ইমাম আহমাদ ইবন তাইমিয়্যাহ রহ.-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল: যে ব্যক্তি কবর যিয়ারত করে ও কবরবাসীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে কোনো রোগের জন্য অথবা ঘোড়ার আরোগ্যের জন্য অথবা কোনো বাহনের জন্য, তার মাধ্যমে রোগ দূরীকরনের প্রার্থনা করে, আর সে বলে, হে আমার নেতা; আমি তোমার আশ্রয়ে আছি, আমি তোমার ছত্র-ছায়ায় আছি, অমুক আমার ওপর যুলুম করেছে, অমুক আমাকে কষ্ট দেওয়ার ইচ্ছা করেছে। সে আরও বলে, কবরবাসী আল্লাহ ও তার মাঝে মাধ্যম হবে। আবার তাদের কেউ কেউ ওলীদের মসজিদ খানকা ও তাদের জীবিত ও মৃত পীরদের নামে টাকা, উট, ছাগল, ভেড়া, তেল প্রভৃতি মানত করে। সে বলে, যদি আমার সন্তান সুস্থ হয় তবে আমার পীরের জন্য এটা, এটা এবং অনুরুপ কিছু। আবার তাদের কেউ কেউ তার পীরের দ্বারা উদ্ধার প্রার্থনা করে ঐ অবস্থায় তার অন্তর যেন দৃঢ় থাকে। আবার কেউ কেউ তার পীরের কাছে আসে এবং কবর স্পর্শ করে এবং তার কবরের মাটিতে চেহারা ঘর্ষণ করে, হাত দ্বারা কবরকে মাসেহ করে ও তা দিয়ে তার মুখ মাসেহ করে, অনুরূপ আরো অন্য কিছুও করে থাকে। আবার তাদের কেউ কেউ তার প্রয়োজন পূরণের ইচ্ছা করে তার পীরের কবরের কাছে গিয়ে বলে, হে অমুক! আপনার বরকতে (তা হোক) অথবা বলে আমার প্রয়োজনটা আল্লাহ এবং পীরের বরকতে পূর্ণ হয়েছে। আবার তাদের কেউ কেউ শামা গানের আমল করে এবং কবরের কাছে যায়, অতঃপর পীরের সামনে মাথা নত করে ও মাটিতে সাজদায় লুটিয়ে পড়ে। আবার তাদের কেউ কেউ বলে থাকে, সেখানে বাস্তবেই কোনো পূর্ণ গাউছ কুতুবের অস্তিত্ব আছে। সুতরাং আপনি আমাদেরকে ফাতওয়া দিন, আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন আর এ বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।

[জবাবের সূচনা]

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. জবাবে বলেন,

সমস্ত প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রবের জন্য, যে দীন নিয়ে আল্লাহ তাঁর রাসূলগণকে পাঠিয়েছেন এবং তাঁর কিতাবসমূহ অবতীর্ণ করেছেন তা হলো: একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা, যার কোনো শরীক নেই। আর তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা এবং তাঁর ওপর ভরসা করা। আর তার কাছে কল্যাণ লাভের জন্য এবং অনিষ্ট দূরীকরণের জন্য দো‘আ করা। যেমনিভাবে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿تَنزِيلُ ٱلۡكِتَٰبِ مِنَ ٱللَّهِ ٱلۡعَزِيزِ ٱلۡحَكِيمِ ١ إِنَّآ أَنزَلۡنَآ إِلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ بِٱلۡحَقِّ فَٱعۡبُدِ ٱللَّهَ مُخۡلِصٗا لَّهُ ٱلدِّينَ ٢ أَلَا لِلَّهِ ٱلدِّينُ ٱلۡخَالِصُۚ وَٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواْ مِن دُونِهِۦٓ أَوۡلِيَآءَ مَا نَعۡبُدُهُمۡ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَآ إِلَى ٱللَّهِ زُلۡفَىٰٓ إِنَّ ٱللَّهَ يَحۡكُمُ بَيۡنَهُمۡ فِي مَا هُمۡ فِيهِ يَخۡتَلِفُونَۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي مَنۡ هُوَ كَٰذِبٞ كَفَّارٞ ٣﴾ [الزمر: ١، ٣]

