তোমার অন্তরকে সব ধরনের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করে তোমাকে যে কাজের আদেশ করা হয়েছে সে কাজে মনোনিবেশ করো। যে ব্যাপারে তোমাকে গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে (রিযিকের ব্যাপারে) সে ব্যাপারে চিন্তা করো না; কেননা রিযিক ও হায়াত দু’টি পরস্পর একত্রে অবস্থানকারী। তোমার হায়াত যতক্ষণ বাকি থাকবে ততক্ষণ তোমার রিযিক আসতেই থাকবে। আল্লাহর হিকমতের কারণে রিযিকের কোনো পথ বন্ধ হলে তিনি তাঁর রহমতে তোমার জন্য এরচেয়েও উপকারী উত্তম পথ খুলে দিবেন।
একটি ভ্রূণের কথা চিন্তা করুন, সে মাতৃগর্ভে থাকাবস্থায় মায়ের নাভীর সাহায্যে একটিমাত্র পথে খাদ্য (রক্ত) আসত। যখন সে মাতৃগর্ভ থেকে ভুমিষ্ট হলো তখন তার খাদ্যের সে পথটি বন্ধ হয়ে গেলে আল্লাহ তার জন্য খাদ্যের দু’টি রাস্তা খুলে দিলেন। তার জন্য তৃপ্তিদায়ক খাঁটি দুধ প্রবাহিত করলেন যা পূর্বের চেয়ে আরো অধিক উত্তম ও সুস্বাদু। আবার যখন তার দুগ্ধপানের সময় শেষ হয়ে যায়, দুধ পান ছাড়ানোর মাধ্যমে সে পথ দু’টি বন্ধ হয়ে যায় তখন আল্লাহ তার জন্য পূর্বের চেয়ে উত্তম চারটি পথ খুলে দেন। দু’টি খাদ্য ও দু’টি পানীয়। পশু-পাখি ও উদ্ভিদ থেকে দু’টি খাদ্যের এবং পানি ও দুধ থেকে দু’টি পানীয়, তাছাড়া এ দু’প্রকারের অনুরূপ আরও কিছু উপকারী ও সুস্বাদু বস্তু তার জন্য তিনি খুলে দেন। সে যখন মারা যায় তখন তার এ চারটি পথ বন্ধ হয়ে যায়; কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা তার জন্য –জান্নাতী হলে- আটটি পথ খুলে দেন, সেগুলো হলো জান্নাতের আটটি দরজা, সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে।
রাব্বুল ‘আলামীন এমনই। তিনি তাঁর মুমিন বান্দাকে দুনিয়াতে উত্তম ও অধিক উপকারী জিনিস প্রদান না করে কোনো কিছু থেকে বঞ্চিত করেন না। এটি অমুসলিমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কেননা তিনি তাদেরকে সর্বনিম্ন নিকৃষ্ট অংশ থেকেও বঞ্চিত করেন, আর সে তাঁর ওপর তাতে সন্তুষ্টও থাকে না; সে চায় যেন তাকে উৎকৃষ্ট ও মূল্যবান জিনিস প্রদান করা হোক। বান্দা নিজের ভালো-মন্দ সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং তাঁর রবের দানশীলতা, হিকমত ও দয়া সম্পর্কে না জানার কারণে তাকে যেসব জিনিস থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে এবং যা তার জন্য গচ্ছিত রাখা হয়েছে সেগুলোর পার্থক্য বুঝতে পারে না।