ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code
বাংলাদেশে নাস্তিক্যবাদী অপতৎপরতা : প্রতিরোধের উপায় বাংলাদেশে নাস্তিক্যবাদী অপতৎপরতা ইসলামহাউজ.কম
কুরআনের আয়াত ও ইসলাম নিয়ে আসিফ মহিউদ্দিনের কটাক্ষ

আসিফ মহিউদ্দিন একজন স্বঘোষিত নাস্তিক। সে কমিউনিজমে বিশ্বাসী। শাহবাগে প্রথম সমাবেশে সে একটি মিছিলে নেতৃত্ব দেয়। একটি ছবিতে দেখা যায় এ ধরনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য ইসলামবিদ্বেষী বৃহৎ দলের বুদ্ধিজীবী ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ওইদিন তাকে পিঠ চাপড়ে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।

আসিফ মহিউদ্দিন (গত ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:০০) ব্লগে একটি পোস্ট লিখেছেন। সেখানে ইসলাম ও কুরআনকে কটাক্ষ করে তার লেখা হলো : ‘বিসমিল্লহির রহমানির রাহিম। আউজুবিল্লা হিমিনাশ শাইতানির নাস্তিকানির নাজিম।’

গত বছরের ৫ মে পবিত্র কুরআন শরীফকে মহাপবিত্র ‘আহাম্মকোপিডিয়া’ লেখার মতোও ধৃষ্টতা দেখায় এ ব্লগার। তবে পরে তীব্র প্রতিবাদের মুখে এ পোস্টটি সে তার ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলে (এর স্ক্রিন শট এখনও আছে)।

আসিফ মহিউদ্দিন তার ফেসবুক ওয়ালে পৃথিবীর সর্বযুগের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে লিখেন, ‘মুহাম্মদ নিজেকে আইডল বা নিজেকেই ঈশ্বর না বলে একটি কল্পিত ঈশ্বরকে উপস্থাপন করেছেন। মানুষ যেন ব্যক্তিপূজায় আসক্ত না হয়, তাকেই যেন মানুষ ঈশ্বর বানিয়ে পূজা করতে শুরু না করে, সে ব্যাপারে তিনি কঠোর ছিলেন। তাই তার সমস্ত রচনাই তিনি আল্লার নামে চালিয়ে দিয়েছেন, এর রচয়িতা হিসেবে আল্লাকে সৃষ্টি করেছেন!’

আরেক পোস্টে এই কুলাঙ্গার লিখেছেন, ‘ধর্মান্ধ মুসলিমদের উত্তেজনার শেষ নেই। তাদের সকল আন্দোলন-সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে কে মুহাম্মদের ছবি আঁকলো, কে ধর্মের সমালোচনা করলো। অথচ এতে মুহাম্মদ/আল্লার কখনই কিছু যাবে আসবে না। ব্যাপারটা এমন নয় যে, মুহাম্মদের ছবি আঁকা হলে স্বর্গে মুহাম্মদ সাহেব কষ্টে কাঁদতে কাঁদতে আত্মহত্যা করছেন! আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে, তার উম্মতরা ঠিকই তাকে একজন পীরে পরিণত করেছে।’

ফেসবুকে বিশ্বনবীর একটি কাল্পনিক ছবিকে দেখিয়ে তিনি লিখেছেন, এই ছবিটা মুহাম্মদের উন্মাদ উম্মতদের উদ্দেশ্যে একটা জবাব হতে পারে।’

ইসলামের বিধান পর্দা বা বোরকা নিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘বোরখা পরাটা সমর্থন করি না, বোরখা হিজাব মূলত আরবির বর্বর সমাজের প্রতীক। একটা সমাজে অত্যধিক বোরখার প্রাদুর্ভাব থাকা মানে হচ্ছে সেই সমাজের পুরুষগুলো সব এক একটা ধর্ষক, সেই ধর্ষকদের হাত থেকে বাঁচার জন্য সকল নারীকে একটা জেলখানা নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। এইসব অজুহাতে নারীকে যুগ যুগ ধরে বন্দী করে রাখা হয়েছে, কখনও ঘরের ভেতরে, আবার কখনও বোরখা নামক চলমান জেলখানার ভেতরে।’
ইসলামকে শ্রেষ্ঠ বৈশিষ্ট্য দান নিয়েও কটাক্ষ করে তিনি লিখেছেন, ‘ধার্মিকদের মাথায় স্বার্থচিন্তা থাকে যে, এই উপকারে সে পরকালে হুর পাবে। এমনকি তারা কোন দরিদ্র, দুস্থ, পঙ্গু মানুষকে দেখলেও বেশিরভাগ সময়ই স্বার্থপরের মতো নিজের কথাই ভাবে। আর যদি ওই পঙ্গু লোকটির কথা ভাবেও, তাতেও তাদের মাথায় থাকে স্বর্গে হুরী সঙ্গমের অশ্লীল চিন্তা।’

