পৃথিবীতে আল্লাহ মানুষের কল্যাণেই সব কিছুর নিয়মনীতি নির্ধারণ করেছেন। আগুন পোড়ানোর কাজে ব্যবহার হয়। পানি সব কিছু ভিজিয়ে দেয়, বাতাস গাছপালাকে দোলা দেয়, এগুলো আল্লাহরই নির্ধারিত নিয়মনীতি। এ ক্ষেত্রে কোনো কিছুর ব্যতিক্রম হলেই মানুষের মনে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়। যেমন- আগুন ছাড়াই যখন কেউ কোনো কিছু পুড়তে দেখবে তখন কেন পুড়ছে? এ প্রশ্নটি স্বাভাবিক। তখন মনের ভিতরে পোড়ার কারণ নিয়েই তোলপাড় শুরু হয়। আল্লাহ সর্বশক্তিমান, তিনি আগুনকে পোড়ানোর গুণ দিলেও আগুন ছাড়াই কোনো কিছু পোড়ানোর একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী কিন্তু তিনিই। নির্ধারিত নিয়ম লংঘন করে কোনো কিছু সংঘটিত হলে এটি কার দ্বারা হলো, যার প্রভাবে হলো তার সুত্র উদ্ধার করার একটি পর্যায় আমরা যখন আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কিছুকে তার স্থানে বসাই, তখনই অলক্ষ্যেই শির্কের অনুপ্রবেশ ঘটে। যেমন ঔষধ ধরা যায়, স্পর্শ করা যায়, অনুভব করা যায়। আল্লাহ একে রোগ সারানোর গুণাগুন বা ক্ষমতা দান করেছেন। জাদু ধরা যায় না, স্পর্শ করা যায় না, তারপরেও এর গুণাগুন যখন মানুষের উপর প্রভাব ফেলে তখনই এই অদৃশ্য বস্তর প্রভাব ও ক্ষমতা নিয়ে মানুষের মনে সৃষ্টি হয় বিভিন্ন তোলপাড়, যার অনিবার্য পরিণতিতে আল্লাহতো বটেই এমনকি জাদুরও যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে, এই ধারণা মানুষের মনে বদ্ধমূল হয়, যা মূলত: শির্কের নামান্তর। সে জন্য ইসলামে জাদু কঠোর ভাষায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজের মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাদুকেও উল্লেখ করেছেন।

عن ابي هريرة رضى الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال اجنتبوا السبع المو بقات قالوا يارسول الله وما هن؟ قال الشرك يالله والسحر---

সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বাঁচো। তারা বলল- সেগুলো কি কি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, শির্ক ও জাদু ....।[1]

জাদুকরদের কাছে কোনো রোগের চিকিস্যা বা সমস্যা সমাধানের আশ্রয় গ্রহণকেও ইসলাম সম্পূর্ণ হারাম করে দিয়ছে। শুধু তাই নয়, কুরআন মাজীদ আমাদের শিক্ষা দিয়েছে জাদুকরদের দুষ্কৃতি ও ক্ষতি থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়ার। মহান আল্লাহ বলেন, “বলো, .... ফুঁ দিয়ে গিরে কসে বাঁধে যেসব নারী, তাদের দুষ্কৃতি ও ক্ষতি থেকে, হে আল্লাহ তোমার কাছে পানা চাই।”

জাদুতে রয়েছে শির্কী কথাবার্তা। জাদু যার জন্য করা হয়, তাকেও শির্ক করতে বাধ্য করা হয়। সেজন্য জাদু শির্কেরই অংশ। বাংলাদেশে জাদু শিক্ষার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পত্রিকায় এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। জাদু দ্বারা অসংখ্য সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। অনেকেই জাদুকর নামেই খ্যাতি অর্জন করেছে।

">
[1] . আল-ইমাম আল-বুখারী, প্রাগুক্ত, ৭খ, পৃ. ৩৫০।