উপদেশ ২১. সালাম আব্দুর রাযযাক বিন ইউসুফ ১ টি

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِيَّاكُمْ وَالْجُلُوسَ بِالطُّرُقَاتِ» . فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ مَا لَنَا مِنْ مَجَالِسِنَا بُدٌّ نَتَحَدَّثُ فِيهَا. قَالَ: «فَإِذَا أَبَيْتُمْ إِلَّا الْمَجْلِسَ فَأَعْطُوا الطَّرِيقَ حَقَّهُ» . قَالُوا: وَمَا حَقُّ الطَّرِيقِ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: «غَضُّ الْبَصَرِ وَكَفُّ الْأَذَى وَرَدُّ السَّلَامِ والأمرُ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْيُ عَنِ الْمُنْكَرِ.

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) রাসূল (ছাঃ) হতে বর্ণনা করেন, তোমরা রাস্তার উপর বসা হতে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখ। তাঁরা (সাহাবীগণ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের তো রাস্তার উপর বসা ব্যতীত গত্যন্তর নেই। কারণ, তথায় বসে আমরা প্রয়োজনীয় কথাবার্তা সমাধা করি। তিনি বললেন, যদি তোমরা তথায় বসতে একান্ত বাধ্যই হও, তবে রাস্তার হক আদায় করবে। তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্ল­াহ! রাস্তার হক কি? তিনি বললেন, চক্ষু বন্ধ রাখা, কাউকে কষ্ট না দেওয়া, সালামের জওয়াব দেওয়া, ভাল কাজের আদেশ করা এবং খারাপ হতে নিষেধ করা (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৬৪০)

عَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَوْلَى النَّاسِ بِاللهِ مَنْ بَدَأَ بِالسَّلَامِ.

আবু উমামা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, সেই ব্যক্তি আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় যে প্রথমে সালাম করে (আহমাদ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৬৪৬)

عَن جَرِيرٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرَّ عَلَى نِسْوَةٍ فَسَلَّمَ عَلَيْهِنَّ.

জারীর (রাঃ) বলেন, একদা নবী কারীম (ছাঃ) কতিপয় মহিলার নিকট দিয়ে গমন করলেন এবং তাদেরকে সালাম করলেন (আহমাদ, মিশকাত হা/৪৬৪৭)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا لَقِيَ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ فَلْيُسَلِّمْ عَلَيْهِ فَإِنْ حَالَتْ بَيْنَهُمَا شَجَرَةٌ أَوْ جِدَارٌ أَوْ حَجَرٌ ثُمَّ لَقِيَهُ فَلْيُسَلِّمْ عَلَيْهِ.

আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যখন তোমাদের কারো কোন মুসলমান ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ হয় তখন সে যেন তাকে সালাম করে। অতঃপর যদি তাদের উভয়ের মধ্যখানে কোন বৃক্ষ, প্রাচীর কিংবা পাথরের আড়াল পড়ে যায়, পরে পুনরায় যখন সাক্ষাৎ হয় তখনও যেন আবার সালাম করে (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৪৬৫০)

عَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «السَّلَامُ قَبْلَ الْكَلَامِ».

জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, কথাবার্তার আগেই সালাম করবে (তিরমিযী, মিশকাত হা/৪৬৫৩)

عَن قتادةَ قَالَ: قُلْتُ لِأَنَسٍ: أَكَانَتِ الْمُصَافَحَةُ فِي أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: نَعَمْ.

কাতাদাহ (রাঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূল (ছাঃ)-এর সাহাবীদের মধ্যে ‘মুসাফাহার’ প্রচলন ছিল কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ ছিল (বুখারী, মিশকাত হা/৪৬৭৭)

عَن أنس قَالَ: قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللهِ الرَّجُلُ مِنَّا يَلْقَى أَخَاهُ أَوْ صَدِيقَهُ أَيَنْحَنِي لَهُ؟ قَالَ: لَا. قَالَ: أَفَيَلْتَزِمُهُ وَيُقَبِّلُهُ؟ قَالَ: لَا. قَالَ: أَفَيَأْخُذُ بِيَدِهِ وَيُصَافِحُهُ؟ قَالَ: نَعَمْ.

আনাস (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে রাসূলুল্ল­াহ! আমাদের কেউ যখন তার কোন ভাইয়ের সাথে কিংবা কোন বন্ধুর সাথে সাক্ষাৎ করে তখন কি তার জন্য মাথা নত করবে? তিনি বললেন, না। সে আবার জিজ্ঞেস করল, তাকে কি আলিঙ্গন করবে এবং চুম্বন করবে? তিনি বললেন, না। সে পুনরায় জিজ্ঞেস করল, কি, তার হাত ধরে তার সাথে মুসাফাহ করবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৪৬৮০)

عَنِ الْبَرَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنهُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صَلى الله عليه وسلم قَالَ أَفْشُوْا السَّلاَمَ تَسْلَمُوْا.

বারা ইবনু আয়েব (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা পরস্পরে সালামের প্রচলন কর, তাহলে নিরাপদ থাকবে (তারগীব হা/২৬৯৬)

عَنْ أَبِيْ يُوْسُفَ عَبدِ اللهِ بْنِ سَلاَمٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُ قَالَ سَمِعتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَفشُوْا السَّلاَمَ وَأَطْعِمُوْا الطَّعَامَ وَصَلُّوْا بِاللَّيلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ تَدْخُلُوْا الْجَنَّةَ بِسَلاَمٍ.

আবু ইউসুফ আব্দুললাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি তিনি বলছিলেন, হে মানুষ! তোমরা পরস্পরে সালামের প্রচলন কর এবং দুঃস্থ-গরীবকে খাদ্য প্রদান কর। আর মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন ছালাত আদায় কর। তাহলে তোমরা নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করবে (তারগীব হা/২৬৯৭)

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِيَ الله عنهما قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اُعْبُدُوْا الرَّحْمَنَ وَأَفْشُوْا السَّلاَمَ وَأَطْعِمُوْا الطَّعَامَ تَدْخُلُوْا الْجِنَانَ.

