ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
তাওহীদ পন্থীদের নয়নমণি ৩৭তম অধ্যায় - যে ব্যাক্তি আল্লাহর হালালকৃত জিনিষ হারাম এবং হারামকৃত জিনিষকে হালাল করার ক্ষেত্রে আলেম ও নেতাদের অনুসরণ করল সে মূলত তাদেরকে রব হিসেবে গ্রহণ করল (باب من أطاع العلماء والأمراء في تحريم ما أحل الله أو تحليل ما حرم الله فقد اتخذهم أربابا من دون الله) শাইখ আব্দুর রাহমান বিন হাসান বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহাব (রহঃ)
যে ব্যাক্তি আল্লাহর হালালকৃত জিনিষ হারাম এবং হারামকৃত জিনিষকে হালাল করার ক্ষেত্রে আলেম ও নেতাদের অনুসরণ করল সে মূলত তাদেরকে রব হিসেবে গ্রহণ করল

ব্যাখ্যাঃ লেখক শিরোনামে সূরা আহযাবের ৬৭ নং আয়াতের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ

وَقَالُوا رَبَّنَا إِنَّا أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَاءَنَا فَأَضَلُّونَا السَّبِيلَا

‘‘তারা বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের কথা মেনেছিলাম। অতঃপর তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছে’’। (সূরাঃ আহযাবঃ ৬৭)

আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ

«يُوشِكُ أَنْ تَنْزِلَ عَلَيْكُمْ حِجَارَةٌ مِنْ السَّمَاءِ أَقُولُ لَكُمْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَقُولُونَ قَالَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ»

‘‘তোমাদের উপর আকাশ থেকে পাথর বর্ষিত হওয়ার সময় প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। কারণ আমি বলছি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম বলেছেন অথচ তোমরা বলছো, আবু বকর এবং উমার বলেছেন’’।[1]

ব্যাখ্যাঃ আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রাযিয়াল্লাহু আনহু আরো বলেনঃ আমার ধারণা এরা অচিরেই ধ্বংস হবে। আমি বলছি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল­াম বলেছেন আর তোমরা বলছো, ‘‘আবু বকর এবং উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন।

সহীহ মুসলিমে ইবনে আবী মুলায়কা হতে বর্ণিত হয়েছে, একদা উরওয়া ইবনে যুবাইর (রঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর একজন সাহাবীকে দেখলেন যে, তিনি যুল হাজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনে মানুষকে উমরাহ করার আদেশ দিচ্ছেন। অথচ ঐ দশ দিনে উমরা করা বৈধ নয়। উরওয়া তখন বললেনঃ আবু বকর ও উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু তো এই দশ দিনে উমরা করেন নি। তখন সেই সাহাবী বললেনঃ এ জন্যই তোমরা ধ্বংস হবে। আমার ধারণা আল্লাহ তোমাদেরকে অচিরেই শাস্তি দিবেন। আমি তোমাদের কাছে হাদীছ বর্ণনা করছি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে। আর তোমরা আমাকে আবু বকর ও উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুমার সংবাদ শুনাচ্ছ।

ইমাম শাফেঈ (রঃ) বলেনঃ আলেমগণ এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে, যার কাছে রাসূলের সুন্নাত সুস্পষ্ট হবে, কারো কথায় সেই সুন্নাত বর্জন করা জায়েয নেই।

ইমাম মালেক (রঃ) বলেনঃ আমাদের প্রত্যেকের কথাই প্রত্যাখ্যাণযোগ্য। আমাদের প্রত্যেকেই আবার অন্যের কথার প্রতিবাদও করতে পারে। তবে এই কবরের অধিবাসীর কোনো কথাই প্রত্যাখ্যান করা যাবেনা। এই বলে তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর কবরের দিকে ইঙ্গিত করে দেখালেন।

আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রাযিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা ব্যতীত অন্যদের কথা গ্রহণও করা যেতে পারে আবার বর্জনও করা যেতে পারে।

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল (রঃ) বলেন, ‘‘ঐসব লোকদের ব্যাপারটি আমার কাছে খুবই অবাক লাগে, যারা হাদিছের সনদ ও বিশুদ্ধতা অর্থাৎ সহীহ হওয়ার বিষয়টি জানার পরও সুফইয়ান সওরীর মতামতকে গ্রহণ করে। অথচ আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ

‘‘যারা রাসূলের আদেশের বিরোধিতা করে, তাদের এ ভয় করা উচিৎ যে, তাদের উপর কোনো ফিতনা কিংবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এসে পড়তে পারে’’। (সূরা নূরঃ ৮৩) তুমি কি জানো ফিতনা কী? ফিতনা হচ্ছে শির্ক। কেউ রাসূলের কোনো কথা প্রত্যাখান করলে সম্ভবত তার অন্তরে বক্রতার সৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে সে ধ্বংসও হতে পারে’’।[2]

ব্যাখ্যাঃ ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল (রঃ) বলেনঃ আমি মুসহাফ নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করেছি। দেখেছি যে, আল্লাহ তাআলা ৩৩ স্থানে রাসূলের আনুগত্য করার হুকুম করেছেন। অতঃপর তিনি আল্লাহর এই বাণী তিলাওয়াত করলেনঃ

فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ

‘‘যারা তাঁর রাসূলের নির্দেশের বিরোধিতা করে, তাদের এ ভয় করা উচিৎ যে, তাদের উপর কোন কঠিন পরীক্ষা কিংবা কোন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি এসে পড়তে পারে’’।

সুফিয়ান হচ্ছেন সুপ্রসিদ্ধ ইমাম, এবাদত গোজার, ফকীহ এবং হাদীছ বর্ণনায় একজন নির্ভরযোগ্য রাবী। তাঁর ছাত্রের সংখ্যা ছিল প্রচুর। তারা তাঁর কাছে ইলম হাসিল করেছেন। তার সুপ্রসিদ্ধ মাজহাব রয়েছে।

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল (রঃ) যে বিষয়টির প্রতিবাদ করেছেন, তাতে প্রচুর লোক লিপ্ত রয়েছে। বিশেষ করে যারা ইলম শিক্ষা দান, ফতোয়া প্রদান এবং শিক্ষাদানে নিজেদেরকে যোগ্যতাসম্পন্ন বলে দাবী করে, তারা মনে করে মুজতাহিদ ব্যতীত কেউ কুরআন ও সুন্নাহ থেকে সরাসরি দলীল গ্রহণ করতে পারেনা। আর ইজতেহাদের দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। তাদের এই দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ ভুল।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

«لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِى عَلَى الْحَقِّ مَنْصُوْرَةً لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ أَوْ خَالَفَهُمْ حَتَّى يَأْتِىَ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ عَلَى ذَلِكَ»

‘‘আমার উম্মতের একদল লোক হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। আল্লাহ তাদের সাহায্য করবেন। যারা তাদেরকে বর্জন করবে এবং যারা তাদের বিরোধিতা করবে, তারা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা। কিয়ামত পর্যন্ত তারা হকের উপরই কায়েম থাকবে’’।[3] ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল (রঃ) এই হাদীছ দ্বারা দলীল গ্রহণ করেছেন যে, ইজতেহাদের দরজা কখনও বন্ধ হবেনা।

ইমাম ইবনু আব্দুল বার্ এই মর্মে ইজমা বর্ণনা করেছেন যে, মুকাল্লিদ (যে বিনা দলীলে অন্যের কথা গ্রহণ করে) আলেমদের অন্তর্ভূক্ত নয়। আলেমগণ এ বিষয়টি বর্ণনা করতে কোনো প্রকার ত্রুটি করেন নি। তারা নিজেরাই তাদের তাকলীদ করতে মুসলিমদেরকে নিষেধ করেছেন। বিশেষ করে যখন তাদের কাছে সুন্নাত সু্স্পষ্ট হয়ে যাবে।

ইমাম আবু হানীফা (রঃ) বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে যখন কোন হাদীছ আসবে, তখন তা আমার মাথা ও চোখের উপর। সাহাবীদের থেকে কোনো বর্ণনা আসলে তাও আমার মাথার উপর। আর তাবেয়ীদের থেকে যদি কোনো কথা আসে, তাহলে তারাও মানুষ আমরাও মানুষ। অর্থাৎ তাদের সকল কথা আমরা মানতে বাধ্য নই। কেননা তাদের কথায় ভুলের সম্ভাবনা রয়েছে।

