عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " أَرْبَعٌ إِذَا كُنَّ فِيكَ فَلَا عَلَيْكَ مَا فَاتَكَ مِنَ الدُّنْيَا: حِفْظُ أَمَانَةٍ وَصِدْقُ حَدِيثٍ وَحُسْنُ خَلِيقَةٍ وَعِفَّةٌ فِي طُعْمَةٍ.
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যখন তোমার মধ্যে চারটি বস্ত্ত বিদ্যমান থাকে, তখন দুনিয়ার যা কিছুই তোমার থেকে চলে যাই তাতে তোমার কোন ক্ষতি নাই। আমানত রক্ষা করা, সত্য কথা বলা, উত্তম চরিত্র হওয়া এবং খানা-পিনা সতর্কতা অবলম্বন করা। (আহমাদ, শু‘আবুল ঈমান, মিশকাত হা/৫২২২)।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ فُقَرَاءَ الْمُهَاجِرِينَ يَسْبِقُونَ الْأَغْنِيَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَى الْجَنَّةِ بِأَرْبَعِينَ خَرِيفًا.
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, গরীব মুজাহিরগণ ক্বিয়ামতের দিন ধনীদের চল্লিশ বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে (মুসলিম, মিশকাত হা/৫২৩৫)।
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ مَا شَبِعَ آل مُحَمَّدٍ مِنْ خُبْرِ الشَّعِيرِ يَوْمَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ حَتَّى قُبِضَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর পরিবারবর্গ লাগাতার দুই দিন যবের রুটি খেয়ে পরিতৃপ্ত হননি। এমতাবস্তায়ই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ওফাত হয়েছে (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫২৩৭)।
عَن سعيد المَقْبُري عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّهُ مَرَّ بِقَوْمٍ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ شَاةٌ مَصْلِيَّةٌ فَدَعَوْهُ فَأَبَى أَنْ يَأْكُلَ وَقَالَ: خَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَمْ يَشْبَعْ مِنْ خُبْزِ الشَّعِيرِ.
সাঈদ মাক্বারী আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, একদা তিনি এমন এক সম্প্রদায়ের নিকট দিয়ে অতিক্রম করলেন যাদের সম্মুখে উপস্থিত করা হয়েছিল ভাজা করা বক্রী। তারা খাওয়ার জন্য আবু হুরায়রাকে ডাকলেন; কিন্তু তিনি এই বলে খেতে অস্বীকার করলেন যে, নবী (ছাঃ) দুনিয়া হতে বিদায় নিয়েছেন, অথচ তিনি যবের রুটি দ্বারাও পরিতৃপ্ত হতে পারেন নাই (বুখারী, মিশকাত হা/৫২৩৮)।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ لَقَدْ رَأَيْتُ سَبْعِينَ مِنْ أَصْحَابِ الصُّفَّةِ مَا مِنْهُمْ رَجُلٌ عَلَيْهِ رِدَاءٌ إِمَّا إِزَارٌ وَإِمَّا كِسَاءٌ قَدْ رُبِطُوا فِي أَعْنَاقِهِمْ فَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ نِصْفَ السَّاقَيْنِ وَمِنْهَا مَا يَبْلُغُ الْكَعْبَيْنِ فَيَجْمَعُهُ بِيَدِهِ كَرَاهِيَةَ أَن تُرَى عَوْرَتُهُ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নিশ্চয় আমি ‘ছুফ্ফা’বাসীদের মধ্য হতে সত্তর জন লোককে দেখেছি যে, তাদের কোন একজনের নিকটও একখানা চাদর ছিল না। হয় তো একখানা লুঙ্গি ছিল অথবা একখানা কম্বল, যা তারা নিজেদের ঘাড়ের সাথে পেঁচিয়ে রাখত। উহা কারো অর্ধ গোড়ালী পর্যমত্ম, আবার কারো টাখনু পর্যমত্ম পৌঁছাত। তারা ওটাকে নিজের হাতের সাথে ধরে রাখত-এই আশংকায় যেন সতর খুলে না পড়ে (বুখারী, মিশকাত হা/৫২৪১)।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ্রإِذَا نَظَرَ أَحَدُكُمْ إِلَى مَنْ فُضِّلَ عَلَيْهِ فِي الْمَالِ وَالْخَلْقِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى مَنْ هُوَ أَسْفَلَ مِنْهُগ্ধ مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ قَالَ: ্রانْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ أَسْفَلَ مِنْكُمْ وَلَا تَنْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ فَوْقَكُمْ فَهُوَ أَجْدَرُ أَنْ لَا تَزْدَرُوا نِعْمَةَ اللهِ عَلَيْكُمগ্ধ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন ব্যক্তিকে দেখে যাকে মাল-সম্পদে, স্বাস্থ্য- সামর্থে অধিক দেয়া হয়েছে, তখন সে যেন নিজের চাইতে নিম্ন মানের ব্যক্তির দিকে তাকায় (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫২৪২)। মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা নিজেদের অপেক্ষা নিম্ন অবস্থার লোকের প্রতি তাকাও। এমন ব্যক্তির দিকে তাকাইও না যে, তোমাদের চাইতে উচ্চ পর্যায়ের। যদি এই নীতি অবলম্বন করে তা হলে আল্লাহ তোমাকে যেই নেয়ামত দান করেছেন, তাকে ক্ষুদ্র বা হীন মনে করবে না।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ্রيَدْخُلُ الْفُقَرَاءُ الْجَنَّةَ قَبْلَ الْأَغْنِيَاءِ بِخَمْسِمِائَةِ عَامٍ نِصْفِ يَوْمٍগ্ধ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, গরীবেরা ধনীদের পাঁচ শত বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর তা হবে ক্বিয়ামতের অর্ধদিন (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫২৪৩)।
عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: اَللَّهُمَّ أَحْيِنِي مِسْكِينًا وَأَمِتْنِي مِسْكِينًا وَاحْشُرْنِي فِي زُمْرَةِ الْمَسَاكِينِ، فَقَالَتْ عَائِشَةُ: لِمَ يَا رَسُولَ اللهِ؟ قَالَ: إِنَّهُمْ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ قَبْلَ أَغْنِيَائِهِمْ بِأَرْبَعِينَ خَرِيفًا يَا عَائِشَةُ لَا تَرُدِّي الْمِسْكِينَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ يَا عَائِشَةُ أَحِبِّي الْمَسَاكِينَ وَقَرِّبِيهِمْ فَإِنَّ اللهَ يُقَرِّبُكِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (ছাঃ) বলেছেন, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মিসকীন অবস্থায় জীবিত রাখ, মিসকীন অবস্থায় মৃত্যু দান কর এবং মিসকীনদের দলে হাশর কর। বিবি আয়েশা বললেন, কেন ইয়া রাসূলুল্লাহ! তিনি বললেন, তারা ধনীদের চলিশ বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। হে আয়েশা! কোন মিসকীনকে তোমার দুয়ার হতে (খালি হাতে) ফিরিয়ে দিও না। খেজুরের একটি টুকরা হলেও প্রদান করিও। হে আয়েশা! মিসকীনদেরকে ভালবাসিও এবং তাদেরকে নিজের কাছে স্থান দিও, ফলে আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামতের দিন তোমাকে নিকটে রাখবেন (তিরমিযী, বায়হাকী, মিশকাত হা/৫২৫৪)।
عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَهْرَمُ ابْنُ آدَمَ وَيَشِبُّ مِنْهُ اثْنَانِ: الْحِرْصُ عَلَى الْمَالِ وَالْحِرْصُ عَلَى الْعُمُرِ.
আনাস (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (ছাঃ) বলেছেন, আদম সন্তান বৃদ্ধ হয় এবং দুইটি জিনিস তার মধ্যে জওয়ান হয়- সম্পদের প্রতি মোহ এবং দীর্ঘ জীবনের আকাঙ্খা (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫২৭০)।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا يَزَالُ قَلْبُ الْكَبِيرِ شَابًّا فِي اثْنَيْنِ: فِي حُبِّ الدُّنْيَا وَطُوْلِ الْأَمَلِ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, বৃদ্ধ লোকের অন্তর দুইটি ব্যাপারে সর্বদা জওয়ান হতে থাকে। দুনিয়ার মহবত ও দীর্ঘ আকাঙ্খা (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫২৭১)।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَوْ كَانَ لِابْنِ آدَمَ وَادِيَانِ مِنْ مَالٍ لَابْتَغَى ثَالِثًا وَلَا يَمْلَأُ جَوْفَ ابْنِ آدَمَ إِلَّا التُّرَابُ وَيَتُوبُ اللهُ عَلَى مَنْ تَابَ.
ইবনু আববাস (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করীম(সা.) বলেছেন, ‘আদম সন্তানকে ধন-সম্পদে পরিপূর্ণ দু’টি উপত্যকাও যদি দেওয়া হয়, সে তৃতীয়টির অপেক্ষা করবে। বস্ত্ততঃ আদম সন্তানের পেট মাটি ছাড়া অন্য কিছুই পরিপূর্ণ করতে পারবে না। আর যে আল্লাহর কাছে তওবা করে আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫২৭৩)।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَخَذَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِبَعْضِ جَسَدِىْ فَقَالَ كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيْبٌ أَوْ عَابِرُ سَبِيلٍ وَعُدَّ نَفْسَكَ فِيْ أَهْلِ الْقُبُوْرِ فَقَالَ لِي ابْنُ عُمَرَ إِذَا أَصْبَحْتَ فَلاَ تُحَدِّثْ نَفْسَكَ بِالْمَسَاءِ وَإِذَا أَمْسَيْتَ فَلَا تُحَدِّثْ نَفْسَكَ بِالصَّبَاحِ وَخُذْ مِنْ صِحَّتِكَ قَبْلَ سَقَمِكَ وَمِنْ حَيَاتِكَ قَبْلَ مَوْتِكَ -
ইবনু ওমর (রা.) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.)আমার শরীরের এক অংশ ধরে বললেন, ‘পৃথিবীতে মুসাফির অথবা পথযাত্রীর ন্যায় জীবনযাপন কর। আর প্রতিনিয়ত নিজেকে কবরবাসীর একজন মনে কর’। তারপর আল্লাহর রাসূল(সা.) আমাকে বললেন, ‘ইবনু ওমর, সকাল হলে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেঁচে থাকার আশা কর না এবং সন্ধ্যা হলে সকাল পর্যন্ত বেঁচে থাকার আশা কর না। আর অসুস্থতার পূর্বে সুস্থতাকে মূল্যায়ন কর এবং মরণের পূর্বে জীবনকে মূল্যায়ন কর’ (বুখারী, মিশকাত হা/৫২৭৪)।