“এ কিতাব পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময় আল্লাহর কাছ থেকে নাযিল হওয়া। নিশ্চয় আমরা আপনার কাছে এ কিতাব সত্যসহ নাযিল করেছি। কাজেই আল্লাহর ইবাদাত করুন তাঁর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে। জেনে রাখুন, অবিমিশ্র আনুগত্য আল্লাহরই প্রাপ্য। আর যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে তারা বলে, আমরা তো এদের ইবাদত এ জন্যে করি যে, এরা আমাদেরকে পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর সান্নিধ্যে এনে দেবে।হ তারা যে বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ করছে নিশ্চয় আল্লাহ তাদের মধ্যে সে ব্যাপারে ফয়সালা করে দেবেন।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ১-৩]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿وَأَنَّ ٱلۡمَسَٰجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدۡعُواْ مَعَ ٱللَّهِ أَحَدٗا ١٨﴾ [الجن: ١٨]

“আর নিশ্চয় মসজিদসমূহ আল্লাহরই জন্য। কাজেই আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাউকে ডেকো না। [সূরা আল-জিন্ন, আয়াত: ১৮]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿وَأَقِيمُواْ وُجُوهَكُمۡ عِندَ كُلِّ مَسۡجِدٖ وَٱدۡعُوهُ مُخۡلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَۚ كَمَا بَدَأَكُمۡ تَعُودُونَ ٢٩ ﴾ [الاعراف: ٢٩]

“আর আমার রব নির্দেশ দিয়েছেন ন্যায়বিচারের। আর তোমরা প্রত্যেক সাজদাহ বা ইবাদতে তোমাদের লক্ষ্য একমাত্র আল্লাহকেই নির্ধারণ কর এবং তাঁরই আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁকে ডাক। [সূরা আল আ‘রাফ, আয়াত: ২৯]

আর আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿قُلِ ٱدۡعُواْ ٱلَّذِينَ زَعَمۡتُم مِّن دُونِهِۦ فَلَا يَمۡلِكُونَ كَشۡفَ ٱلضُّرِّ عَنكُمۡ وَلَا تَحۡوِيلًا ٥٦ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ يَدۡعُونَ يَبۡتَغُونَ إِلَىٰ رَبِّهِمُ ٱلۡوَسِيلَةَ أَيُّهُمۡ أَقۡرَبُ وَيَرۡجُونَ رَحۡمَتَهُۥ وَيَخَافُونَ عَذَابَهُۥٓۚ إِنَّ عَذَابَ رَبِّكَ كَانَ مَحۡذُورٗا ٥٧﴾ [الاسراء: ٥٦، ٥٧]

“বলুন, তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে ইলাহ মনে কর তাদেরকে ডাক, অতঃপর দেখবে যে, তোমাদের দুঃখ-দৈন্য দূর করার বা পরিবর্তন করার শক্তি তাদের নেই ,তারা যাদেরকে ডাকে তারাই তো তাদের রবের নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে যে, তাদের মধ্যে কে কত নিকটতর হতে পারে, আর তারা তাঁর দয়া প্রত্যাশা করে এবং তাঁর শাস্তিকে ভয় করে। নিশ্চয় আপনার রবের শাস্তি ভয়াবহ।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৫৬-৫৭]

সালফে সালেহীনদের একদল বলেন, কিছু সম্প্রদায় মসীহ, উযাইর ও ফিরিশতাদেরকে ডাকতো। আল্লাহ তা‘আলা বলেন ঐ সব যাদেরকে তোমরা ডেকে থাক তারা তো আমারই বান্দা, যেমনি তোমরা আমার বান্দা। তারা আমার অনুগ্রহ চায়, যেরূপে তোমরা আমার রহমত কামনা কর। তারা আমার শাস্তিকে ভয় পায় যেমনিভাবে তোমরা আমার আযাবকে ভয় কর। আর তারা আমার নৈকট্য চায় যেভাবে তোমরা আমার নৈকট্য চাও। অতঃপর যখন যারা নবীগণ ও ফেরেশ্তাগণের কাছে প্রার্থনা করে তাদের অবস্থা এমন, তাহলে অন্যদের অবস্থা কেমন হবে?

অনুরূপভাবে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَفَحَسِبَ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ أَن يَتَّخِذُواْ عِبَادِي مِن دُونِيٓ أَوۡلِيَآءَۚ إِنَّآ أَعۡتَدۡنَا جَهَنَّمَ لِلۡكَٰفِرِينَ نُزُلٗا ١٠٢﴾ [الكهف: ١٠٢]