তার মতে, ‘জনগণের সুখ ও অর্থনৈতিক সাম্যের জন্য সর্বপ্রথম যা করতে হবে, তা হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের উচ্ছেদ।’তবে ইসলাম ধর্ম নিয়ে এমন অবমাননামূলক ও উসকানিমূলক পোস্ট লেখায় তৌহিদী জনতার প্রচণ্ড আন্দোলনের চাপে শেষ পর্যন্ত আসিফ মহিউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন ব্লগারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের কয়েকজনকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে। তবে পাশাপাশি যেভাবে এদের মুখোশ উন্মোচনকারী মিডিয়ার সমালোচনা ও হুমকি দেয়া হচ্ছে তাতে তাদের শাস্তি নিশ্চিত হওয়া নিয়ে আমাদের মনে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে[1]।

বলা দরকার, কারো মনে বিশ্বাস না জন্মালে তিনি বিশ্বাস নাও করতে পারে। ধর্ম তাকে জবরদস্তি করতে বলে নি। কিন্তু কেউ চাইলেই বাকস্বাধীনতার নামে বিভৎস ও বিকৃত ভাষায় কোটি কোটি মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার কেন্দ্রে আঘাত করতে পারে না। সকল ধর্ম এমনকি তথাকথিত ধর্মনিরেপক্ষবাদও নাকি তাই বলে। আমাদের সংবিধান ও সরকারের ভাষ্যও তাই। সুতরাং কেউ যদি দেশে অশান্তি সৃষ্টিকারী কিছু ব্লগারের পক্ষে দাঁড়ান তবে তারাও তো সমান অপরাধী।

এদিকে আরিফুর রহমান (হুঙ্কারসহ নানা নামে লেখে) লিখেছেন, ‘আমি মনে করি আল্লা বিষয়টা মুহাম্মদের একটা বুজরুকি। ছিটগ্রস্ত মুহাম্মদ তার হ্যালুসিনেশনের সময় মনে করতো জিব্রাইল আইছে, তাই আল্লার কাল্পনিক কাহিনী বানিয়ে ধর্ম তৈরি করেছে। নাম দিয়েছে ইজলাম। এই হলো আল্লা বিষয়ে আসল কাহিনী।’

হিজাব নিয়ে আরিফ লিখেছেন, ‘হিজাব হলো ছৌদি নোংরামির চূড়ান্ত... কুত্তাদের কালো কাপড়ের কালচার। একে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়াটাই একটা বড় রকমের গুনাহ...!! হিজাবের বিরুদ্ধে পোস্টতো আসবই। ইসলামী পুরুষতন্ত্রের ছাগুরা।’

ইব্রাহিম খলিল নামের এক প্রতারক সবাক নামে লিখেছেন, ‘মির্জা সাথীর প্রোফাইট পিকচার সুন্দর। নিজের অজান্তেই লুল ফালাইতে ইচ্ছা কর্তাছে...’ আলআওয়াম আল আনয়াম (আওয়ামী লীগ চতুষ্পদ জানোয়ারের ন্যায়)। সুরা গো. আ, আয়াত-৪২০।’

ধর্ম নিয়ে সবাক লিখেছে, ‘শুয়রের বাচ্চারা বানাইছে একখান বালের ধর্ম। বৌ... (এতটা অশ্লীল শব্দ যে উল্লেখ করা সম্ভব হলো না) কিছু কথা কইছে, আর... ফালানোর পর কিছু কথা বলে। দুইটাই শালাগো ধর্তব্য হইছে। বিশ্বাস হালকা কইরা স্বার্থবন্দী কথাগুলান যাচাই কইরা আবার ধার্মিকরাই বাহির কইরলো বিরাট ক্যারফা। তারপর ধর্মের গোয়া বাইর হইছে লস্করই-তাইয়্যিবাল, বাল কায়েদা, বালকাতুল জিহাদ, সোগাবুত হাহরীর। ধর্মরেও... ধর্মের সোগা দিয়া পয়দা হওয়া বর্বরগুলানরেও... ।’

শুধু তাই নয়, এ নাস্তিকদের অনেকের ফেসবুকে ইসলামকে নিয়ে নানা কটূক্তিকর স্ট্যাটাস বেশ দেখা যাচ্ছে। ঠিক এমনি আশরাফুল ইসলাম রাতুল নামে এক নাস্তিক কিছুদিন আগে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছে, ‘সাহস থাকলে একবার শাহাবাগ আয় রাজাকারের চুদারা, তোদের মুহাম্মদ (স.) আর নিজামী বাপকে একে অন্যের পোদের ভেতর ঢুকাবো।’ (নাউজুবিল্লাহ) [সৌজন্যে : দৈনিক আমার দেশ ও নয়া দিগন্ত, ১৮ ও ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সংখ্যা] এসব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে রীতিমত তোলপাড় হয়। উসকানিমূলক ও চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ এসব মন্তব্যের প্রতিবাদ ও ইসলাম ধর্মের নানা দিক নিয়ে যথাসাধ্য পোস্ট দিয়ে যান ইসলামপন্থী ব্লগাররা। তারা নাস্তিকদের দেয়া নানা যুক্তি খণ্ডনের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে ফেসবুক ব্যবহারকারী ও ব্লগারদের এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের জন্য তাদের বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানান। এ ব্যাপারে ইসলামপ্রিয় মুসলিমদের সতর্ক থাকার আহ্বানও জানানো হয়।

>
[1] সর্বশেষ সংবাদ হচ্ছে, এ সরকার তাদের দু’জনকে ছেড়ে দিয়েছে। অপর জনকে সহ তাদের সবাইকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়ার চিন্তা করছে। [সম্পাদক]