ইমাম আবু হানীফা (রঃ) আরও বলেনঃ আমার কথা আল্লাহর কিতাবের বিরোধী হলে আল্লাহর কিতাবের বিরোধী হওয়ার কারণে আমার কথা বর্জন করো। তাঁকে প্রশ্ন করা হল আপনার কথা যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর কথার বিরোধী হয় তাহলে কী করা হবে? তিনি বললেনঃ আমার কথা হাদীছের বিরোধী হলে আমার কথা বর্জন করো। তাঁকে আবারও প্রশ্ন করা হল, সাহাবীদের কথা যদি আপনার কথার বিরোধী হয়, তাহলে কী হবে? তিনি বললেনঃ আমার কথা যদি সাহাবীদের কথার বিরোধী হয়, তাহলে আমার কথা বাদ দিয়ে সাহাবীদের কথা গ্রহণ করো।

ইমাম শাফেয়ী ও ইমাম মালেক (রঃ)এর উক্তি ইতিপূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে। সুতরাং যেই আলেম স্বীয় মাজহাবের আলেমদের কিতাবাদি নিয়ে ব্যস্ত থাকবে, তার উচিত বিরোধীদের মত এবং তাদের দলীলের প্রতি দৃষ্টি দেয়া। এতে করে যার কথার সাথে দলীল পাওয়া যাবে, সেই দলীলের অনুসরণ করতে পারবেন।

আদী বিন হাতেম রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিম্ন বর্ণিত আয়াতটি পাঠ করতে শুনেছি,

اتَّخَذُوا أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَانَهُمْ أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَالْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا إِلَهًا وَاحِدًا لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ سُبْحَانَهُ عَمَّا يُشْرِكُونَ

‘‘তারা তাদের পন্ডিত ও সংসার-বৈরাগীদিগকে তাদের পালনকর্তারূপে গ্রহণ করেছে আল্লাহ্ ব্যতীত এবং মরিয়মের পুত্রকেও। অথচ তারা আদিষ্ট ছিল এক মাবুদের এবাদত করার জন্য। তিনি ছাড়া কোন সত্য মাবুদ নেই। তারা যাকে তার শরীক সাব্যস্ত করে, তার থেকে তিনি পবিত্র। (সূরা তাওবাঃ ৩১) তখন আমি নবীজিকে বললাম, আমরা তো তাদের এবাদত করিনা। তিন বললেন, আচ্ছা আল্লাহর হালাল ঘোষিত জিনিষকে তারা হারাম বললে, তোমরা কি তা হারাম হিসেবে গ্রহণ করোনা? আবার আল্লাহর হারাম ঘোষিত জিনিষকে তারা হালাল বললে, তোমরা কি তা হালাল হিসেবে গ্রহণ করোনা? তখন আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি তখন বললেনঃ এটাই তাদের এবাদত করার মধ্যে গণ্য ।[4] ইমাম আহমাদ ও তিরমিযী এই হাদীছ বর্ণনা করেছেন। আর ইমাম তিরমিজী হাদীছটিকে হাসান বলেছেন।

ব্যাখ্যাঃ হাদীছের বর্ণনাকারী হচ্ছে আদী বিন হাতিম আত্ তায়ী রাযিয়াল্লাহু আনহু। তাঁর পিতা ছিলেন হাতিম তায়ী। হাতিম বদান্যতা ও মেহমানদারীতে ছিলেন আরবদের মধ্যে সর্বাধিক সুপ্রসিদ্ধ। আদী বিন হাতিম নবম হিজরীর শাবান মাসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর নিকট আগমণ করে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তিনি একশত বিশ বছর হায়াত পেয়েছিলেন।

লেখক শিরোনামে মূলতঃ এই হাদীছ এবং এই অর্থে বর্ণিত অন্যান্য হাদীছের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। এতে দলীল পাওয়া যায় যে, আল্লাহর নাফরমানীতে ইহুদী ও খৃষ্টান আলেমদের আনুগত্য করা আল্লাহ ব্যতীত তাদের এবাদতের শামিল।