“যারা কুফুরী করেছে তারা কি মনে করেছে যে, তারা আমার পরিবর্তে আমার বান্দাদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করবে? আমরা তো কাফেরদের আপ্যায়নের জন্য প্রস্তুত রেখেছি জাহান্নাম। [সূরা আল-কাহাফ, আয়াত: ১০২]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿قُلِ ٱدۡعُواْ ٱلَّذِينَ زَعَمۡتُم مِّن دُونِ ٱللَّهِ لَا يَمۡلِكُونَ مِثۡقَالَ ذَرَّةٖ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَلَا فِي ٱلۡأَرۡضِ وَمَا لَهُمۡ فِيهِمَا مِن شِرۡكٖ وَمَا لَهُۥ مِنۡهُم مِّن ظَهِيرٖ ٢٢ وَلَا تَنفَعُ ٱلشَّفَٰعَةُ عِندَهُۥٓ إِلَّا لِمَنۡ أَذِنَ لَهُۥۚ ٢٣﴾ [سبا: ٢٢، ٢٣]

“বলুন, তোমরা আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে ইলাহ মনে করতে তাদেরকে ডাক। তারা আসমানসমূহে অণু পরিমাণ কিছুরও মালিক নয়, যমীনেও নয়। আর এ দুটিতে তাদের কোনো অংশও নেই এবং তাদের মধ্যে কেউ তাঁর সহায়কও নয়। আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন, সে ছাড়া তাঁর কাছে কারো সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। অবশেষে যখন তাদের অন্তর থেকে ভয় বিদূরিত হয়, তখন তারা পরস্পরের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করে, তোমাদের রব কী বললেন? তার উত্তরে তারা বলে, ‘যা সত্য তিনি তা-ই বলেছেন।’ আর তিনি সমুচ্চ, মহান।” [সূরা সাবা, আয়াত: ২২-২৩]

সুতরাং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বর্ণনা করেন যে, আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টি জীব হতে ফিরিশতা, মানুষ ও অন্য যাদের ডাকা হয়, নিশ্চয় তারা বিন্দু পরিমাণ তার রাজত্বের মালিক নয়। আর তার রাজত্বে কোনো শরীকও নেই; বরং তিনি পবিত্র সত্ত্বা আর তারই রাজত্ব। তার জন্যই সকল প্রশংসা এবং তিনি সকল বিষয়ে ক্ষমতাবান। আর নিশ্চয় তার কোনো সাহায্যকারী নেই, যে তাকে সাহায্য করবে, যেরূপ রাজার বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতাকারী থাকে। আর তার নিকট শাফা‘আতকারী তো একমাত্র তিনিই হবেন, যার প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট। ফলে এর মাধ্যমে শির্কের সকল দিককে নিষেধ করা হয়েছে।

কেননা আল্লাহ ব্যতীত যাদের ডাকা হয় তারা হয়ত কোনো কিছুর মালিক হবেন অথবা মালিক হবেন না, আর যদি মালিক না হোন তখন তারা হয়তো (সে জিনিসে) অংশীদার হবেন অথবা অংশীদার হবেন না, আর যদি অংশীদার না হোন তবে হয়তো সাহায্যকারী হবেন অথবা হবেন (সে জিনিসের) যাচ্ঞাকারী-প্রার্থনাকারী (সুপারিশকারী)।

উপরোক্ত প্রথম তিন প্রকার অর্থাৎ আল্লাহর সাথে কোনো কিছুর মালিক হওয়া, তাঁর অংশীদার হওয়া ও তাঁর সাহায্যকারী হওয়া নিষিদ্ধ। আর চতুর্থটি অর্থাৎ সুপারিশ তাঁর অনুমতি ব্যতীত হবে না। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿مَن ذَا ٱلَّذِي يَشۡفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦۚ﴾ [البقرة: ٢٥٥]

“কে সে, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে?” [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৫৫]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿وَكَم مِّن مَّلَكٖ فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ لَا تُغۡنِي شَفَٰعَتُهُمۡ شَيۡ‍ًٔا إِلَّا مِنۢ بَعۡدِ أَن يَأۡذَنَ ٱللَّهُ لِمَن يَشَآءُ وَيَرۡضَىٰٓ ٢٦﴾ [النجم: ٢٦]

“আর আসমানসমূহে বহু ফিরিশ্তা রয়েছে; তাদের সুপারিশ কিছুমাত্র ফলপ্রসূ হবে না, তবে আল্লাহর অনুমতির পর; যার জন্য তিনি ইচ্ছে করেন ও যার প্রতি তিনি সন্তুষ্ট।” [সূরা আন-নাজম, আয়াত: ২৬]

