عَنْ أَبِىْ الدَّرْدَاءِ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ أَثْقَلَ شَىْءٍ يُوْضَعُ فِىْ مِيْزَانِ الْمُؤْمِنِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ خُلُقٌ حَسَنٌ وَإِنَّ اللهَ يَبْغَضُ الْفَاحِشَ الْبَذِىءَ.
আবু দারদা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘ক্বিয়ামতের দিন মুমিনের পাল্লায় সর্বাপেক্ষা ভারী যে জিনিসটি রাখা হবে, তা হল উত্তম চরিত্র। আর আল্লাহ তা‘আলা অশ্লীলভাষী দুশ্চরিত্রকে ঘৃণা করেন’ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫০৮১)।
عَنْ عَائِشَةَ رَحِمَهَا اللهُ قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ إِنَّ الْمُؤْمِنَ لَيُدْرِكُ بِحُسْنِ خُلُقِهِ دَرَجَةَ الصَّائِمِ الْقَائِمِ.
আয়েশা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ‘ঈমানদার ব্যক্তিরা তাদের উত্তম চরিত্র দ্বারা নফল ছিয়াম পালকারী ও রাতে ইবাদকারীর মর্যাদা লাভ করবে’ (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫০৮২)।
عَنْ أَبِىْ ذَرٍّ قَالَ قَالَ لِى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اتَّقِ اللهَ حَيْثُمَا كُنْتَ وَأَتْبِعِ السَّيِّئَةَ الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا وَخَالِقِ النَّاسَ بِخُلُقٍ حَسَنٍ.
আবু যার (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) আমাকে বললেন, ‘তুমি যেখানে থাকবে আল্লাহকে ভয় করবে। কোন কারণে মন্দ কাজ হয়ে গেলে তার পর পরই ভাল কাজ করবে। ভাল কাজ পাপকে মুছে ফেলবে। আর সদাচরণের মাধ্যমে মানুষের সাথে মিলে মিশে থাকবে’ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫০৮৩)।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: اَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِمَنْ يَحْرُمُ عَلَى النَّارِ وَبِمَنْ تَحْرُمُ النَّارُ عَلَيْهِ؟ عَلَى كُلِّ هَيِّنٍ لَيِّنٍ قَرِيبٍ سَهْلٍ.
৪৮৬২ আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন লোকের সংবাদ দিব না? যার উপর জাহান্নামের আগুন হারাম হয়ে যায়; আর আগুনও তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। এমন প্রত্যেক ব্যক্তি যার মেজায নরম, স্বভাব কোমল, মানুষের নিকটতম (মিশুক) এবং আচরণ সরল সহজ (আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৫০৮৪)।
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الْمُؤْمِنُ غِرٌّ كَرِيْمٌ وَالْفَاجِرُ خِبٌّ لَئِيْمٌ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘ঈমানদার মানুষ সরল ও ভদ্র হয়। পক্ষান্তরে পাপী মানুষ ধূর্ত ও হীন চরিত্রের হয়’ (তিরমিযী হা/১৯৬৪; মিশকাত হা/৫০৮৫)।
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَجُلاً قَالَ لِلنَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْصِنِىْ. قَالَ لاَ تَغْضَبْ. فَرَدَّ ذَلِكَ مِرَارًا، قَالَ لاَ تَغْضَبْ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-কে বললেন, আমাকে উপদেশ দিন। রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘তুমি রাগ কর না। সে কয়েকবার একই কথা জিজ্ঞেস করল, রাসূল (ছাঃ) প্রত্যেকবার একই জবাব দিলেন, তুমি রাগ কর না’ (বুখারী, মিশকাত হা/৫১০৪)।
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَيْسَ الشَّدِيْدُ بِالصُّرَعَةِ، إِنَّمَا الشَّدِيْدُ الَّذِىْ يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘ঐ ব্যক্তি শক্তিশালী নয় যে প্রতিপক্ষকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিতে পারে। বরং সে ব্যক্তিই প্রকৃত শক্তিশালী, যে রাগের সময় নিজেকে সংযত করে রাখতে পারে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৫)।
حَارِثَةَ بْنَ وَهْبٍ الْخُزَاعِىِّ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ الْجَنَّةِ كُلُّ ضَعِيْفٍ مُتَضَعَّفٍ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهِ لأَبَرَّهُ أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِأَهْلِ النَّارِ كُلُّ جَوَّاظٍ زَنِيْمٍ مُتَكَبِّرٍ.
