নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাওয এবং তার স্থান ও বৈশিষ্ট

حوض النبي صلى الله عليه وسلم ومكانه وصفاته

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাওয এবং তার স্থান ও বৈশিষ্ট:

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া (রঃ) বলেন,

وَفِي عَرَصَاتِ الْقِيَامَةِ الْحَوْضُ الْمَوْرُودُ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاؤُهُ أَشَدُّ بَيَاضًا مِنَ اللَّبَنِ وَأَحْلَى مِنَ الْعَسَلِ آنِيَتُهُ عَدَدُ نُجُومِ السَّمَاءِ طُولُهُ شَهْرٌ وَعَرْضُهُ شَهْرٌ مَنْ يَشْرَبُ مِنْهُ شَرْبَةً لَا يَظْمَأُ بَعْدَهَا أَبَدًا

কিয়ামতের ময়দানে থাকবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাওয। তাঁর অনুসারীরা পানি পান করার জন্য সেখানে উপস্থিত হবে। এই হাউযের পানি হবে দুধের চেয়েও অধিক সাদা, মধুর চেয়েও অধিক মিষ্টি, উহার পানপাত্রের সংখ্যা হবে আকাশের তারকার সমান। এর দৈর্ঘ হবে একমাসের দূরত্বের সমান এবং প্রস্থ হবে এক মাসের দূরত্বের সমান। যে উহা থেকে একবার পান করবে, সে আর কখনো পিপাসিত হবেনা।


ব্যাখ্যাঃ (৫) কিয়ামতের দিন আরো যা থাকবে, তার মধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাওয অন্যতম। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া (রঃ) এখানে হাওযে কাওছারের বেশ কিছু বৈশিষ্ট বর্ণনা করেছেন।[1] তিনি বলেনঃ কিয়ামতের ময়দানে থাকবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাওযে কাউছার। তাঁর অনুসারীরা সেখানে পানি পান করার জন্য আগমণ করবে। সহীহ সনদে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এই মর্মে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রঃ) বলেনঃ চল্লিশজন সাহাবী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে হাওযে কাউছারের হাদীছ বর্ণনা করেছেন। এই হাদীছগুলোর অনেকগুলোই বা অধিকাংশই সহীহ বুখারীতে রয়েছে। ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রঃ)এর কথা এখানেই শেষ। العرصات এর বর্ণনা পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে।

الحوض শব্দের আভিধানিক অর্থ পানি জমা হওয়ার স্থান। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের ঐক্যমতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাওয সাব্যস্ত। মুতাযেলারা এতে ভিন্নমত করেছে। তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাওয সাব্যস্ত করেনা এবং এ বিষয়ে বর্ণিত সহীহ হাদীছগুলোও কবুল করেনা। তারা হাওয সম্পর্কে বর্ণিত হাদীছগুলোর ভুল ব্যাখ্যা করে এবং এগুলোর প্রকাশ্য অর্থ পরিবর্তন করে থাকে।

অতঃপর শাইখুল ইসলাম হাওযের কতিপয় বৈশিষ্ট বর্ণনা করেছেন, যা উপরে বর্ণিত হয়েছে। এই বৈশিষ্টগুলো একাধিক সহীহ হাদীছ দ্বারা সুসাব্যস্ত। যেমন বুখারী ও মুসলিমের হাদীছে আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

«حَوْضِي مَسِيرَةُ شَهْرٍ مَاؤُهُ أَبْيَضُ مِنَ اللَّبَنِ وَرِيحُهُ أَطْيَبُ مِنَ الْمِسْكِ وَكِيزَانُهُ كَنُجُومِ السَّمَاءِ مَنْ شَرِبَ مِنْهَا فَلا يَظْمَأُ أَبَدًا» (بخارى:6579)

‘‘আমার হাওযের প্রশস্ততা হচ্ছে এক মাসের দূরত্বের সমান। এর পানি হবে দুধের চেয়ে সাদা, তার সুঘ্রাণ হবে কস্তুরীর চেয়েও অধিক পবিত্র, উহার পেয়ালার সংখ্যা হবে আকাশের তারকার সমান। যে ব্যক্তি একবার তা থেকে পান করবে সে কখনই পিপাসিত হবেনা।[2]

الصراط ومعناه ومكانه وصفة مرور الناس عليه

সিরাত, উহার অর্থ, স্থান এবং উহার উপর দিয়ে মানুষের অতিক্রম:

শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া (রঃ) বলেন,

وَالصِّرَاطُ مَنْصُوبٌ عَلَى مَتْنِ جَهَنَّمَ وَهُوَ الْجِسْرُ الَّذِي بَيْنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ يَمُرُّ النَّاسُ عَلَيْهِ عَلَى قَدْرِ أَعْمَالِهِمْ فَمِنْهُمْ مَنْ يَمُرُّ كَلَمْحِ الْبَصَرِ وَمِنْهُمْ مَنْ يَمُرُّ كَالْبَرْقِ وَمِنْهُمْ مَنْ يَمُرُّ كَالرِّيحِ وَمِنْهُمْ مَنْ يَمُرُّ كَالْفَرَسِ الْجَوَادِ وَمِنْهُمْ مَنْ يَمُرُّ كَرُكَّابِ الْإِبِلِ وَمِنْهُمْ مَنْ يَعْدُو عَدْوًا وَمِنْهُمْ مَنْ يَمْشِي مَشْيًا وَمِنْهُمْ مَنْ يَزْحَفُ زَحْفًا وَمِنْهُمْ مَنْ يُخْطَفُ خَطْفًا وَيُلْقَى فِي جَهَنَّمَ فَإِنَّ الْجِسْرَ عَلَيْهِ كَلَالِيبُ تَخْطَفُ النَّاسَ بِأَعْمَالِهِمْ

কিয়ামতের দিন জাহান্নামের উপর সিরাত স্থাপন করা হবে। উহা হচ্ছে জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝখানে স্থাপিত একটি পুল। লোকেরা নিজ নিজ আমল অনুযায়ী এর উপর দিয়ে অতিক্রম করবে। তাদের কেউ চোখের পলকের গতিতে চলবে, কেউ বিজলির গতিতে, কেউ বাতাসের গতিতে, কেউ দ্রুতগামী ঘোড়ার গতিতে পার হবে, কেউ উটে আরোহীদের গতিতে, কেউ দৌড়ে, কেউ হেঁটে এবং কেউ হামাগুড়ি দিয়ে পার হবে। কাউকে সেখান থেকে ছোঁ মেরে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। পুলের উপর থাকবে লোহার অসংখ্য আঁকুড়া বা কাঁটা। এগুলো আমল অনুযায়ী মানুষকে ছোঁ মেরে নিয়ে যাবে।


ব্যাখ্যাঃ (৬) শাইখুল ইসলাম এখানে উল্লেখ করেছেন যে, কিয়ামতের দিন যা হবে, তার মধ্যে পুলসিরাতের উপর দিয়ে অতিক্রম করার বিষয়টি অন্যতম। সিরাত শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো প্রশস্ত রাস্তা। আর শরীয়তের পরিভাষায় পুলসিরাতের পরিচয় শাইখ নিজেই উল্লেখ করেছেন যে, এটি মূলতঃ জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যকার একটি সেতু। পুলসিরাত কোথায় স্থাপন করা হবে, এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শাইখুল ইসলাম বলেন যে, তা হবে على متن جهنم অর্থাৎ জাহান্নামের আগুনের উপর। ইহার উপর দিয়ে লোকদের অতিক্রম করার অবস্থা সম্পর্কে বলেন, কেউ পার হবে চোখের পলকে, কেউ বা বিজলির গতিতে......। অর্থাৎ ঈমান এবং ঐ সমস্ত সৎ আমল অনুপাতে পুলসিরাতের উপরে তাদের অতিক্রমের গতি দ্রুত কিংবা ধীর হবে, যা তারা দুনিয়ায় থাকা অবস্থায় সম্পাদন করেছিল। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, দুনিয়াতে দ্বীন ইসলামের উপর টিকে থাকা ও দৃঢ়তা অনুপাতেই পুলসিরাতের উপর তাদের টিকে থাকা এবং অতিক্রম করার বিষয়টি নির্ভর করছে।[3]

সুতরাং যে ব্যক্তি দুনিয়াতে صراط معنوى সিরাতে মানাভী (আদর্শিক পথ) তথা দ্বীন ইসলামের উপর সুদৃঢ় থাকবে, তারাই কিয়ামতের দিন জাহান্নামের উপর স্থাপিত صراط حسي সিরাতে হিস্সী (বাহ্যিক পথ) পুলসিরাতের উপর দৃঢ়পদ থাকবে। আর দুনিয়াতে যে ব্যক্তি এই ইসলামের পথ থেকে বিচ্যুত হবে, সে কিয়ামতের দিন সিরাতে হিস্সীর উপর তথা পুলসিরাতের উপর থেকে ছিটকে পড়বে এবং জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।

