ইসলামের সকল বিধি-বিধানের মৌলিক নীতিমালা ও পদ্ধতিসমূহ কুরআন-সুন্নাহ’র দলীল দ্বারা সুনির্ধারিত। এতে নতুন বিধান বা পদ্ধতি আবিষ্কারের কোন সুযোগ বা অধিকার কারো নেই। ইবাদাতের ক্ষেত্রে ফরয-ওয়াজিব সম্পর্কে ভিন্ন মতের কোন অবকাশ থাকে না। তবে সুন্নাত ও মুস্তাহাবের ক্ষেত্রে রাসূল (স) ও সাহাবায়ে কেরামের যুগ থেকেই আমলের কিছু বৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হয়। ফলশ্রুতিতে হাদীসের পর্যালোচনার ভিত্তিতে মাযহাবের ইমাম ও স্কলারদের মতামত ও আমলে ছোট-খাটো বৈপরিত্য থাকা খুবই স্বাভাবিক। এ ধরনের মতানৈক্য প্রসিদ্ধ চার মাযহাবের মধ্যে রয়েছে, যা ঈমান-আমলের পূর্ণতার জন্য প্রতিবন্ধক নয় ।।
অনেক সময় দেখা যায় যে, জ্ঞানের ঘাটতি বা সংকীর্ণ চিন্তা-চেতনার কারণে এসব বিষয় নিয়ে অনেকে বাড়াবাড়ি করেন, যা উম্মাহর জন্য কল্যাণকর নয়। নিজের থেকে আলাদা আমল হওয়ার কারণে সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত আমলকারীকেও কেউ কেউ নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন বা কটাক্ষ করেন, যা কারো জন্যই সমীচীন নয়। সুন্নাহ’র প্রতি মর্যাদা ও মহব্বত সমুন্নত রাখার স্বার্থেই এ ব্যাপারে আমাদেরকে সাবধান ও সংযত হওয়া দরকার।
কখনো কখনো দলীল-প্রমাণ বিশ্লেষণের তুলনায় ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগত অনুকরণ ও পক্ষ অবলম্বনের কারণে কারো তৎপরতা সুন্নাহ-বিরোধীও হয়ে যেতে পারে, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের সকলের উচিত মানুষকে সরাসরি কুরআন-সুন্নাহর প্রতি আহ্বান জানানো। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন যুগের ইমাম, মুজতাহিদ ও স্কলারগণ পরবর্তীদের জন্য নেয়ামত-স্বরূপ। যাদের গবেষণালব্ধ জ্ঞান, বিশ্লেষণ ও মতামত থেকে মুসলিম মিল্লাত চিরকাল উপকৃত হবেন ।
মুসলিম উম্মাহ’র অবিচ্ছেদ অংশ হিসেবে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আতের অন্তর্ভুক্ত সকলের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, পাস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি বজায় রাখা কর্তব্য। কারো আমলের বিপরীতে সহীহ কথা জানা থাকলে ঝগড়া-বিবাদ বা তিরষ্কার না করে দলীলপ্রমাণের ভিত্তিতে আরো সহিষ্ণু ও ধৈর্যশীল হয়ে দরদী মন নিয়ে সংশোধনের চেষ্টা অব্যাহত রাখার মাধ্যমেই বরকত ও কল্যাণ হাসিল করা যাবে । মহান আল্লাহ আমাদেরকে সহীহ কথা জানা, বুঝা ও মানা’র তাওফীক দান করুন। আমীন!