আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল কয়েক প্রকার।
প্রথমত: বান্দার প্রয়োজন মিটানো ও দুনিয়ার অংশ পাওয়ার জন্য আল্লাহর ওপর তাওয়াক্বুল করা অথবা অপছন্দনীয় জিনিস ও দুনিয়াবী বালা-মুসিবত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করা।
দ্বিতীয়ত: আল্লাহ যেসব জিনিস পছন্দ করেন, যেমন ঈমান, ইয়াকীন, জিহাদ ও আল্লাহর পথে দাওয়াত ইত্যাদি অর্জনে তাওয়াক্বুল করা।
এ দু’প্রকারের তাওয়াক্বুলের মধ্যকার পার্থক্য আল্লাহ ব্যতীত কেউ গননা করতে পারবে না। কেননা বান্দা যখন যথাযথভাবে দ্বিতীয় প্রকারের তাওয়াক্বুল করবে তখন তার প্রথম প্রকারের সব প্রয়োজন পুরোপুরিভাবে মিটে যাবে। আর যদি বান্দা প্রথম প্রকারের তাওয়াক্বুল করবে তখন তার জন্য যদিও দ্বিতীয় প্রকারের তাওয়াক্বুল যথেষ্ট হবে; তবে আল্লাহ যেসব কাজ পছন্দ করেন ও যে কাজে তিনি সন্তুষ্ট হন ইত্যাদি কাজে তাওয়াক্বুলকারীর যে মর্যাদা রয়েছে সে মর্যাদা প্রাপ্ত হবে না।
আল্লাহর ওপর সর্বোচ্চ তাওয়াক্বুল হলো হিদায়াত প্রাপ্তির জন্য আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করা, তাওহীদকে শির্ক ও বিদ‘আত মুক্ত করা, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুসরণ করা ও বাতিলের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ইত্যাদির জন্য একমাত্র আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করা। এগুলো রাসূলগণ ও তাদের একনিষ্ঠ অনুসারীগণের তাওয়াক্বুল।
তাওয়াক্বুলের অন্তর্নিহিত রহস্য ও হাকীকত হলো, একমাত্র আল্লাহর ওপর অন্তরে আস্থা রাখা এবং এ তাওয়াক্বুলের সাথে দুনিয়াবী কোনো উপায়-উপকরণের সাহায্য নেওয়া থেকে বিরত থাকা ও অন্য কিছুর ওপর নির্ভরশীল না হওয়া। যেমন, ব্যক্তির এ কথা কোনো উপকারে আসবে না যদি সে এভাবে বলে, ‘আমি আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করলাম, সাথে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হলাম, তার ওপর আস্থা রাখলাম ও তার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করলাম। সুতরাং জবানের তাওয়াক্কুল আর অন্তরের তাওয়াক্কুল দু’টি দুই জিনিস। যেমন, অন্তরে বারবার গুনাহ করার ইচ্ছা পোষণ করে জবানের তাওবা এবং অন্তরের তাওবা- যদিও জবানে উচ্চারণ না করে দু’টি দুই জিনিস। যেমন বান্দার কথা, আমি আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করলাম সাথে অন্যের ওপর অন্তরে আস্থা রাখলাম, একথা যেমন কোনো কাজে আসবে না, তেমনিভাবে বান্দার কথা আমি আল্লাহর কাছে তাওবা করলাম আর সে অন্তরে বারবার গুনাহে লিপ্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে তাহলে তার এ তাওবা কোনো কাজে আসবে না।