চাওয়া (আশা করা) হচ্ছে ঈমানের পুষ্পরেণু (মূল)। যেহেতু ঈমান ও চাওয়া যখন একত্রিত হয় তখন তা কল্যাণকর কাজের ফল দেয়।
আল্লাহর সম্পর্কে ভালোধারণা হলো তাঁর কাছে ধন্যা ধরা (অভাবগ্রস্ত) ও তাঁর কাছে নিরুপায় হওয়ার পুষ্পরেণু (মূল)। এ দু’টি যখন একত্রিত হয় তখন দো‘আ কবুলের ফল দেয়।
আল্লাহর ভয় তাঁর ভালোবাসার মূল। অতএব, যখন ভয় ও ভালোবাসা একত্রিত হয় তখন তা তাঁর আদেশ মান্য করা ও তাঁর নিষেধ থেকে বিরত থাকার ফলাফল দেয়।
ধৈর্যধারণ হলো ইয়াকীনের মূল। অতএব, ইয়াকীন ও ধৈর্য যখন একত্রিত হয় তখন তা দীনের ইমামত তথা নেতৃত্বের উত্তরাধিকারী করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿وَجَعَلۡنَا مِنۡهُمۡ أَئِمَّةٗ يَهۡدُونَ بِأَمۡرِنَا لَمَّا صَبَرُواْۖ وَكَانُواْ بَِٔايَٰتِنَا يُوقِنُونَ٢٤﴾ [السجدة: ٢٤]
“আর আমি তাদের মধ্য থেকে বহু নেতা করেছিলাম, তারা আমার আদেশানুযায়ী সৎপথ প্রদর্শন করত, যখন তারা ধৈর্যধারণ করেছিল। আর তারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখত।” [সূরা আস-সাজদাহ, আয়াত: ২৪]
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঠিক অনুসরণ হলো ইখলাসের মূল। যখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঠিক অনুসরণ ও ইখলাস একত্রিত হয় তখন তা আলম কবুল ও গ্রহণযোগ্য হয়।
আমল হলো ইলমের পরাগ। অতএব, ইলম ও আমল যখন একত্রিত হয় তখন তা সফলতা ও সৌভাগ্যের ফল দেয়। এ দু’টি একটির থেকে আলাদা হলে কোনো উপকারে আসে না।
সহিষ্ণুতা ইলমের পরাগ। এ দু’টি একত্রিত হলে দুনিয়া ও আখিরাতের নেতৃত্ব অর্জিত হয় এবং বিশ্বের জ্ঞান দ্বার উপকৃত হওয়া যায়; কিন্তু এ দু’টি একটির থেকে আলাদা হলে ব্যক্তি উপকার থেকে বঞ্চিত হয়।
দৃঢ়প্রত্যয় সূক্ষ্মদৃষ্টির পরাগ। এ দু’টি একত্রিত হলে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের অধিকারী হয় এবং তার হিম্মত সর্বত্রে উঁচু থাকে। অতএব, পূর্ণতার অভাব হয়ত দূরদৃষ্টি বা দৃঢ়প্রত্যয়ের অভাবে হয়ে থাকে।
ভালো নিয়াত সুস্থ বিবেকের মূল। যখন একটি হারিয়ে যাবে তখন অন্যটিও হারিয়ে যাবে। আর যখন উভয়টি একত্রিত হবে তখন সব ধরণের কল্যাণের ফল দিবে।
সুস্থ মতামত বীরত্বের পরাগ। যখন উভয়টি একত্রিত হয় তখন ব্যক্তি বিজয় ও সফলতা লাভ করে। এর একটি হারিয়ে গেলে পরাজয়, অপমান ও ভীরুতা পেয়ে বসে। বীরত্ব ব্যতীত মতামত হলো ভীরুতা ও অক্ষমতা। আবার সঠিক মতামত ব্যতীত বীরত্বের ফলাফল হলো পরাজয় ও ধ্বংস।
ধৈর্য দূরদৃষ্টির পরাগ। যখন উভয়টি একত্রিত হয় তখন কল্যাণ সাধিত হয়।
হাসান বসরী রহ. বলেছেন, তুমি যদি কাউকে ধৈর্য ব্যতীত দূরদর্শী দেখ অথবা দূরদর্শিতা ব্যতীত ধৈর্যশীল দেখ তাহলে তাকে অকৃতকার্য দেখবে। আর যদি কাউকে ধৈর্যশীল দূরদর্শী দেখ তাহলে তাকে সফল দেখতে পাবে।
নসিহত হলো বিবেকের মূল। যখন নসীহত শক্তিশালী হবে তখন তার শক্তিশালী ও আলোকিত হবে।
আল্লাহর স্মরণ ও তাঁর চিন্তা-ভাবনা আখিরাতের সফলতার মূল। দু’টি একত্রিত হলে দুনিয়া বিমূখীতা ও আখিরাতের প্রতি আগ্রহ জন্মায়।
আল্লাহর সাথে মিলিত হওয়ার প্রস্তুতির সরঞ্জামের মূল হলো দুনিয়াতে দীর্ঘদিন না থাকার আশা করা। দু’টি জিনিস একত্রিত হলেই তাতে কল্যাণ একত্রিত হয়। আর এ দু’টি বিষয় আলাদা হলে সব ধরণের অকল্যাণ দেখা দেয়।
উঁচু হিম্মতের মূল হলো সহীহ নিয়াত। এ দু’টি বিষয় একত্রিত হলে বান্দা তার কাঙ্খিত ফলাফল প্রাপ্ত হয়।