উপদেশ ২৬. কবরের শাস্তি আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ ১ টি

عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ قَالَ بَيْنَا رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيْ حَائِطٍ لِبَنِيْ النَّجَّارِ عَلَي بَغْلَةٍ لَهُ وَنَحْنُ مَعَهُ اِذْحَادَتْ فَكَادَتْ تُلْقِيْهِ وَاِذَا اَقْبُرُ سِتَّةٍ اَوْخَمْسَةٍ فَقَالَ مَنْ يَّعْرِفُ أَصْحَابَ هَذِهِ الْقُبُوْرِ قَالَ رَجُلٌ أَنَا قَالَ فَمَتىَ مَاتُوْا قَالَ فِى الشِّرْكِ فَقَالَ إِنَّ هَذِهِ الْاُمَّةَ لتَبُلْيَ فِيْ قُبُوْرِهَا فَلَوْلَا اَنْ لَّاتُدَفِّنُوْا لَدَعَوْتُ اللهَ اَنْ يُّسْمِعَكُمْ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ الَّذِيْ اَسْمَعُ مِنْهُ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ تََعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنْ عَذَابِ النَّارِ قَالُوْا نَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ عَذَابِ النَّارِقَالَ تَعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ قَالُوْا نَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ قَالَ تَعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنَ الْفِتَنَ مَاظَهَرَمِنْهَا وَمَابَطَنَ قَالُوْا تَعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنَ الْفِتَنِ مَاظَهَرَ مِنْهَا وَمَابَطَنَ قَالَ تَعَوَّذُوْا بِاللهِ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ قَالُوْا نَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ فِتْنَةِالدَّجَّالِ.

যায়েদ ইবনে ছাবিত (রা.) বলেন, নবী করীম(সা.) একদা নাজ্জার গোত্রের একটি বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় খচ্চরটি লাফিয়ে উঠল এবং নবী করীম (সা.) -কে ফেলে দেওয়ার উপক্রম করল। দেখা গেল সেখানে ৫টি কিংবা ৬টি কবর রয়েছে। তখন নবী করীম (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, এই কবরবাসীদের কে চিনে? এক ব্যক্তি বলল, আমি চিনি। নবী করীম (সা.) বললেন, তারা কখন মারা গেছে? সে বলল, মুশরিক অবস্থায় মারা গেছে। তখন নবী করীম (সা.) বললেন, নিশ্চয়ই মানুষকে তার কবরে কঠিন পরীক্ষায় ফেলা হয় এবং কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। কবরের শাস্তির ভয়ে তোমরা কবর দেয়া ত্যাগ করবে, না হ’লে আমি আল্লাহর নিকট দো‘আ করতাম যেন আল্লাহ তোমাদেরকে কবরের শাস্তি শুনিয়ে দেন, যেমন আমি শুনতে পাচ্ছি। অতঃপর নবী করীম(সা.) আমাদের মুখোমুখি হয়ে বললেন, তোমরা সকলেই জাহান্নামের আযাব হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাও। তারা সকলেই বলে উঠল, আমরা জাহান্নামের আযাব হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাচ্ছি। নবী করীম(সা.) বললেন, তোমরা সকলেই কবরের আযাব হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাও। তারা সকলেই বলল, আমরা কবরের শাস্তি হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাচ্ছি। নবী করীম (সা.) বললেন, তোমরা সমস্ত গোপন ও প্রকাশ্য ফেতনা হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাও। তারা বলল, আমরা গোপন ও প্রকাশ্য ফেতনা হ’তে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। নবী করীম (সা.) বললেন, তোমরা দাজ্জালের ফেতনা হ’তে আল্লাহর নিকট পরিত্রাণ চাও। তারা বলল, আমরা সকলেই আল্লাহর নিকট দাজ্জালের ফেতনা হ’তে পরিত্রাণ চাচ্ছি’ (মুসলিম, মিশকাত হা/১২২)। মানুষ কবরে এমন ভয়াবহ শাস্তির সম্মুখীন হবে, যা মানুষকে শুনানো সম্ভব নয়। মানুষ কবরের শাস্তি শুনতে পেলে বেঁচে থাকতে পারবে না এবং কাউকে কবরে দাফন করতেও চাইবে না। এজন্য নবী করীম (সা.) আমাদের সাবধান ও সর্তক করে বলেছেন, ‘তোমরা সর্বদা কবরের শাস্তি হ’তে পরিত্রাণ চাও’।

عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا أُقْبِرَ الْمَيِّتُ اَتَاهُ مَلَكَانِ اَسْوَادَانِ اَرْزَقَانِ يُقَالُ لِأَحَدِهِمَا الْمُنْكَرُ وَالْآخَرُ النَّكِيْرُ فَيَقُوْلَانِ مَاكُنْتَ تَقُوْلُ فِيْ هذَاالرَّجُلِ فَيَقُوْلُ هُوَعَبْدُاللهِ وَرَسُوْلُهُ أَشْهَدُ أنْ لَّااِلَهَ اِلَّااللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسًوْلُهُ فَيَقُوْلَانِ قَدْكُنَّا نَعْلْمُ إِنَّكَ تَقُوْلُ هَذَا ثُمَّ يُفْسَحُ لَهُ فِيْ قَبْرِهِ سَبْعُوْنَ ذِرَاعًا فِيْ سَبْعِيْنَ وَيُنَوِّرُلَهُ فِيْهِ ثُمَّ يُقَالُ لَهُ نَمَّ فَيَقُوْلُ اَرْجِعُ اِلَي أَهْلِيْ فَأُخْبِرُهُمْ فَيَقُوْلَانِ لَهُ نَمْ كَنَوْمَةِ الْعَرُوْسِ الَّذِيْ لَايُوْقِظُهُ اِلَّا أَحَبُّ اَهْلِهِ اِلَيْهِ حَتَّي يَبْعَثَهُ اللهُ مِنْ مَضْجَعِهِ ذَلِكَ وَاِنْ كَانَ مُنَافِقًا قَالَ سَمِعْتُ النَّاسَ يَقُوْلُوْنَ قَوْلًا فَقُلْتُ مِثْلُهَ لَا اَدْرِىْ فَيَقُوْلَانِ لَهُ قَدْكُنَّا نَعْلَمُ اَنَّكَ تَقُوْلُ ذَلِكَ فَيُقَالُ لِلْأْرْضِ الْتَئِمِيْ عَلَيْهِ فَتَلْتَنِمُ عَلَيْهِ فَتَخْتَلِفُ اَضْلَاعُهُ فَلَايَزَالُ فِيْهَا مُعَذَّبًاحَتَّي يَبْعَثَهُ اللهُ مِنْ مَضْجَعِهِ ذَلِكَ.

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যখন মৃত ব্যক্তিকে কবরে রাখা হয়, তখন তার নিকট নীল চক্ষু বিশিষ্ট দু’জন কাল বর্ণের ফেরেশ্তা এসে উপস্থিত হন। তাদের একজনকে বলা হয় মুনকার, অপর জনকে বলা হয় নাকির। তারা রাসূল (সা.) -এর প্রতি ইশারা করে বলেন, এ ব্যক্তি সম্পর্কে তুমি দুনিয়াতে কি বলতে? মৃত ব্যক্তি মুমিন হ’লে বলেন, তিনি আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। তখন তারা বলেন, আমরা পূর্বেই জানতাম আপনি এ কথাই বলবেন। অতঃপর তার কবরকে দৈর্ঘ্য-প্রস্থে ৭০ (সত্তর) হাত করে দেয়া হয়। অর্থাৎ অনেক প্রশস্ত করে দেয়া হয় এবং সেখানে আলোর ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। তারপর তাকে বলা হয় ঘুমিয়ে থাক। তখন সে বলে না অমি আমার পরিবারের নিকট ফিরে যেতে চাই। ফেরেশ্তাগণ বলেন, তুমি এখানে বাসর ঘরের দুলার ন্যায় আনন্দে ঘুমাতে থাক যাকে তার পরিবারের সর্বাধিক প্রিয়জন ব্যতীত আর কেউ ঘুম ভাঙাতে পারে না। যতদিন পর্যন্ত আল্লাহ তাকে এ শয্যাস্থান হ’তে না উঠাবেন, ততদিন পর্যন্ত সে ঘুমিয়ে থাকবে। যদি মৃত ব্যক্তি মুনাফিক হয় তাহ’লে সে বলে, লোকে তার সর্ম্পকে যা বলত আমিও তাই বলতাম। আমার জানা নেই তিনি কে? তখন ফেরেশতাগণ বলেন, আমরা জানতাম যে, তুমি এ কথাই বলবে। তারপর জমিন কে বলা হয় তোমরা এর উপর মিলে যাও। সুতরাং জমিন তার উপর এমনভাবে মিলে যায় যাতে তার এক পাশের হাড় অপর দিকে চলে যায়। সেখানে সে এভাবে শাস্তি ভোগ করতে থাকবে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত। ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ তাকে তার এ স্থান হ’তে উঠাবেন (তিরমিযী, মিশকাত হা/১৩০, হাদীছ হাসান)। মৃতব্যক্তিকে কবরে রাখার পরপরই ভয়াবহ আকৃতিতে দু’জন ফেরেশতা আসেন এবং তারা জিজ্ঞেস করেন। জিজ্ঞাসার উত্তর ঠিক হ’লে কবরকে প্রশস্ত করা হয় এবং কবরকে আলোকিত করা হয়। আর বাসর ঘরের দুলার ন্যায় নিরাপদে ঘুমাতে বলা হয়। উত্তর সঠিক দিতে না পারলে মাটিকে বলা হয় তুমি একে দু’দিক থেকে চেপে পিশে একাকার করে দাও। তখন মাটি তাকে এভাবে চেপে পিশে একাকার করতে থাকে আর এরূপ হ’তে থাকবে ক্বিয়ামত পর্যন্ত।

عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبِ عَنْ رَسُوْلٍ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَأْتِيْهِ مَلَكَانِ فَيُجْلِسَانِهِ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَنْ رَبُّكَ فَيَقُوْلُ رَبِّيْ اللهُ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَادِيْنُكَ فَيَقُوْلُ دِيْنِيْ الْاِسْلَامُ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَاهَذَا الرَّجُلُ الَّذِيْ بُعِثَ فِيْكُمْ فَيَقُوْلُ هُوَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَيَقُوْلَانِ لَهُ وَمَا يُدْرِيْكَ فَيَقُوْلُ قَرَأْتُ كِتَابَ اللهِ فَأَمَنْتُ بِهِ وَصَدَّقْتُ فَذَلِكَ قَوْلُهُ يُثَبِّتُ اللهُ الَّذِيْنَ آَمَنُوْا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ- الاية قَالَ فَيُنَادِيْ مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ اَنْ صَدَقَ عَبْدِيْ فَافْرِشُوْهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَالْبِسُوْهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَافْتَحُوْا لَهُ بَابًا اِلَي الْجَنَّةِ فَيُفْتَحُ قَالَ فَيَأْتِيْهِ مِنْ رَوْحِهَا وَطِيْبِهَا وَيُفْسَحُ لَهُ فِيْهَا مَدَّبَصَرِهِ وَأَمَّا الْكَافِرُ فَذَكَرَ مَوْتَهُ وَيُعَادُ رُوْحُهُ فِيْ جَسَدِهِ وَيَأْتِيْهِ مَلَكَانِ فَيَجْلِسَانِهِ فَيَقُوْلَانِ مَنْ رَبُّكَ فَيَقُوْلُ هَاهْ هَاهْ لَا اَدْرِيْ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَادِيْنُكَ فَيَقُوْلُ هَاهْ هَاهْ لَا اَدْرِيْ فَيَقُوْلَانِ لَهُ مَاهَذَا الرَّجُلُ الَّذِيْ بُعِثَ فِيْكُمْ فَيَقُوْلُ هَاهْ هَاهْ لَا اَدْرِيْ فَيُنَادِيْ مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ اَنْ كَذَبَ فَافْرِشُوْهُ مِنَ النَّارِ وَالْبِسُوْهُ مِنَ النَّارِ وَافْتَحُوْا لَهُ بَابًا الي النَّارِ قَالَ فَيَأْتِيْهِ مِنْ حَرِّهَا وَسَمُوْمِهَا قَالَ وَيُضَيِّقُ عَلَيْهَ قَبْرُهُ حَتَّي يَخْتَلِفَ فِيْهِ اَضْلَاعُهُ ثُمَّ يُقَيِّضُ لَهُ اَعْمَي اَصَمُّ مَعَهُ مِرْزَبَةٌ مِنْ حَدِيْدٍ لَوْضُرِبَ بِهَا جَبَلٌ لَصَارَ تُرَابًا فَيُضْرَبُهُ بِهَا ضَرْبَةً يَسْمَعُهَا مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ اِلَّا الثَّقَلَيْنِ فَيَصِيْرُتُرَابًا ثُمَّ يُعَادُفِيْهِ الرُّوْحُ.

বারা ইবনে আযেব (রা.) রাসূল (সা.) হতে বর্ণনা করেন যে, রাসূল(সা.) বলেছেন, কবরে মুমিন বান্দার নিকট দু’জন ফেরেশতা আসেন এবং তাকে উঠিয়ে বসান। অতঃপর তাকে জিজ্ঞেস করেন, তোমার প্রতিপালক কে? সে বলে, আমার প্রতিপালক আল্লাহ। তারপর জিজ্ঞেস করেন, তোমার দ্বীন কি? সে বলে আমার দ্বীন ইসলাম। পুনরায় জিজ্ঞেস করেন, এই যে লোকটি তোমাদের মাঝে প্রেরিত হয়েছিলেন তিনি কে? সে বলে তিনি আল্লাহর রাসূল(সা.) । তখন ফেরেশ্তাগণ তাকে বলেন, তুমি কিভাবে তা জানতে পারলে? সে বলে আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি তা দেখেছি তার প্রতি ঈমান এনেছি ও তাকে সমর্থন করেছি। তখন নবী করীম(সা.) বললেন, এই হ’ল আল্লাহর বাণী,يُثَبِّتُ اللهُ الَّذِيْنَ امَنُوْا بِاالْقَوْلِ الثّابِتِ ‘যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে আল্লাহ্ তাদেরকে কালেমা শাহাদাতের উপর অটল রাখবেন’ (ইবরাহীম ২৭)। তারপর নবী করীম(সা.) বললেন, এসময় আকাশ হ’তে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, আমার বান্দা সঠিক বলেছে। সুতরাং তার জন্য জান্নাতের একটি বিছানা বিছিয়ে দাও। তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার জন্য কবর হ’তে জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। সুতরাং তার জন্য তাই করা হয়। নবী করীম(সা.) বলেন, ফলে তার দিকে জান্নাতের সুগন্ধি আসতে থাকে এবং ঐ দরজা তার দৃষ্টির সীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেয়া হয়। তারপর নবী করীম (সা.) কাফেরের মৃত্যু প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, তার আত্মাকে তার দেহে ফিরিয়ে আনা হয়। তারপর দু’জন ফেরেশতা তাকে উঠিয়ে বসান এবং জিজ্ঞেস করেন। তোমার প্রতিপালক কে? তখন সে বলে হায়! হায়! আমি কিছুই জানি না। তারপর তাকে জিজ্ঞেস করেন, তোমার দ্বীন কি? সে পুনরায় বলে হায়! হায়! আমি কিছুই জানি না। তারপর তারা ইশারা করে বলেন, এই লোকটি কে? যিনি তোমাদের মধ্যে প্রেরিত হয়েছিলেন। সে পুনরায় বলে হায়! হায়! আমি কিছুই জানি না। তারপর আকাশ থেকে একজন আহবানকারী বলেন, সে মিথ্যা বলেছে। তার জন্য জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তাকে জাহান্নামের পোশাক পরিয়ে দাও। তারপর তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। তখন তার দিকে জাহান্নামের দিকে একটি দরজা খুলে দেয়া হয়। নবী করীম(সা.) বলেন, তখন তার দিকে জাহান্নামের লু হাওয়া আসতে থাকে। এছাড়া তার প্রতি তার কবরকে এত সংকীর্ণ করে দেয়া হয় যাতে তার এক দিকের পাঁজর আর এক দিকের পাঁজরের মধ্যে ঢুকে যায়। অতঃপর তার জন্য একজন অন্ধ ও বধির ফেরেশতাকে নিযুক্ত করা হয়, যার সাথে একটি লোহার হাতুড়ি থাকে যদি এই হাতুড়ি দ্বারা কোন পাহাড়কে আঘাত করা হয়, তাহ’লে পাহাড়ও ধূলিকণায় পরিণত হয়ে যাবে। আর সেই ফেরেশতা এ হাতুড়ি দ্বারা তাকে এত জোরে আঘাত করেন, আর সে আঘাতের চোটে এত বিকট চিৎকার করে যে, মানুষ ও জিন ব্যতীত পৃথিবীর সব কিছুই শুনতে পায়। সঙ্গে সঙ্গে সে মাটির সাথে মিশে যায়। তারপর আবার তার দেহে আত্মা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে তার শাস্তি চলতে থাকে (আহমাদ, আবুদাঊদ, হাদীছ ছহীহ, মিশকাত হা/১৩১; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১২৪)

অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতিয়মান হয় যে, কবরে থাকতেই মানুষকে জাহান্নামের শাস্তি দেওয়া হবে। কবরে জাহান্নামের পোশাক পরিয়ে দেওয়া হবে। জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দেয়া হবে, জাহান্নামের দিকে দরজা খুলে দেয়া হবে। এছাড়া কবরকে এত সংকীর্ণ করা হবে যাতে তার হাড় হাড্ডি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। এরপরও এমন একজন ফেরেশতা নির্ধাণ করা হবে যে অন্ধ ও বধির অর্থাৎ যার নিকট কোন দয়ার আশা করা যায় না। কেননা চক্ষু দিয়ে দেখলে অন্তরে দয়ার প্রভাব হয় আর কান দিয়ে শুনলেও অন্তরে দয়ার প্রভাব হয়। কিন্তু এমন একজন ফেরেশ্তা যে চখেও দেখে না কানেও শুনে না। তাই তার নিকট দয়ার কোন আশা করা যায় না।