রমযান মাসের ৩০ আসর চতুর্দশ আসর শাইখ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমীন (রহঃ) ১ টি

সকল প্রশংসা সে আল্লাহর জন্য যিনি প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল বিষয়ের যথাযথ জ্ঞান রাখেন। যিনি বান্দার গোপন, প্রকাশ্য ও ধারণা সম্পর্কেও জ্ঞাত। যিনি তাঁর সৃষ্টিকে তৈরী ও তার শৈল্পিক বিন্যাসে একক। যিনি প্রতিটি সৃষ্টির যাবতীয় নড়া-চড়া ও স্থিরতা সবই নিয়ন্ত্রণ করেন। প্রতিটি বস্তু সৃষ্টি করেছেন সুন্দরভাবে, কর্ণ বিদীর্ণ করেছেন এবং চোখের মণি নির্ধারণ করেছেন। গাছে তার শাখা ও ডালে কত পাতা আছে তা তিনিই গুণে রেখেছেন। যমীনকে বিস্তৃত করেছেন এবং সেটাকে ছাড়িয়ে দিয়েছেন, আকাশকে প্রশস্ত করেছেন এবং সেটাকে উপরে উঠিয়েছেন। তারকাসমূহের তাদের কক্ষপথে পরিচালিত করেছেন এবং অন্ধকার রাতে ও তমসায় সেগুলোকে উদিত করেছেন। বৃষ্টিকে নাযিল করেছেন মুষল ও হাল্কাভাবে, আর এর মাধ্যমে তিনি বীজকে শুকিয়ে যাওয়া থেকে যথার্থভাবে উদ্ধার করেছেন। “এ হচ্ছে আল্লাহর সৃষ্টি সুতরাং তোমার দেখাও তিনি ব্যতীত অন্যরা কি সৃষ্টি করেছে?” [সূরা লুকমান: ১১] আমি তাঁর প্রশংসা করছি তাঁর দান ও দাক্ষিণ্যের উপর।

আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত কোনো হক ইলাহ নেই, যাঁর ইবাদতে কোনো শরীক নেই, তাঁর ক্ষমতাতেও কোনো শরীক নেই। আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল, যাঁকে তাঁর পক্ষ থেকে দলীল-প্রমাণাদি দিয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করা হয়েছে।

আল্লাহ তার উপর সালাত পেশ করুন, অনুরূপ আবু বকরের ওপর যিনি সর্বাবস্থায় তার সাথী ছিলেন, উমরের উপর যিনি খসরু পারভেযকে তার সুরম্য অট্টালিকায় অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন, উসমানের ওপর যিনি কুরআন নিয়ে বিনিদ্র রজনী যাপন করেছিলেন, আলীর ওপর যিনি খাইবারের দরজা উপড়ে ফেলেছিলেন এবং সেখানকার দূর্গসমূহকে স্থানচ্যুত করেছিলেন। আর তার পরিবার-পরিজন, সঙ্গী-সাথীগণ যাদের প্রত্যেক ব্যক্তি তার নড়া-চড়া ও স্থিরতার মধ্যে তার রবের আনুগত্যে যথাযথ শ্রম ব্যয় করেছেন। আর আল্লাহ তাদের উপর যথার্থ সালাম পেশ করুন।

ভাই সকল:

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَٱلۡـَٰٔنَ بَٰشِرُوهُنَّ وَٱبۡتَغُواْ مَا كَتَبَ ٱللَّهُ لَكُمۡۚ وَكُلُواْ وَٱشۡرَبُواْ حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ ٱلۡخَيۡطُ ٱلۡأَبۡيَضُ مِنَ ٱلۡخَيۡطِ ٱلۡأَسۡوَدِ مِنَ ٱلۡفَجۡرِۖ ثُمَّ أَتِمُّواْ ٱلصِّيَامَ إِلَى ٱلَّيۡلِۚ﴾ [البقرة: ١٨٧]

‘আর এখন তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করতে পারো এবং আল্লাহ যা কিছু তোমাদের জন্য লিপিবদ্ধ করেছেন বা দান করেছেন তা আহরণ কর। আর ভক্ষণ করো, পান করো যতক্ষণ না রাতের কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিস্কার দেখা যায়। অতঃপর তোমরা রাত পর্যন্ত সাওমকে পূর্ণ কর।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৭)

এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা সিয়াম ভঙ্গের মৌলিক নীতিমালা উল্লেখ করেছেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসে তা পরিপূর্ণভাবে উল্লেখ করেছেন।