আল্লাহ তা‘আলার নি‘আমত অস্বীকার করা

 আল্লাহ তা‘আলার নি‘আমতকে অন্যের দিকে সম্বন্ধ করা। যেমন আল্লাহর বাণী:

(يَعْرِفُونَ نِعْمَتَ اللَّهِ ثُمَّ يُنْكِرُونَهَا) [النحل : 83]

তারা আল্লাহর নি‘আমত চিনে, তারপরও তারা তা অস্বীকার করে (সূরা নাহাল ১৬:৮৩)।

ব্যাখ্যা: আল্লাহ ছাড়া কারো দিকে আল্লাহ তা‘আলার নেআ‘মতকে সম্বন্ধ করা শিরক ও কুফরী এবং এটা জাহিলী কর্মের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা জাহিলদের সম্পর্কে বলেন,

(يَعْرِفُونَ نِعْمَتَ اللَّهِ ثُمَّ يُنْكِرُونَهَا وَأَكْثَرُهُمُ الْكَافِرُونَ) [النحل:83]

তারা আল্লাহর নি‘আমত চিনে, তারপরও তারা তা অস্বীকার করে, আর তাদের অধিকাংশই কাফির (সূরা নাহাল ১৬:৮৩)।

বলা হয়, আয়াতের অর্থ হলো জাহিলরা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তিনি যে বার্তাবাহক তা জানে। অতঃপর অবাধ্যতা ও অহংকার বশতঃ তারা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অস্বীকার করে। অথচ তারা জানে এবং স্বীকার করে তিনি আল্লাহর রসূল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

قَدْ نَعْلَمُ إِنَّهُ لَيَحْزُنُكَ الَّذِي يَقُولُونَ فَإِنَّهُمْ لا يُكَذِّبُونَكَ وَلَكِنَّ الظَّالِمِينَ بِآيَاتِ اللَّهِ يَجْحَدُونَ [الأنعام:33]

আমি অবশ্যই জানি যে, তারা যা বলে তা তোমাকে দুঃখ দেয়। কিন্তু তারা তো তোমাকে অ¯‌কারকরে না, বরং যালিমরা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে (সূরা আন‘আম ৬:৩৩)।

রসূল প্রেরণ আল্লাহ তা‘আলার নি‘আমত তারা তা জানে। তাই মানব জাতির বৃহৎ নি‘আমত হলো রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। অতঃপর তারা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অস্বীকার করে এবং তার বিরোধিতায় লিপ্ত হয়। আয়াতের তাফসিরে এ কথাটিই উল্লেখ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় কথা: জাহিলরা তাদের উপর আল্লাহ তা‘আলার নি‘আমতকে অস্বীকার করে, যা আল্লাহ তা‘আলা সূরা নাহলে উল্লেখ করেছেন। অতঃপর তারা নি‘আমতকে অস্বীকার করে অর্থাৎ গাইরুল্লাহর দিকে নি‘আমতকে সম্পৃক্ত করে। যোগ্যতা, শক্তি, প্রচেষ্টা ও কর্মের মাধ্যমে নি‘আমত অর্জিত হয় বলে তারা মনে করে। যেমন ক্বারূন বলেছিল। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(إِنَّمَا أُوتِيتُهُ عَلَى عِلْمٍ عِنْدِي) [القصص: 78]

সে বলল, আমি তো এ ধনভান্ডার প্রাপ্ত হয়েছি আমার কাছে থাকা জ্ঞান দ্বারা (সূরা ক্বাছাছ ২৮:৭৮)।

অর্থাৎ যোগ্যতা, দক্ষতা ও কর্মের মাধ্যমে আমি তা লাভ করেছি। সুতরাং সে আল্লাহ তা‘আলা প্রদত্ত নি‘আমতকে অস্বীকার করে। আর কারূন ছাড়াও অনেকে এরূপ (অস্বীকার করে)। তাই আল্লাহ তা‘আলা উল্লেখ করেন যে, মানুষকে যখন তিনি নি‘আমত দান করেন তখন সে বলে, এটা আমার। অর্থাৎ আমি এ নি‘আমতের উপযুক্ত এবং এর অধিকার রাখি। এটা আল্লাহ তা‘আলার জন্য নয়। যে কল্যাণ সে অর্জন করে তা নিজের দিকে সম্পৃক্ত করে। আর স্বীকার করে না, এ কল্যাণ আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতের কারণে অর্জন হয়েছে।