ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
সহীহ হাদীসের আলোকে সাওম বিশ্বকোষ অষ্টম অধ্যায়: সাওম সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা ইসলামহাউজ.কম
প্রশ্ন: সাওমের সুন্নত ও মুস্তাহাবসমূহ কী কী?

জওয়াব: সাওমের সুন্নত ও মুস্তাহাবসমূহ:

১ - সাহরী খাওয়া এবং তা দেরী করে ফজরের আযানের কিছু সময় পূর্বে খাওয়া।

হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা সাহরী খাও। কেননা সাহরীতে বরকত রয়েছে।’

২ - দ্রুত ইফতার করা।

সাওমদারের জন্য মুস্তাহাব হলো দ্রুত ইফতার করা। অর্থাৎ সূর্যাস্ত যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হলে সাথে সাথে ইফতার করা। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মানুষ ভালো থাকবে যতক্ষণ তারা দ্রুত ইফতার করে যাবে।’

তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করা মুস্তাহাব। তাজা খেজুর না পাওয়া গেলে শুকনো খেজুর দিয়ে ইফতার করা। খেজুর বেজোড় সংখ্যায় হওয়া। যদি খেজুর না পাওয়া যায় তবে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে ইফতার করা। আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতের পূর্বে বেজোড় সংখ্যক তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাজা খেজুর না পেলে শুকনো খেজুর দিয়ে। আর খেজুর না পেলে তিনি কয়েক ঢোক পানি পান করে ইফতার করতেন।’

৩- ইফতারের সময় দো‘আ পড়া। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন, বলতেন,

«ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ، وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ»

“তৃষ্ণা চলে গেছে, শিরাগুলো আদ্র হয়েছে আর ছাওয়াব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনত্র বলেছেন, ‘নিশ্চয় ইফতারের সময় সাওমদারের দো‘আ ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।’ (আবু দাউদ, হাদীস নং ২৩৫৭। আলবানী রহ. হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।)

৪- অহেতুক ও অশ্লীল কথা পরিত্যাগ করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«وَإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَرْفُثْ،وَلاَ يَصْخَبْ ، فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ، أَوْ قَاتَلَهُ فَلْيَقُلْ: إِنِّى امْرُؤٌ صَائِمٌ».

“তোমাদের কেউ যখন সাওম পালন করবে তখন সে যেন অশ্লীল কথা, ঝগড়া ও হট্টগোল বর্জন করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সাথে লড়াইয়ে লিপ্ত হয় তখন সে যেন বলে, আমি সাওম পালনকারী।”

৫- বেশি বেশি ইবাদত করা। যেমন, কুরআন তিলাওয়াত, আল্লাহর যিকর করা, তারাবীর সালাত পড়া, তাহাজ্জুদের সালাত পড়া, লাইলাতুল কদর যাপন করা, ফরয সালাতের আগে-পড়ের সুন্নতগুলো আদায় করা, দান-সদকা করা, ভালো কাজ সম্পাদনে অর্থ ও শ্রম ব্যয় করা, সাওমদারদেরকে ইফতার করানো ও মাহে রমযানে উমরা আদায় করা; কেননা মাহে রমযানে নেক আমলের ছাওয়াব বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ইবন ‘আব্বাস রারিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব থেকে বেশি দানশীল ছিলেন, আর তিনি রমযান মাসে সমধিক দানশীল থেকেন, যখন জিবরীল আলাইহিস সালাম তার সাথে সাক্ষাৎ করতেন। আর জিবরীল আলাইহিস সালাম রমযানের প্রতি রাতেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাঁকে কুরআন চর্চা করাতেন। যখন জিবরীল আলাইহিস সালাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সাক্ষাৎ করতেন তখন তিনি দান খয়রাতে উন্মুক্ত বাতাস থেকেও অধিক বেগবান থেকেন।