হারিছা ইবনু ওহাব (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতী লোকের কথা বলব না? তারা হল সরলতার দরুণ দুর্বল, যাদেরকে লোকেরা হীন, তুচ্ছ ও দুর্বল মনে করে। আল্লাহ তাদেরকে এত ভালবাসেন যে, তারা কোন বিষয়ে কসম করলে তাদেরকে সত্যে পরিণত করেন। তারপর নবী করীম (ছাঃ) বললেন, আমি তোমাদেরকে কি জাহান্নামীদের কথা বলব না? তারা হল, যারা অনর্থক কথা নিয়ে বিবাদ করে, আর যারা বদমেযাজী অহংকারী’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৬)।
عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ يَدْخُلُ النَّارَ أَحَدٌ فِىْ قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِّنْ إِيْمَانٍ وَلاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ أَحَدٌ فِىْ قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِّنْ كِبْرِ.
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘এমন কোন ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করবে না, যার অন্তরে সরিষা পরিমাণ ঈমান থাকবে। পক্ষান্তরে এমন কোন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যার অন্তরে সরিষা পরিমাণ অহংকার থাকবে’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৭)।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِى قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِّنْ كِبْرٍ. قَالَ رَجُلٌ إِنَّ الرَّجُلَ يُحِبُّ أَنْ يَكُوْنَ ثَوْبُهُ حَسَنًا وَنَعْلُهُ حَسَنَةً. قَالَ: إِنَّ اللهَ جَمِيْلٌ يُحِبُّ الْجَمَالَ الْكِبْرُ بَطَرُ الْحَقِّ وَغَمْطُ النَّاسِ.
আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তখন এক ব্যক্তি বলল, সবাই তো পছন্দ করে যে তার পোশাক ভাল হোক, তার জুতা সুন্দর হোক, এটাও কি অহংকার? তিনি বললেন, আল্লাহ নিজে সুন্দর এবং সুন্দরকে পছন্দ করেন। অহংকার হল, হককে অহংকার করে পরিত্যাগ করা এবং মানুষকে হীন ও তুচ্ছ মনে করা’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৮)।
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يُزَكِّيْهِمْ، وَفِىْ رِوَايَةٍ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ، وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ شَيْخٌ زَانٍ وَمَلِكٌ كَذَّابٌ وَعَائِلٌ مُسْتَكْبِرٌ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর মানুষের সাথে আল্লাহ কথা বলবেন না। তাদেরকে পাপ হতে পবিত্র করবেন না। অন্য বর্ণনায় আছে, তাদের দিকে তাকাবেন না, তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। (১) বৃদ্ধ ব্যাভিচারী (২) মিথ্যাবাদী দায়িত্বশীল ও (৩) অহংকারী ফকীর’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫১০৯)।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه و سلم قَالَ ثَلَاثُ مُنَجِّيَاتٍ وَثَلَاثُ مُهْلِكَاتٍ فَأَمَّا الْمُنَجِّيَاتُ فَتَقْوَى اللهِ فِي السِّرِ وَالْعَلَانِيَةِ وَالْقَوْلُ بِالْحَقِّ فِي الرِّضَا وَالسَّخْطِ وَالْقَصْدِ فِي الْغِنَى وَالْفَقْرِ وَأَمَّا الْمُهْلِكَاتُ فَهَوَى مُتَّبِعٌ وَشُحُّ مُطَاعٍ وَإِعْجَابُ الْمَرْءِ بِنَفْسِهِ وَهِيَ أَشَدُّهُنَّ-
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তিনটি জিনিস মুক্তিদানকারী এবং তিনটি জিনিস ধ্বংসসাধনকারী। মুক্তিদানকারী জিনিসগুলো হল, প্রকাশ্যে ও গোপনে আল্লাহকে ভয় করা। খুশী ও অখুশী উভয় অবস্থায় সত্য কথা বলা এবং ধনী ও দরিদ্র উভয় অবস্থায় মধ্যপন্থা অবলম্বন করা। আর ধ্বংস সাধনকারী জিনিসগুলি হল, প্রবৃত্তির অনুসারী হওয়া, লোভ-লালসার দাস হওয়া বা কৃপণ এবং কোন ব্যক্তি নিজ অহমিকায় লিপ্ত হওয়া এবং তা হল সর্বাপেক্ষা জঘন্য (শু‘আবুল ঈমান, বাংলা মিশকাত হা/৪৮৯৫)।