বিবরণ: কেউ কেউ কানে নানা সমস্যা অনুভব করে। ফলে তাদেরকে কখনও কখনও এমন ঔষধ দেওয়া হয়, যা কানে প্রয়োগ করা হয়। এক্ষণে, রামাযানের দিবসে সাওম পালনকারীর জন্য কানের এ জাতীয় ঔষধ ব্যবহারের হুকুম কি?
হুকুম: ওলামায়ে কেরাম এই মাসআলায় ২ ধরণের বক্তব্য পেশ করেছেন:
প্রথম মত: হানাফী, মালেকী এবং শাফে‘ঈদের বিশুদ্ধতর মতানুযায়ী, কানে তেল দিলে বা পানি দিলে সাওম ভেঙ্গে যাবে, তবে হাম্বলীদের মতানুযায়ী, তা যদি মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে, তাহলে সাওম ভঙ্গ হবে।
তাদের মতে, কানে যা প্রয়োগ করা হয়, তা যেহেতু কণ্ঠনালী বা মস্তিষ্কে যায়, সেহেতু তা সাওম ভঙ্গ করবে।
দ্বিতীয় মত: ইবন হাযমের মত ও শাফে‘ঈদের ভিন্ন আরেকটি মতানুযায়ী, কানে প্রয়োগকৃত ঔষধ সাওম ভঙ্গ করবে না। তাদের যুক্তি হচ্ছে, কানে প্রয়োগকৃত ঔষধ মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে না, তবে তা শিরা-উপশিরা ও লোমকূপের মাধ্যমে পৌঁছে।
মূলতঃ উভয় মতের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। কেননা কানে প্রয়োগকৃত ঔষধ পেটে প্রবেশ করে কিনা সেটিই এখানে মূল বিষয়। আর আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে যে, কান এবং পেট ও মস্তিষ্কের মধ্যে এমন কোনো নালা নেই, যেখান দিয়ে তরল পদার্থ প্রবেশ করতে পারে। তবে কানের পর্দায় ছিদ্র থাকলে সেটা ভিন্ন কথা।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই তথ্যানুযায়ী প্রত্যেকের মতামতের কারণ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে যে, কানের ড্রপ সাওম ভঙ্গ করে না।
তবে যদি কানের পর্দা না থাকে, তাহলে ‘ইউস্টেশন টিউব’ (Eustachian tube) নামক নালার মাধ্যমে গলবিলের সাথে কানের সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায় এবং এক্ষেত্রে কান নাকের মতো হয়ে যায়। অতএব, নাকের ড্রপ ব্যবহারের যে বক্তব্য গত হয়ে গেছে, এখানেও সেই একই বক্তব্য প্রযোজ্য হবে।