يعدو عدوا অর্থ হচ্ছে দ্রুত গতিতে দৌড়িয়ে চলবে। আর يزحف زحفا মানে পায়ের বদলে নিতম্বের উপর ভর দিয়ে চলবে। وعليه كلاليب পুলসিরাতের উপর থাকবে বাঁকা মাথা বিশিষ্ট লোহা। كلاليب শব্দটি كلوب এর বহুবচন। كلوب শব্দের ‘কাফ’ বর্ণে যবর এবং ‘লাম’ বর্ণে তাশদীদ ও পেশ দিয়ে পড়া হয়েছে।

تخطف এর ‘তোয়া’ বর্ণে যবর দিয়ে পড়া হয়েছে। যের দিয়ে পড়াও জায়েয। الخطف মাসদার থেকে এই শব্দটি গঠিত। কোন জিনিষকে খুব দ্রুত উঠিয়ে নিয়ে যাওয়াকে খাতাফ বলা হয়। মন্দ আমলের কারণে মানুষকে পুলসিরাতের উপর থেকে দ্রুত উঠিয়ে নিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। শুবুহাত এবং শাহওয়াত (সন্দেহ এবং কুপ্রবৃত্তি) মানুষকে দুনিয়াতে সীরাতুল মুস্তাকীম থেকে দ্রুত সরিয়ে ফেলা অনুপাতেই পুলসিরাতের উপরের লোহার বক্র কাঁটাগুলো মানুষকে ছোঁ মেরে নিয়ে যাবে।

কিয়ামতের দিন জাহান্নামের উপর পুল স্থাপন করা হবে এবং লোকেরা তার উপর দিয়ে অতিক্রম করবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে যেহেতু এ বিষয়ে অনেক সহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা তাতে ঈমান আনয়ন করে।

মুতাযেলী আলেম কাযী আব্দুল জাববার এবং তার অনেক অনুসারী জাহান্নামের উপর সিরাত স্থাপনের ব্যাপারে ভিন্ন মত পোষণ করেছে। সে বলেছে, উপরোক্ত সিরাত বলতে জান্নাত ও জাহান্নামের দিকে যাওয়ার রাস্তাকে বুঝানো হয়েছে। তাদের মতে আল্লাহ তাআলার এই বাণীঃ

﴿سَيَهْدِيهِمْ وَيُصْلِحُ بَالَهُمْ وَيُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ عَرَّفَهَا لَهُمْ﴾

‘‘তিনি অচিরেই তাদের পথপ্রদর্শন করবেন, তাদের অবস্থা শুধরে দিবেন এবং তাদেরকে সেই জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার পরিচয় তিনি তাদেরকে আগেই অবহিত করেছেন’’ দ্বারা জান্নাতের পথের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে এবং আল্লাহ তাআলার এই বাণীঃ

﴿احْشُرُوا الَّذِينَ ظَلَمُوا وَأَزْوَاجَهُمْ وَمَا كَانُوا يَعْبُدُونَ مِن دُونِ اللَّهِ فَاهْدُوهُمْ إِلَىٰ صِرَاطِ الْجَحِيمِ﴾

‘‘কিয়ামতের দিন আদেশ করা হবে, ধরে নিয়ে এসো যালেমদেরকে, তাদের সহযোগীদেরকে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা যেসব মাবুদের এবাদত করতো। অতঃপর তাদের সবাইকে জাহান্নামের পথ দেখিয়ে দাও’’ দ্বারা জাহান্নামের দিকে যাওয়ার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। তাদের এই কথা সম্পূর্ণ বাতিল এবং বিনা দলীলে এর দ্বারা সুস্পষ্ট সহীহ হাদীছগুলোকে পরিত্যাগ করা হয়েছে। কুরআন ও হাদীছের উক্তি থেকে প্রকাশ্য অর্থ গ্রহণ করা অপরিহার্য। কোন ক্রমেই বিনা কারণে প্রকাশ্য অর্থ বাদ দিয়ে অন্য অর্থ গ্রহণ করা যাবেনা।

[1] - হাওযে কাউছার কোথায় স্থাপন করা হবে, এ বিষয়ে আলেমদের থেকে দু’টি মত পাওয়া যায়। কেউ বলেছেনঃ হাশরের ময়দানে। আবার কেউ বলেছেন। পুলসিরাত পার হওয়ার পর। তবে প্রথম কথাটিই সঠিক। কারণ হাশরের ময়দানে মানুষ পিপাসায় কাতর হবে। তখন তাদের পানি পান করার প্রয়োজন হবে। তাই হাশরের মাঠে হাওযে কাউছার থাকাই যুক্তিযুক্ত।

