ফেরআউনের সম্পদায় রবকে অস্তিত্বহীন মনে করতো।

........................................

ব্যাখ্যা: (التعطيل) আত-তা‘তিল তথা শূন্যকরণ এর প্রকৃত অর্থ হলো কোন জিনিসকে মুক্ত করা। যেমন বলা হয়, عطل المكان(আত্তালাল মাকান) অর্থাৎ সে জায়গাটি খালি করেছে। আরোও বলা হয়, امرأة عاطل (ইমরাতুন ‘আতিল) তথা মুক্ত মহিলা অর্থাৎ গয়না মুক্ত মহিলা। সুতরাং (التعطيل) শূন্য করণ অর্থ হলো কোন কিছু হতে কোন জিনিস বিলুপ্ত করা। আর এখানে উদ্দেশ্য হলো স্রষ্টার অস্তিত্বকে বাতিল জ্ঞান করা। এ জগতের স্রষ্টার অস্তিত্বকে অস্বীকার করা। যেমন জাহিলরা বলে, এ জগতকে কেবল প্রকৃতির ফলাফল হিসাবে পাওয়া যায়। আর আল্লাহর অস্তিত্বকে অস্বীকারকারী নাটেরগুরু ফেরআউন বলতো,

(يَا أَيُّهَا الْمَلَأُ مَا عَلِمْتُ لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرِي)[القصص: 38]

হে পরিষদবর্গ, আমি ছাড়া তোমাদের কোন ইলাহ আছে বলে আমি জানি না (সূরা ক্বাছ্বাছ ২৮:৩৮)।

আর এটি অহংকার ও ধৃষ্টতার অন্তর্ভুক্ত। অন্য আয়াতে আছে, সে বলতো,

(يَا هَامَانُ ابْنِ لِي صَرْحاً لَعَلِّي أَبْلُغُ الْأَسْبَابَ أَسْبَابَ السَّمَاوَاتِ فَأَطَّلِعَ إِلَى إِلَهِ مُوسَى وَإِنِّي لَأَظُنُّهُ كَاذِباً)

(ফের‘আউন বলল), ‘হে হামান, আমার জন্য একটি উঁচু ইমারত বানাও যাতে আমি অবলম্বন পাই। আসমানে আরোহণের অবলম্বন, যাতে আমি মূসার ইলাহকে দেখতে পাই, আর আমি কেবল তাকে মিথ্যাবাদী মনে করি।’ আর এভাবে ফের‘আউনের কাছে তার মন্দ কাজ শোভিত করে দেয়া হয়েছিল এবং তাকে বাঁধা দেয়া হয়েছিল সৎপথ থেকে। আর ফের‘আউনের ষড়যন্ত্র কেবল ব্যর্থই হয়েছিল (সূরা মু‘মিন ৪০: ৩৬,৩৭)।

(فَأَوْقِدْ لِي يَا هَامَانُ عَلَى الطِّينِ فَاجْعَلْ لِي صَرْحاً لَعَلِّي أَطَّلِعُ إِلَى إِلَهِ مُوسَى وَإِنِّي لَأَظُنُّهُ مِن الْكَاذِبِينَ) [القصص: 38]

অতএব হে হামান, আমার জন্য তুমি ইট পোড়াও, তারপর আমার জন্য একটি প্রাসাদ তৈরী কর। যাতে আমি মূসার ইলাহকে দেখতে পাই। আর নিশ্চয় আমি মনে করি সে মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত (সূরা ক্বাছ্বাছ ২৮:৩৮)।

এটাই হলো অস্তিত্বহীনতার কথা যেটাকে স্বভাব ও বিবেক-বুদ্ধি মিথ্যা বলে প্রমাণ করে। কেননা স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টির অস্তিত্ব সম্ভব নয়। কর্তা ছাড়া কর্ম কখনোই সংঘটিত হয় না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(أَمْ خُلِقُوا مِنْ غَيْرِ شَيْءٍ أَمْ هُمُ الْخَالِقُونَ أَمْ خَلَقُوا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بَلْ لا يُوقِنُونَ) [الطور: 35،36]

তারা কি স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে, না তারাই স্রষ্টা? তারা কি আসমান ও যমিন সৃষ্টি করেছে? বরং তারা দৃঢ় বিশ্বাস করে না (সূরা তুর ৫২:৩৫,৩৬)।

কোন কিছু সৃষ্টি করার ব্যাপারে জাহিলদের কোন জবাব নেই। তারা কোন কিছুকে সৃষ্টি করতে পারে না এবং নিজেকেও নয়। স্রষ্টা ব্যতীত তারা অস্তিত্বহীন। কাজেই একজন স্রষ্টা থাকা আবশ্যক। এখানে যখন স্রষ্টার অস্তিত্ব বিদ্যমান, তাহলে কি তারাই এই স্রষ্টা? তারা কি নিজেদেরকে সৃষ্টি করতে পেরেছে? তাদের মূর্তিগুলো কি আসমান ও জমিনের কোন কিছু সৃষ্টি করতে পেরেছে? কখনোই পারেনি। স্বভাব ও বিবেক-বুদ্ধি এ কথাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে।