উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর সাথে দেখা করার জন্য সুহাইল ইবন আমর, হারেস ইবন হিশাম, আবু সুফিয়ান ইবন হারব সহ কুরাইশদের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা দরজার বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। সে সময় সুহাইব রূমী, বিলাল ইবন রাবাহ রাদিয়াল্লাহ আনহুমা সহ বদরী সাহাবী, যারা ক্রীতদাস ছিলেন, তারাও উপস্থিত হয়েছিলেন।
উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু প্রথমে তাদেরকে ডেকে পাঠালেন। এতে আবু সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু আনহু উচ্চস্বরে বলতে লাগলেন যে তাদের উপরে এই ক্রীতদাসরা কিভাবে প্রাধান্য পেল? সুহাইল ইবন আমর ছিলেন সুবক্তা ও বুদ্ধিমান। তিনি সাথীদের লক্ষ্য করে বললেন: আমি তোমাদের চেহারায় রাগ ও অসন্তুষ্টির পরিচয় পাচ্ছি। রাগ উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর উপর না করে বরং নিজেদের উপর কর। কারণ সত্যের দাওয়াত তারাও পেয়েছে, তোমরাও পেয়েছ; কিন্তু দুর্বল লোকেরাই সাথে সাথে দাওয়াত কবুল করেছিল অথচ তোমরা তা প্রত্যাখ্যান করেছিলে। আর তাদের তুলনায় পিছিয়ে পড়েছিলে। যে ঈমানী মর্যাদার মাধ্যমে এ ক্রীতদাসেরা তোমাদের উপর প্রাধান্য লাভ করেছে, তা হাতছাড়া হয়ে যাওয়া আজকে তোমাদের এ দরজা দিয়ে প্রথমে প্রবেশের সুযোগ না পাওয়া থেকেও আফসোসজনক, যেখানে প্রবেশের জন্য তোমরা প্রতিযোগিতা করছ। হে লোকেরা! এ ক্রীতদাসেরা যে নিয়ামত পেয়ে তোমাদের উপর প্রাধান্য লাভ করেছে তা তোমরা জান। আল্লাহর কসম! তারা তোমাদেরকে যে বিষয়ে অতিক্রম করে গেছে সেখানে তোমাদের পৌঁছা অসম্ভব। তোমরা এখন থেকে জিহাদকে তোমাদেরকে নিত্য সাথী হিসাবে গ্রহণ কর, হয়তো বা আল্লাহ তোমাদের শাহাদাতের মর্যাদা দেবেন আর তোমরাও উচ্চ মর্যাদার অধিকারী হবে।
একবার আবু ওবায়দা ইবনুল জাররাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু ৪ শত বা ৪ হাজার দিনার পাঠিয়ে দিয়ে বাহককে বললেন যে ঐ টাকা তিনি কোন খাতে খরচ করবেন তা দেখতে।
আবু ওবায়দা রাদিয়াল্লাহু আনহু সব বিলিয়ে দিলেন। আবারও উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু ঐ পরিমাণ দিনার মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে পাঠালেন। তিনিও সব বিলিয়ে দিলেন। শেষ মুহূর্তে তাঁর স্ত্রী এসে কিছু চাইলেন মাত্র ২ দিনার তখন অবশিষ্ট ছিল, তিনি তাই পেলেন।
ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এই ঘটনা শুনে খুশি হয়ে বললেন: তাঁরা একে অপরের ভাই। আল্লাহ তাঁদের সকলের উপর সন্তষ্ট থাকুন।