চার ইমাম ও তার অনুসারীদের ব্যাপারে বলতে গিয়ে বারো ইমামী শিয়া আলেম বায়াযী বলেন, “বিরোধীরা তাদের ধর্মীয় বিধি-বিধান গ্রহণ করেছে কিয়াস ও ইসতিহসান থেকে। আর আমরা গ্রহণ করেছি যামানার ঐ সব ইমামদের কাছ থেকে, যারা হালাল-হারামের বিধি-বিধান গ্রহণ করেছেন তাদের মহান নানার কাছ থেকে। তিনি জিব্রাইলের মাধ্যমে মহান রবের কাছ থেকে।”[1]
এছাড়াও বায়াযী একটি পরিচ্ছেদের শিরোনাম দেন এভাবে, “কিতাব ও সুন্নাহকে বাদ দিয়ে তারা যে কিয়াসকে আঁকড়ে ধরেছে সে কিয়াস সম্পর্কে আলোচনা।” অন্য এক স্থানে সে একটা কবিতা লেখে তা হল এই-
তুমি আমার কাছে যে হাদীস বর্ণনা করেছ তা যদি মিথ্যা হয় তাহলে
আবু হানীফা ও যুফারের পাপও তোমার কাঁধে
যে আবু হানীফা ও যুফার ‘শরীয়ত ও হাদীস’কে বাদ দিয়ে
কিয়াসের দিকে ধাবিত হয়েছে।[2]
আবার একস্থানে বলেন, “এটা হল তাদের মতানৈক্যের সাগরের একটা ছিঁটেফোটা। তারা তাদের রবের কিতাবের বরখেলাফ করেছে, নবীর সুন্নতকে বর্জন করেছে। শরীয়তের বিধি-বিধান সম্পর্কে তাদের আরো অনেক জঘন্য বক্তব্য আছে।”[3]
ইমামিয়া শিয়াদের আরেক আল্লামা ‘ইবনে মুতাহ্হির আলহিল্লি’ মিনহাজুল কারামা গ্রন্থে বলেন, “তাদের সকলে কিয়াস ও যুক্তি দিয়ে দলীল দেওয়ার পক্ষপাতী। এর মাধ্যমে তারা আল্লাহ্র দ্বীনে ভিন্ন কিছুর অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে।…এবং সাহাবীদের[4] বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে।”[5]
মুহাম্মদ বাকের আল-মাজলিসি ইমামিয়াদের কতিপয় আলেমের কিছু বাণী উদ্ধৃত করেন। সেসব বাণীতে তারা সুন্নী আলেমদেরকে সাহাবীদের মতামতের বিপরীত সিদ্ধান্ত দেওয়ার কারণে কটাক্ষ করেন। বিশেষতঃ আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর মতের বিপরীতে। যেমন একটি বাণীতে বলা হচ্ছে- “এমন কোনো ফিকহবিদ পাওয়া যাবে না যিনি কোনো না কোনো মাসয়ালাতে হলেও আমীরুল মুমিনীনের মতের বরখেলাফ করেন নি এবং তাদের মত বাদ দিয়ে অন্যের মত গ্রহণ করেন নি।”[6] বাকের আরো বলেন, “শাফেয়ী ছাড়া তাদের আর কোনো ফিকহবিদ নেই, তাছাড়া এ শাফেয়ীও আমীরুল মুমেনীনের প্রতি দোষারোপ করেছে, তার অনেক মতামতকে হেয় করেছে এবং তার দেওয়া অনেক হুকুমকে প্রত্যাখ্যান করেছে।…যদি কারো অন্তরে তার (আলী রাঃ) প্রতি সামান্যতম ভালোবাসাও থেকে থাকে তাহলে সে এমন করতে পারে না।[7]
[2] প্রাগুক্ত (৩/২১০)।
[3] প্রাগুক্ত (৩/২০৫) এছাড়াও দেখুন (৩/১৯৫)।
[4] বস্তুত শিয়ারা সাহাবীদেরকে ঈমানদারই মনে করে না, তাদের কথার মূল্য তাদের কাছে কী-ই বা আছে। তারা আসলে এর দ্বারা তাদের কাছে বর্ণিত আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে যে সব মতামত লিখে নিয়েছে সেগুলো উদ্দেশ্য নিয়েছে। বাস্তবে আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে তাদের সে বর্ণনাগুলো মোটেই শুদ্ধ নয়। [সম্পাদক]
[5] হিল্লির ‘মিনহাজুল কারামাহ্’ (পৃঃ ৯৩) থেকে মিনহাজুস সুন্নাহ্তে (৩/৪০০-৪০১) উদ্ধৃত করা হয়েছে।
[6] বিহারুল আনওয়ার (১০/৪৪৪-৪৪৫)।
[7] বিহারুল আনওয়ার (১০/৪৪৪-৪৪৫), এছাড়া মাযহাবের ইমামরা ও তাদের অনুসারীরা কিয়াসকে গ্রহণ করার কারণে তাদের প্রতি দোষারোপ সংক্রান্ত বিষয়ে দেখুন: (২/২৮৬, ২৮৮-২৮৯),(২/২৯৮),(১০/২৩০)(বাবুল ইহতিজাজ আলাল মুখালিফীন)