আব্দুল্লাহ ইবনু (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা রহমানের ইবাদত কর এবং পরস্পরে সালামের প্রচলন কর। আর খাদ্য প্রদান কর, তাহলে তোমরা জান্নাতের মধ্যস্থলে প্রবেশ করবে (তারগীব হা/২৬৯৮)

عَنْ أَبِيْ الدَّرْدَاءِ رضي الله عنه قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَفشُوْا السَّلاَم َكَيْ تَعْلَوْا

আবু দারদা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেন, তোমরা পরস্পরে সালামের প্রচলন কর, তাহলে তোমরা সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হবে (তারগীব হা/২৭০১)

عَنْ أَبِيْ أُمَامَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أَوْلَى النَّاسِ بِاللهِ مَنْ بَدَأَهُمْ بِالسَّلاَمِ.

আবু উমামা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আল্লাহর নিকটে মানুষের মধ্যে সেই ব্যক্তি সবচেয়ে প্রিয় যে ব্যক্তি আগেই সালাম প্রদান করে (তারগীব হা/২৭০৩)

عَنْ أَبِيْ هُرَيرَةَ رضي الله عنه قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَعْجَزُ النَّاسِ مَنْ عَجَزَ فِيْ الدُّعَاءِ وَأَبْخَلُ النَّاسِ مَنْ بَخِلَ بِالسَّلاَمِ.

আবু হুরায়রা (রাঃ) রাসূল (ছাঃ) বলেন, মানুষের মধ্যে সবচেয়ে অপারগ ব্যক্তি সেই, যে দো‘আ প্রার্থনা করতে অপারগতা প্রকাশ করে। আর মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কৃপণ সেই, যে সালাম প্রদানে কৃপণতা করে (তারগীব হা/২৭১৪)

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مُغَفَّلٍ رضي الله عنه قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَسْرَقُ النَّاسِ اَلَّذِيْ يَسْرِقُ صَلاَتَهُ قِيْلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَكَيْفَ يَسْرِقُ صَلاَتَهُ قَالَ لاَ يُتِمُّ رُكُوْعَهَا وَلاَ سُجُوْدَهَا وَأَبْخَلُ النَّاسِ مَنْ بَخِلَ بِالسَّلاَمِ.

আব্দুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, সবচেয়ে বড় চোর সেই, যে তার ছালাত চুরি করে। কেউ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! কিভাবে সে তার ছালাত চুরি করে? রাসূল (ছাঃ) বললেন, যে তার ছালাতের রুকূ এবং সিজদা পূর্ণ করে। আর মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কৃপণ সেই, যে সালাম প্রদানে কৃপণতা করে (তারগীব হা/২৭১৫)

عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اَلسَّلاَمُ قَبلَ السَّؤَالِ؛ فَمَنْ بَدَأَكُمْ بِالسَّؤَالِ قَبْلَ السَّلاَمِ فَلاَ تُجِيْبُوْهُ.

ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, জিজ্ঞাসা বা কথপোকথনের পূর্বে সালাম হতে হবে। অতএব যে ব্যক্তি সালামের পূর্বেই জিজ্ঞাসা বা কথপোকথন শুরু করবে তোমরা তার কথার উত্তর দিয়ো না (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮১৬)। অত্র হাদীছ প্রমাণ করে যে, বক্তব্য বা যে কোন কথার পূর্বে সালাম হতে হবে।

عَنْ جَابِرِ بنِ عَبدِ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم السَّلاَمُ قَبْلَ الْكَلاَمِ.

জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, কথার পূর্বে সালাম হতে হবে (তিরমিযী হা/২৬৯৯)। উল্লেখ্য যে, অত্র হাদীছটি যঈফ হলেও পূর্বের হাদীছের সমার্থবোধক। কাজেই অত্র হাদীছটি আমলযোগ্য।

عَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ أَصحَابُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذَا تَلاَقُوْا تَصَافَحُوْا وَإِذَا قَدِمُوْا مِنْ سَفَرٍ تَعَانَقُوْا.

আনাস (রাঃ) বলেন, নবী কারীম (ছাঃ)-এর ছাহাবীগণ পরস্পরে সাক্ষাৎ করলে মুছাফাহা করতেন এবং কোন সফর থেকে আসলে কাঁধে কাঁধ মিলাতেন (সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৬৪৭)

عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْكَامَ قَالَ كُنَّا إِذَا سَلَّمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه و سلم عَلَيْنَا قُلْنَا : وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ وَمَغْفِرَتُهُ.

যায়েদ ইবনু আরকাম (রাঃ) বলেন, যখন নবী কারীম (ছাঃ) আমাদেরকে সালাম দিতেন, তখন আমরা বলতাম, وَعَلَيْكَ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ وَمَغْفِرَتُهُ ‘আপনার উপরে আল্লাহর শামিত্ম, রহমত, বরকত ও ক্ষমা অবতীর্ণ হোক (সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৪৪৯)

عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تَأْذِنُوْا لِمَنْ لَمْ يَبْدَأْ بِالسَّلاَمِ.

জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রথমে সালাম প্রদান না করে, তাকে তোমরা কথা বলার বা প্রবেশের অনুমতি দিয়ো না (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৮১৭)

অত্র হাদীছগুলি দ্বারা স্পষ্টরূপে প্রমাণিত হয় যে, কথা বলার পূর্বে অথবা কোন স্থানে বা বাড়ীতে প্রবেশের পূর্বে সালাম প্রদান করা যরূরী।