আমাদের সম্মানিত শাইখ অধ্যায়ের শেষে ৫নং মাসআলায় বলেছেনঃ অবস্থা এই পর্যন্ত গড়িয়েছে যে, অধিকাংশের নিকট পাদ্রী পীর-মাশায়েখদের এবাদত করাই সর্বাধিক উত্তম আমলে পরিণত হয়েছে। লোকেরা এটিকে বেলায়াত হিসাবে নামকরণ করছে। পাদ্রীদের এবাদতই বর্তমানে ইলম ও ফিকাহ হিসাবে গণ্য হচ্ছে। পরবর্তীতে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ ধারণ করে এবং খারাপ লোকদেরও এবাদত শুরু হয়। অর্থাৎ জাহেল ও মূর্খদেরও এবাদত শুরু হয়।

যিয়াদ বিন হুদাইর রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ উমার রাযিয়াল্লাহু আনহু আমাকে বললেনঃ তুমি কি জান কিসে ইসলাম ভঙ্গ করে দেয়? যিয়াদ বলেনঃ আমি বললামঃ না, জানি না। তিনি তখন বললেনঃ আলেমের পদস্খলন, কুরআনের আয়াত নিয়ে মুনাফিকদের তর্ক এবং পথভ্রষ্ট শাসকদের শাসন। ইমাম দারামী এই হাদীছ বর্ণনা করেছেন।

আল্লাহ তাআলা যেন আমাদেরকে এবং তোমাদেরকে ঐ সমস্ত লোকদের অন্তর্ভূক্ত করেন, যারা হক পথে চলে এবং হক অনুযায়ী ফয়সালা করে। কেননা অনেক লোকই পথভ্রষ্ট লোক সত্য পথ হতে বিচ্যুত হয়েছে এবং অনেকেরই সত্য দ্বীন হতে পদস্খলন ঘটেছে। এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত মাসআলাগুলো জানা যায়

১) সূরা নূরের ৬৩ নং আয়াতের তাফসীর জানা গেল।

২) সূরা তাওবার ৩১ নং আয়াতের তাফসীরও জানা গেল।

৩) এখানে এবাদতের তাৎপর্য বর্ণনা করা হয়েছে, যা আদী বিন হাতিম অস্বীকার করেছিলেন।

৪) ইবনে আববাস রাযিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক আবু বকর এবং উমার রাযিয়াল্লাহু আনহুর দৃষ্টান্ত আর ইমাম আহমাদ (রঃ) কর্তৃক সুফইয়ান ছাওরীর দৃষ্টান্ত পেশ করা।

৫) মানুষের অবস্থা পরিবর্তন হয়ে এমন গোমরাহীর পর্যায়ে উপনীত হয়েছে যে, তাদের অধিকাংশই আলেম ও পীর-বুযুর্গের পূজা করাকে সর্বোত্তম আমল হিসাবে গণ্য করছে। আর এরই নাম দেয়া হচ্ছে বেলায়াত’। যারা আলেম ও পীর-বুযুর্গ ব্যক্তিদের এবাদত করে, তাদেরকেই জ্ঞানী ও প্রজ্ঞাবান বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

অতঃপর অবস্থার আরো পরিবর্তন সাধিত হয়ে বর্তমানে এমন পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছে যে, আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন সব ব্যক্তিদের এবাদত করা হচ্ছে, যারা আদৌ ভাল লোকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলনা। সেই সাথে এমন লোকদেরও এবাদত করা হচ্ছে, যারা একদম জাহেল।

[1] - দেখুনঃ তাফসীরে ইবনে কাছীর, (২/৩৪৮)

[2] - দেখুনঃ ইবনে বাত্তাহ কর্তৃক রচিত আলইবানাতুল কুবরাহ, পৃষ্ঠা নং- ৯৭, মাসায়েলে আব্দুল্লাহ ইবনে ইমাম আহমাদ, (৩/১৩৫৫)

[3] - হাদীছটি সহীহ। বুখারী ও মুসলিমসহ অন্যান্য কিতাবেও হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে। তবে সকল বর্ণনার শব্দ এক রকম নয়। বুখারীতে হাদীছটির নাম্বার- ৩৬৪১।

[4] - উক্ত হাদীছকে ইমাম তিরমিযী বিশুদ্ধ বলেছেন। তবে অন্যান্য মুহাদ্দিছগণের নিকট এটির সনদ বিশুদ্ধ নয়। বস্ত্ততঃ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের জন্য আয়াতের মূল বক্তব্যই যথেষ্ট। উল্লেখ্য যে, উক্ত বক্তব্যের সমর্থনে বহু আয়াত ও হাদীছ রয়েছে।