শরী‘আতে যে পরিমাণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ইবাদাত করতে গিয়ে সে ক্ষেত্রে তার চেয়েও বেশি ‘আমল করার মাধ্যমে বাড়াবাড়ি করা এবং কঠোরতা আরোপ করা বিদ‘আত বলে বিবেচিত।

উদাহরণ:

১। সারা রাত জেগে নিদ্রা পরিহার করে কিয়ামুল লাইল-এর মাধ্যমে এবং ভঙ্গ না করে সারা বছর সাওম রাখার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা এবং অনুরূপভাবে স্ত্রী, পরিবার ও সংসার ত্যাগ করে বৈরাগ্যবাদের ব্রত গ্রহণ করা। সহীহ বুখারীতে আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর হাদীসে যারা সারা বছর সাওম রাখার ও বিবাহ করে সংসার ধর্ম পালন না করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিল তাদের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম বলেছিলেন:

«أَمَا وَاللهِ إِنِّي لأَخْشَاكُمْ للهِ وَأَتْقَاكُمْ لَهُ لَكِنِّي أَصُومُ وَأُفْطِرُ وَأُصَلِّي وَأَرْقُدُ وَأَتَزَوَّجُ النِّسَاءَ فَمَنْ رَغِبَ عَنْ سُنَّتِي فَلَيْسَ مِنِّي».

‘‘আমি তোমাদের মধ্যে আল্লাহর প্রতি সবচেয়ে বেশি ভয় পোষণ করি এবং তাকওয়া অবলম্বনকারী। কিন্তু আমি সাওম পালন করি ও ভাঙ্গি, সালাত আদায় করি ও নিদ্রা যাপন করি এবং নারীদের বিবাহ করি। যে আমার এ সুন্নাত থেকে বিরাগভাজন হয়, যে আমার দলভুক্ত নয়।’’[1]

২। হজের সময় জামরায় বড় বড় পাথর দিয়ে রমী করা, এ কারণে যে, এগুলো ছোট পাথরের চেয়ে পিলারে জোরে আঘাত হানবে এবং এটা এ উদ্দেশ্যে যে, শয়তান এতে বেশি ব্যাথা পাবে। এটা বিদ‘আত এজন্য যে, শরী‘আতের নির্দেশ হলো ছোট পাথর নিক্ষেপ করা এবং এর কারণ হিসেবে হাদীসে বলা হয়েছে যে, ‘‘আল্লাহর যিকির ও স্মরণকে কায়েম করা।’’[2] উল্লেখ্য যে, পাথর নিক্ষেপের স্তম্ভটি শয়তান বা শয়তানের প্রতিভূ নয়। হাদীসের ভাষায় এটি জামরাহ। তাই সকল ক্ষেত্রে নিরাপদ হলো হাদীস অনুযায়ী ‘আমল করা ও আকীদা পোষণ করা।৩। যে পোষাক পরিধান করা শরী‘আতে মুবাহ ও জায়েয। যেমন, পশমী কিংবা মোটা কাপড় পরিধান করা তাকে ফযীলতপূর্ণ অথবা হারাম মনে করা বিদ‘আত, কেননা এটা শরী‘আতের দৃষ্টিতে বাড়াবাড়ি।

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫০৬৩

[2] সুনান আবি দাঊদ, হাদীস নং ১৬১২; সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ৮২৬। তিরমিযী বলেছেন, এটি হাসান ও সহীহ হাদীস।