তাদের স্বীকৃতি ও অস্বীকৃতির মধ্যে বৈপরীত্য

জাহিলরা তাদের দীনের অনুমোদিত বিষয় অস্বীকার করে। যেমন তারা হজ্জের ক্ষেত্রে করে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(وَمَنْ يَرْغَبُ عَنْ مِلَّةِ إِبْرَاهِيمَ إِلَّا مَنْ سَفِهَ نَفْسَهُ) [البقرة: 130]

আর যে নিজকে নির্বোধ বানিয়েছে, সে ব্যতীত কে ইবরাহীমের আদর্শ থেকে বিমুখ হতে পারে? (সূরা বাক্বারাহ ২:১৩০)।

.....................................

ব্যাখ্যাঃ ইয়াহুদীরা দাবি করে যে, তারা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর আদর্শের উপরই রয়েছে। অথচ যখন কিবলা পরিবর্তন করে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর দ্বারা নির্মিত কা‘বাকে কিবলা নির্ধারণ করা হলো ইয়াহুদীরা তখন চুড়ান্তভাবে কা‘বাকে অস্বীকার করলো। আমরা এ থেকে আল্লাহ তা‘আলার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। কেননা, কা‘বা ও ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর দীনের বিধান হজ্জকে ইয়াহুদীরা স্বীকৃতি দেয় না। তারা কিবলামুখী হওয়াকে অস্বীকার করে অথচ তারা জানে এটা সত্য-হক্ব। কাবা এমন ঘর যা মহান আল্লাহর নির্দেশে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম নির্মাণ করেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

(وَإِذْ بَوَّأْنَا لِإِبْرَاهِيمَ مَكَانَ الْبَيْتِ) [الحج: 26] (وَإِذْ يَرْفَعُ إِبْرَاهِيمُ الْقَوَاعِدَ مِنَ الْبَيْتِ وَإِسْمَاعِيلُ) [البقرة: 127]

আর স্মরণ কর, যখন আমি ইবরাহীমকে সে ঘরের (বায়তুল্লাহর) স্থাননির্ধারণ করে দিয়েছিলাম (সূরা হাজ্জ ২২:২৬)। আর যখন ইবরাহীম ও ইসমাইল কাবার ভিতগুলো উঠাচ্ছিল (সূরা বাক্বারাহ ২:১২৭)।

ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশে কা‘বা নির্মিত হয়। আর কা‘বাকে কেবলা হিসাবে কবুল করা হয়েছে অথচ তারা এটাকে অস্বীকার করে। অনুরূপভাবে হজ্জ পালন করা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর আদর্শ। এটা জানা সত্ত্বেও তারা তা অস্বীকার করে। কিন্তু মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি তাদের শত্রুতাই এসব কিছু অস্বীকার করতে তাদেরকে প্ররোচিত করে। সুতরাং কা‘বা হলো ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর মিরাছ বা উত্তরাধীকার। কা‘বামুখী হয়ে ছ্বলাত আদায় করা এবং সেখানে হজ্জ ও উমরা পালনের ইচ্ছা করা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর দীনের অন্তর্ভুক্ত। আর ইয়াহুদীরা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর দীনে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করে অথচ তার বৃহৎ নিদর্শনাবলী তারা অস্বীকার করে। তাই এটা বিস্ময়কর দ্বন্দ্বের অন্তর্ভুক্ত।

এমনিভাবে যে নিজেকে ইসলামের দিকে সম্পৃক্ত করে এবং ইসলামের কতিপয় বিধান পরিত্যাগ করে বলে, আমি মুসলিম। অতঃপর সে কবর পূজা করে, সেখানে প্রার্থনা করে, বরকত কামনা করে ও কবরের মাটি দিয়ে শরীর মুছে। যখন তাকে বলা হয়, এগুলো শিরক। তখন সে তা পরিত্যাগ করে না, বরং এর উপরই অটল থাকে এবং এগুলো থেকে বাধাদানকারীর সাথে শত্রুতা পোষণ করে। এরূপ সম্পৃক্ততা দ্বন্দ্বের অন্তর্ভুক্ত। আর যদিও ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত হয়, কিন্তু ইসলামের মহা নিদর্শন তাওহীদের বিরোধিতা করে।