[2] - বিদ্আতীরা কিয়ামতের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর হাউযে কাউছার থেকে বঞ্চিত হবে। তিনি বলেনঃ

«إِنِّي فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ مَنْ مَرَّ عَلَيَّ شَرِبَ وَمَنْ شَرِبَ لَمْ يَظْمَأْ أَبَدًا لَيَرِدَنَّ عَلَيَّ أَقْوَامٌ أَعْرِفُهُمْ وَيَعْرِفُونِي ثُمَّ يُحَالُ بَيْنِي وَبَيْنَهُمْ فَأَقُولُ إِنَّهُمْ مِنِّي فَيُقَالُ إِنَّكَ لَا تَدْرِي مَا أَحْدَثُوا بَعْدَكَ فَأَقُولُ سُحْقًا سُحْقًا لِمَنْ غَيَّرَ بَعْدِي»

‘‘কিয়ামতের দিন আমি তোমাদের জন্য হাউজে কাউছারের নিকট উপস্থিত থাকবো। যে ব্যক্তি আমার কাছে আসবে আমি তাকে তা থেকে পান করাবো। আমার হাউজ থেকে যে একবার পানি পান করবে সে আর কখনো পিপাসিত হবেনা। এমন সময় আমার কাছে একদল লোক আগমণ করবে। আমি তাদেরকে চিনতে পারব। তারাও আমাকে চিনতে পারবে। অতঃপর আমার ও তাদের মাঝে প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করা হবে। আমি বলবোঃ এরা আমার উম্মত। তখন আমাকে বলা হবেঃ আপনি জানেন না তারা আপনার পরে কত বিদআত তৈরী করেছিল। আমি বলবঃ আমার রেখে আসা দ্বীনের মধ্যে যারা পরিবর্তন করেছো তারা এখান থেকে সরে যাও। অতঃপর তাদেরকে সেখান থেকে বিতাড়িত করা হবে’’। (বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুর রিকাক)

[3] - আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে,

«أَنَّهَا ذَكَرَتِ النَّارَ فَبَكَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا يُبْكِيكِ قَالَتْ ذَكَرْتُ النَّارَ فَبَكَيْتُ فَهَلْ تَذْكُرُونَ أَهْلِيكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَّا فِي ثَلَاثَةِ مَوَاطِنَ فَلَا يَذْكُرُ أَحَدٌ أَحَدًا عِنْدَ الْمِيزَانِ حَتَّى يَعْلَمَ أَيَخِفُّ مِيزَانُهُ أَوْ يَثْقُلُ وَعِنْدَ الْكِتَابِ حِينَ يُقَالُ (هَاؤُمُ اقْرَءُوا كِتَابِيَهْ ) حَتَّى يَعْلَمَ أَيْنَ يَقَعُ كِتَابُهُ أَفِي يَمِينِهِ أَمْ فِي شِمَالِهِ أَمْ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِهِ وَعِنْدَ الصِّرَاطِ إِذَا وُضِعَ بَيْنَ ظَهْرَيْ جَهَنَّمَ

‘‘তিনি জাহান্নামের আগুনের কথা মনে করে কাঁদতে শুরু করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কাঁদছ কেন? তিনি বললেনঃ আমি জাহান্নামের কথা স্মরণ করে কাঁদছি। হাশরের মাঠে আপনি কি আপনার পরিবার ও আপনজনের কথা মনে রাখবেন? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বললেনঃ তিনটি স্থান এমন রয়েছে যেখানে কেউ কাউকে স্মরণ করবেনা। (১) মানুষের আমল যখন মাপা হবে। তখন মানুষ সব কিছু ভুলে যাবে। চিন্তা একটাই থাকবে, তার নেক আমলের পাল্লা ভারী হবে? না হালকা হবে। (২) যখন প্রত্যেকের আমলনামা দেয়া হবে তখন কেউ কাউকে স্মরণ করবেনা। আমলনামা ডান হাতে পাবে? না বাম হাতে পাবে- এনিয়ে চিন্তিত থাকবে। (৩) পুলসিরাত পার হওয়ার সময়ও সকলেই ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে। কেউ কাউকে স্মরণ করবে না’’। (আবু দাউদ, অধ্যায়ঃ কিতাবুস সুন্নাহ।