অনুরূপভাবে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَمِ ٱتَّخَذُواْ مِن دُونِ ٱللَّهِ شُفَعَآءَۚ قُلۡ أَوَلَوۡ كَانُواْ لَا يَمۡلِكُونَ شَيۡ‍ٔٗا وَلَا يَعۡقِلُونَ ٤٣ قُل لِّلَّهِ ٱلشَّفَٰعَةُ جَمِيعٗاۖ لَّهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ ثُمَّ إِلَيۡهِ تُرۡجَعُونَ ٤٤﴾ [الزمر: ٤٣، ٤٤]

“তবে কি তারা আল্লাহ ছাড়া অন্যকে সুপারিশকারী ধরেছে? বলুন, তারা কোনো কিছুর মালিক না হলেও এবং তারা না বুঝলেও বলুন, সকল সুপারিশ আল্লাহরই মালিকানাধীন, আসমানসমূহ ও যমীনের মালিকানা তাঁরই।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৪৩-৪৪]

আল্লাহ আরো বলেন,

﴿ٱللَّهُ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ وَمَا بَيۡنَهُمَا فِي سِتَّةِ أَيَّامٖ ثُمَّ ٱسۡتَوَىٰ عَلَى ٱلۡعَرۡشِۖ مَا لَكُم مِّن دُونِهِۦ مِن وَلِيّٖ وَلَا شَفِيعٍۚ أَفَلَا تَتَذَكَّرُونَ ٤﴾ [السجدة: ٤]

“আল্লাহ, যিনি আসমানসমূহ, যমীন ও উভয়ের অন্তর্বর্তী সব কিছু সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে। তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠেছেন। তিনি ছাড়া তোমাদের কোনো অভিভাবক নেই এবং সুপারিশকারীও নেই; তবুও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?” [সূরা আস-সাজদাহ, আয়াত: ৪]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَأَنذِرۡ بِهِ ٱلَّذِينَ يَخَافُونَ أَن يُحۡشَرُوٓاْ إِلَىٰ رَبِّهِمۡ لَيۡسَ لَهُم مِّن دُونِهِۦ وَلِيّٞ وَلَا شَفِيعٞ لَّعَلَّهُمۡ يَتَّقُونَ ٥١﴾ [الانعام: ٥١]

“আর আপনি এর দ্বারা তাদেরকে সতর্ক করুন, যারা ভয় করে যে, তাদেরকে তাদের রব-এর কাছে সমবেত করা হবে এমন অবস্থায় যে, তিনি ছাড়া তাদের জন্য থাকবে না কোনো অভিভাবক বা সুপারিশকারী, যাতে তারা তাকওয়ার অধিকারী হয়।”[সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৫১]

আল্লাহ আরো বলেন,

﴿مَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن يُؤۡتِيَهُ ٱللَّهُ ٱلۡكِتَٰبَ وَٱلۡحُكۡمَ وَٱلنُّبُوَّةَ ثُمَّ يَقُولَ لِلنَّاسِ كُونُواْ عِبَادٗا لِّي مِن دُونِ ٱللَّهِ وَلَٰكِن كُونُواْ رَبَّٰنِيِّ‍ۧنَ بِمَا كُنتُمۡ تُعَلِّمُونَ ٱلۡكِتَٰبَ وَبِمَا كُنتُمۡ تَدۡرُسُونَ ٧٩ وَلَا يَأۡمُرَكُمۡ أَن تَتَّخِذُواْ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةَ وَٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ أَرۡبَابًاۗ أَيَأۡمُرُكُم بِٱلۡكُفۡرِ بَعۡدَ إِذۡ أَنتُم مُّسۡلِمُونَ ٨٠﴾ [ال عمران: ٧٩، ٨٠]

“কোনো ব্যক্তির জন্য সঙ্গত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হেকমত ও নবুওয়াত দান করার পর তিনি মানুষকে বলবেন, আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা আমার দাস হয়ে যাও, বরং; তিনি বলবেন, তোমরা রব্বানী হয়ে যাও, যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দাও এবং যেহেতু তোমরা অধ্যয়ন কর , অনুরূপভাবে ফেরেশ্তাগণ ও নবীগণকে রবরূপে গ্রহণ করতে তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দেন না। তোমাদের মুসলিম হওয়ার পর তিনি কি তোমাদেরকে কুফুরীর নির্দেশ দেবেন?” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৭৯-৮০]

এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা যখন ফিরিশতাগণ, নবীগণকে রব হিসেবে গ্রহণ করা শির্ক ও কুফুরী বলে সাব্যস্ত করেছেন, তখন তাদের থেকে নিম্ন পর্যায়ের লোক পীর-মাশাইখদেরকে রব হিসেবে গ্রহণ করা কী হবে তা সহজেই অনুমেয়?