‘শুরূক্ব’ অর্থ সূর্য উদিত হওয়া। ‘ইশরাক্ব’ অর্থ চমকিত হওয়া। ‘যোহা’ অর্থ সূর্য গরম হওয়া। এই ছালাত সূর্যোদয়ের পরপরই প্রথম প্রহরের শুরুতে পড়লে একে ‘ছালাতুল ইশরাক্ব’ বলা হয় এবং কিছু পরে দ্বিপ্রহরের পূর্বে পড়লে তাকে ‘ছালাতুয যোহা’ বা চাশতের ছালাত বলা হয়। এই ছালাত বাড়ীতে পড়া ‘মুস্তাহাব’। এটি সর্বদা পড়া এবং আবশ্যিক গণ্য করা ঠিক নয়। কেননা আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) কখনও পড়তেন, কখনো ছাড়তেন।[1]
ফযীলত : আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ফজরের ছালাত জামা‘আতে পড়ে, অতঃপর সূর্য ওঠা পর্যন্ত আল্লাহর যিকরে বসে থাকে, অতঃপর দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করে, তার জন্য পূর্ণ একটি হজ্জ ও ওমরাহর নেকী হয়।[2] ইমাম নববী বলেন, ‘ইবনু ওমর (রাঃ) ছালাতুয যোহাকে বিদ‘আত বলেছেন’ তার অর্থ হ’ল, এটি নিয়মিত মসজিদে পড়া বিদ‘আত।[3] বুরাইদা আসলামী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘মানুষের শরীরে ৩৬০টি জোড় রয়েছে। অতএব মানুষের কর্তব্য হ’ল প্রত্যেক জোড়ের জন্য একটি করে ছাদাক্বা করা। ছাহাবীগণ বললেন, কার শক্তি আছে এই কাজ করার, হে আল্লাহর নবী? তিনি বললেন, চাশতের দু’রাক‘আত ছালাতই এজন্য যথেষ্ট।[4] চাশতের ছালাতের রাক‘আত সংখ্যা ২, ৪, ৮, ১২ পর্যন্ত পাওয়া যায়। মক্কা বিজয়ের দিন দুপুরের পূর্বে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) হযরত আলী (রাঃ)-এর বোন উম্মে হানীর গৃহে খুবই সংক্ষিপ্তভাবে ৮ রাক‘আত পড়েছিলেন।[5] প্রতি দু’রাক‘আত অন্তর সালাম ফিরাতে হয়।
উল্লেখ্য যে, দুপুরের পূর্বের এই ছালাতকেই ‘ছালাতুল আউওয়াবীন’ বলে।[6] মাগরিবের পরের ছয়, বিশ বা যে কোন পরিমাণ নফল ছালাতকে আউওয়াবীন বলার হাদীছগুলি যঈফ। [7]
[2] . তিরমিযী হা/৫৮৬, মিশকাত হা/৯৭১ ‘ছালাতের পরে যিকর’ অনুচ্ছেদ-১৮।
[3] . মির‘আত ৪/৩৪৬।
[4] . আবুদাঊদ, মুসলিম, মিশকাত হা/১৩১৫, ১৩১১ ‘ছালাতুয যোহা’ অনুচ্ছেদ-৩৮।
[5] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১৩০৯ ‘ছালাতুয যোহা’ অনুচ্ছেদ-৩৮।
[6] . মুসলিম, মিশকাত হা/১৩১২; মির‘আত ৪/৩৫১।
[7] . তিরমিযী, মিশকাত ১১৭৩-৭৪, সিলসিলা যঈফাহ হা/৪৬৯, ৪৬৭, ৪৬১৭।