দুনিয়া হলো, পতিতা নারীর মতো যে একজন স্বামীর সাথে স্থির থাকে না; বরং একাধিক স্বামী তালাশ করে, তাদের সাথে আরো বেশি ভালো থাকার আশায়। ফলে সে বহুচারিনী হওয়া ব্যতীত সন্তুষ্ট থাকে না।

কবি দুনিয়ার উপমা দিয়ে বলেছেন,

আমি দুনিয়ার সৌন্দর্য ও তার কাজের মাঝে পার্থক্য করেছি। কেননা সৌন্দর্য অসৌন্দর্যের সাথে পূর্ণ হয় না।

দুনিয়া আমাদের সাথে শপথ করেছিল যে, সে কখনও আমাদের অঙ্গিকারের খিয়ানত করবে না।। কিন্তু আমাদের সাথে তার শপথ এমনই যেন সে কখনই তার ওয়াদা পূরণ করবে না।

দুনিয়ার পিছনে ঘোরা হলো হিংস্র জানোয়ারের[1] চরণভূমিতে বিচরণ করা, এতে সাঁতার কাটা মানে কুমিরের পুকুরে সাঁতার কাটা, দুনিয়ার দ্বারা আনন্দিত হওয়া মানে নিশ্চিত দুশ্চিন্তায় পতিত হওয়া, এর ব্যথা-বেদনাগুলো এর স্বাদ থেকেই সৃষ্টি হয়, এর দুঃখ-কষ্টগুলো এর আনন্দ থেকে জন্ম নেয়।

আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্তরা যখন দুনিয়ার জীবনের সঠিক মূল্য ও এর ক্ষণস্থায়িত্বতা বুঝতে সক্ষম হলো তখন তারা পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের জন্য তাদের প্রবৃত্তিকে নিঃশেষ করে দিল। যখন তারা গাফেলতির নিদ্রা থেকে জেগে উঠতে সক্ষম হলো তখন বেকার অবস্থায় শত্রু তাদের থেকে যেটুকু লুটে কেড়ে নিয়েছিল অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সাথে তারা সেগুলো পুনরুদ্ধার করে নিল। যখনই তাদের চলার পথ দীর্ঘ মনে হতে লাগতো তখনই তারা উদ্দিষ্ট গন্তব্যের সঠিক মূল্যমানের কথা স্মরণ করতো ফলে দূরবর্তী সবকিছু তাদের কাছে নিকটবর্তী মনে হতো। আবার যখন দুনিয়ার জীবন তাদেরকে তেতো করে ফেলতো তখনই তাদের কাছে মধুময় হয়ে দেখা দিত পরকালের স্মরণ; যার সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿هَٰذَا يَوۡمُكُمُ ٱلَّذِي كُنتُمۡ تُوعَدُونَ١٠٣﴾ [الانبياء: ١٠٣]

“এটাই তোমাদের সেই দিন, যার ওয়াদা তোমাদেরকে দেওয়া হয়েছিল।” [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ১০৩]

কবি বলেছেন, এমন বহু কাফেলা রয়েছে যারা সফর করতে শুরু করেছে, আর রাত তার আধাঁর বিছিয়ে দিয়েছে ধুলায় ধূসরিত অবস্থায়, ওদিকে প্রভাত দরজায় দণ্ডায়মান।

>
[1] (مَسْبَعة) হলো যেখানে অনেক হিংস্র জানোয়ার থাকে। দেখুন, লিসানুল আরব, মাদ্দাহ (سبع)।