করা, আনুগত্য করা এবং আনুগত্য থেকে হাত গুটিয়ে না নেয়া’ এর উপর আমল করে ফিতনাহ-ফাসাদ বিশৃঙখলা রোধ করার জন্যই তা করেছেন।[2]


[1]. তিনি জাহমিয়্যাহদের পেছনে সালাত আদায় করাকে জায়েয মনে করতেন না। তার পুত্র আব্দুল্লাহ ইবনে আহমাদ ইবনে হাম্বাল থেকে একটি ঘটনা বর্ণিত রয়েছে যা প্রমাণ করে যে, তিনি জাহমিয়্যাহদের পেছনে সালাত আদায় করাকে জায়েয মনে করতেন না। ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে আহমাদ ইবনে হাম্বাল (রহ.) আস-সুন্নাহ নামক গ্রন্থে বলেন: আমি আমার পিতাকে বিদাতীদের পেছনে সালাত আদায় করার বিধান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি প্রতুত্তরে  বললেন ‘‘জাহমিয়্যাহ, মু‘তাযিলা প্রমুখ বিদাতীদের পেছনে সালাত আদায় করা জায়েয নয়’’। তাকে আরো জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল জাহমিয়্যাহদের পেছনে সলাহ আদায় করার বিধান সম্পর্কে। তিনি বলেন: তাদের পেছনে সালাত আদায় করা যাবে না। তাদের কোন মর্যাদা নেই। (ইবনু হানী, মাসাইলু আহমাদ ০১/৬৩ মাসআলা নং ৩১২)

মুহাম্মাদ ইবনে ইউসুফ আত-ত্বববা’ বলেন, আমি জনৈক ব্যক্তিকে আহমাদ ইবনে হাম্বাল সমীপে আরয করতে শুনলাম, সে বলল, ‘‘হে আবু আব্দুল্লাহ, যে ব্যক্তি মাদক সেবন করে আমি তার পেছনে সালাত আদায় করব কী? তিনি বললেন, না। ঐ ব্যক্তি আবার জিজ্ঞাসা করলো: যারা কবুরআনকে মাখলুক বলে তাদের পেছনে সলাহ আদায় করব কী?

তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ! আমি তোমাকে মুসলিম থেকেই মানা‘ করলাম আর তুমি কাফিরের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করছ? (আশ-শরী‘আহ ৮৯)

[2]. লেখক হাফিযাহুল্লাহ এখানে ‘আওফ ইবনে মালিক আল আশ‘আরী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে সহীহ মুসলিমে ১৮৫৫ নং তে  বর্ণিত হাদীছের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যদি কোন ব্যক্তিকে কোন বিষয়ে কারো নেতা নিযুক্ত করা হয় তাহলে নেতার মধ্যে কোন পাপাচার পরিলক্ষিত হলে সে যেন তা অপছন্দ করে এবং নেতার আনুগত্য থেকে হাত গুটিয়ে না নেয়।