মাসিকের সময় স্ত্রী সহবাস কুরআন-হাদীস উভয়ের আলোকেই নিষিদ্ধ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَيَسۡ‍َٔلُونَكَ عَنِ ٱلۡمَحِيضِۖ قُلۡ هُوَ أَذٗى فَٱعۡتَزِلُواْ ٱلنِّسَآءَ فِي ٱلۡمَحِيضِ وَلَا تَقۡرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ يَطۡهُرۡنَۖ﴾ [البقرة: ٢٢٢]

“তারা আপনাকে মাসিক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। আপনি বলুন, উহা অশুচি। সুতরাং মাসিকের সময় তোমরা স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটে যেও না”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২২২]

পবিত্রতা লাভের পর তারা গোসল না করা পর্যন্ত তাদের নিকটে যাওয়া বৈধ নয়। কেননা একই সাথে আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেছেন,

﴿فَإِذَا تَطَهَّرۡنَ فَأۡتُوهُنَّ مِنۡ حَيۡثُ أَمَرَكُمُ ٱللَّهُۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلتَّوَّٰبِينَ وَيُحِبُّ ٱلۡمُتَطَهِّرِينَ ٢٢٢﴾ [البقرة: ٢٢٢]

“যখন তারা ভালোমত পাক-পবিত্র হয়ে যাবে তখন তোমরা তাদের নিকটে আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক গমন কর”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২২২]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«اصْنَعُوا كُلَّ شَيْءٍ إِلَّا النِّكَاحَ»

‘সহবাস ব্যতীত তোমরা তাদের সাথে সব কিছুই কর”।[1]

মাসিকের সময় সহবাস যে কঠিন পাপ তা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিম্নোক্ত বাণী থেকে প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন,

«مَنْ أَتَى حَائِضًا، أَوِ امْرَأَةً فِي دُبُرِهَا، أَوْ كَاهِنًا، فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ»

“যে ব্যক্তি কোনো ঋতুবতীর সাথে মিলিত হয় কিংবা কোনো মহিলার পশ্চাৎদ্বারে সঙ্গম করে অথবা কোনো গণকের নিকটে যায়, নিশ্চয় সে মুহাম্মাদের ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তার সাথে কুফরী করে”।[2]অজ্ঞতাবশতঃ যদি কোনো ব্যক্তি মাসিকের সময় স্ত্রী সহবাস করে তাহলে তাকে এজন্য কোনো কাফ্ফারা দিতে হবে না। কিন্তু জেনেশুনে যারা এ কাজ করবে তাদেরকে নির্ধারিত এক দীনার বা অর্ধ দীনার কাফ্ফারা দিতে হবে। এ সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণিত আছে।[3] এখানে এক দীনার বা অর্ধ দীনার দু’টি সুযোগের যে কোনো একটি নেওয়া যাবে বলে কেউ কেউ মত প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ বলেন, যদি মাসিকের শুরুতে যখন প্রথম রক্ত বেশি আকারে বের হতে থাকে তখন কেউ সহবাস করে তবে এক দীনার আর যদি মাসিকের শেষে যখন রক্ত কম বের হয়, অথবা তার গোসলের আগে সহবাস করা হয় তবে অর্ধ দীনার সদকা করতে হবে। আর এক দীনার এর পরিমাণ হচ্ছে, ২৫,৪ গ্রাম স্বর্ণ। অথবা সমপরিমাণ মূল্যের কাগজের মুদ্রা।

>
[1] সহীহ মুসলিম; মিশকাত, হাদীস নং ৫৪৫।

[2] তিরমিযী; মিশকাত, হাদীস নং ৫৫১।

[3] তিরমিযী, হাদীস নং ১২৫; সুনান আবু দাউদ; সুনান নাসাঈ; মিশকাত, হাদীস নং ৫৫৩, সনদ সহীহ।