ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
মানহাজ (আল-আজবিবাতুল মুফীদাহ) নিত্য নতুন মানহাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উপকারী জবাব শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান
প্রশ্ন-১০ : যাদের থেকে (জনগণকে) সতর্ক করব তাদের ভালো দিকগুলোও কি উল্লেখ করা জরূরী?

উত্তর : আপনি যদি তাদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন তাহলে জনগণ বুঝবে যে, আপনি তাদের অনুসরণ করার প্রতি আহবান করছেন। বরং আপনি তাদের অবদানের কথা উল্লেখ করবেন না।[1] আপনি শুধু দোষ-ত্রুটিই উল্লেখ করবেন।[2]

আপনি তাদের কৃতকর্মের অপরাধ থেকে মুক্ত করার বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নন। বরং আপনি তাদের দোষ-ত্রুটি উল্লেখ করার বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত- যাতে তারা সে সকল দোষ-ত্রুটি থেকে তাওবা করে, আর আপনি অন্যদেরকে সতর্ক করেন। কখনো কখনো তাদের সে ভুল কুফর বা শিরক হওয়ার কারণে তাদের সকল ভাল কাজগুলো ধ্বংস ও বরবাদ হয়ে যায়। কখনো কখনো ভালো কাজের উপর ভুল-ত্রুটিই প্রাধান্য পায়। আবার কখনো কখনো এমন হয় যে আপনার চোখে ভালো কাজ মনে হলেও আল্লাহর নিকট তা ভলো কাজ নয়।


[1]. যদিও আপনি তাদের দোষ বর্ণনা করেন না কেন বিদাতীর অবদান উল্লেখ করলে মানুষ ধোঁকায় পড়ে যাবে। আপনি তাদের দোষ বর্ণনার সাথে গুণের উল্লেখ করলে মানুষ দোষের প্রতি লক্ষ্য না করে গুণের প্রতিই লক্ষ্য করবে। আর বিদাতীদের সমালোচনার ক্ষেত্রে তাদের গুণকীর্তন করা সালাফে সালেহীনের মানহাজ-কর্মপদ্ধতি নয়।

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ.) হুসাইন আল কারাবিসীর অবস্থা বর্ণনার সময় তার গুণ উল্লেখ করেননি। বরং বলেছেন ‘‘বিদাতী তার এবং সঙ্গীদের থেকে সতর্ক করেছেন। এমনিভাবে মুহাসিবী এবং তার সঙ্গী সাথীদের থেকে সতর্ক করেছেন।

আবু যুরআহ (রহ.) কে আল হারিছ আল মুহাসিবী এবং তার বই পুস্তক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি জবাবে লিখেন এ সকল বই বিদআত ও ভ্রষ্টতাপূর্ণ এগুলো থেকে নিরাপদ থাকো/সতর্ক থেকে সুন্নাহ আঁকড়ে  ধরো।

সম্মানিত পাঠক একথা আপনার অজ্ঞাত নয় যে, কারাবিসী ও মুহাসিবী অনেক বড় পন্ডিত ছিলেন। তারা বিদাতীদের অনেক মতামতও খণ্ডন করেছেন। কিমত্মু প্রথমোক্ত জন (কারাবিসী) শুধু শব্দের নাম কুরআন বলে মানহাজচ্যুত হয়েছেন। আর অন্য জন (মুহাসিবী) কিছু যুক্তির ক্ষেত্রে পদস্খলিত হয়েছেন। তিনি যুক্তিবাদীদের যুক্তিকে সুন্নাহ ছাড়া শুধু যুক্তি দ্বারাই খণ্ডন করেছেন। আত তাহযিব ০২/১১৭, তারিখু বাগদাদ ০৮/২১৫-২১৬ ইমাম যাহাবী, আস সিয়ার ১৩/১১০, ১২/৭৯।

[2]. বিদাতীদের ভুলত্রুটি সমালোচনার সময় তাদের অবদানের কথা উল্লেখ না করার ক্ষেত্রে শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমীয়া (রহ.) এর বইগুলো/ কিতাবাদী স্পষ্ট প্রমাণ। তার কিতাবগুলো বিদাতীদের সমালোচনা ও দাবি খণ্ডনে ভরপুর। তিনি যুক্তিবাদী, আহলে কালাম, জাহমিয়াহ, মু’তাযিলা এবং আশ‘আরীদের সমালোচনা পর্যালোচনা ও মতামত খণ্ডন করেছেন। কিন্তু আমরা কোথাও পাইনি যে তিনি তাদের কোন অবদানের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি নির্দিষ্টভাবে কিছু ব্যক্তির মতামত খণ্ডন করেছেন। কিন্তু তাদের প্রশংসা করেননি। নিঃসন্দেহে তাদের ও অনেক অবদান রয়েছে কিন্তু সমালোচনার ক্ষেত্রে অবদানের কথা উল্লেখ করা নিষ্প্রয়োজন। আপনি ভাবুন।

রাফি ইবনে আশরাস (রহ.) বলেন, পাপাচারী বিদাতীদের একটি শাস্তি হলো তাদের অবদানের কথা উল্লেখ করা হবে না। শারহু ইলালিত তিরমিযী ০১/৩৫৩