আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا اتَّقُوا اللهَ وَكُوْنُوْا مَعَ الصَّادِقِيْنَ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আর সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও’ (তওবা ১১৯)। তিনি অন্যত্র বলেন, وَقُلْ رَبِّ أَدْخِلْنِيْ مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِيْ مُخْرَجَ صِدْقٍ وَاجْعَلْ لِيْ مِنْ لَدُنْكَ سُلْطَانًا نَصِيْرًا ‘হে নবী! আপনি বলুন, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে যেখানেই নিয়ে যাও সত্যতা সহকারে নিয়ে যাও। আর যেখান হতেই আমাকে বের কর সত্যতা সহকারেই বের কর। আর তোমার পক্ষ থেকে শক্তিশালী সাহায্যকারী প্রদান কর’ (ইসরা ৮০)।
তিনি আরো বলেন, وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيْقًا نَبِيًّا ‘আর আপনি কিতাবে ইবরাহীমকে স্মরণ করুন, নিশ্চয়ই তিনি সত্য নবী ছিলেন’ (মারিয়াম ৪১)। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, إِنَّ اللهَ لاَ يَهْدِيْ مَنْ هُوَ مُسْرِفٌ كَذَّابٌ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারী মিথ্যুককে সঠিক পথ দেখান না’ (গাফির/মুমিন ২৮)। তিনি আরো বলেন, فَلاَ تُطِعِ الْمُكَذِّبِيْنَ ‘কাজেই আপনি মিথ্যুকদের মানবেন না’ (ক্বালাম ৮)। অন্যত্র তিনি বলেন, وَلاَ تُطِعْ كُلَّ حَلاَّفٍ مَهِيْنٍ، هَمَّازٍ مَشَّاءٍ بِنَمِيْمٍ، مَنَّاعٍ لِلْخَيْرِ مُعْتَدٍ أَثِيْمٍ، عُتُلٍّ بَعْدَ ذَلِكَ زَنِيْمٍ- ‘আপনি এমন ব্যক্তিকে মানবেন না যে খুব গুরুত্বহীন এবং বেশী বেশী মিথ্যা কসম করে। যে ব্যক্তি গালাগাল করে অভিশাপ দেয়, চোগলখোরী করে বেড়ায়। ভালকাজে বাধা দেয়, যুলুম ও সীমালংঘনমূলক কাজ করে বেড়ায়, বড়উ অসৎকর্মশীল, চরম চরিত্রহীন এর পরেও বদজাত (ক্বালাম ১০-১৩)।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تَقُولُوا لِلْمُنَافِقِ سَيِّدٌ فَإِنَّهُ إِنْ يَكُ سَيِّدًا فَقَدْ أَسْخَطْتُمْ رَبَّكُمْ عَزَّ وَجَلَّ.
বুরায়দা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা মুনাফিক মানুষকে নেতা হিসাবে গ্রহণ কর না। যদি নেতা মুনাফিক হয়, তাহলে তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে অসন্তুষ্ট করলে। অন্য বর্ণনায় আছে যখন কোন ব্যক্তি মিথ্যুক মুনাফিক ব্যক্তিকে বলে হে আমার নেতা! তখন সে তার প্রতিপালককে রাগান্বিত করল’ (আবুদাঊদ হা/৪৯৭৭; আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৪১৭৫)।
عَنْ أَبِى أُمَامَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَا زَعِيمٌ بِبَيْتٍ فِى رَبَضِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْمِرَاءَ وَإِنْ كَانَ مُحِقًّا وَبِبَيْتٍ فِى وَسَطِ الْجَنَّةِ لِمَنْ تَرَكَ الْكَذِبَ وَإِنْ كَانَ مَازِحًا وَبِبَيْتٍ فِى أَعْلَى الْجَنَّةِ لِمَنْ حَسَّنَ خُلُقَهُ.
আবু উমামা বাহেলী (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, আমি সেই ব্যক্তির জন্য জান্নাতে একটি ঘর নিয়ে দেয়ার জন্য যামীন, যে তর্ক পরিহার করে হক হলেও। আর একটি ঘর জান্নাতের মাঝামাঝিতে নিয়ে দেয়ার জন্য যামীন, যে মিথ্যা পরিহার করে এবং আরও একটি ঘর জান্নাতের সর্বোচ্চে নিয়ে দেয়ার জন্য যিম্মেদার, যে তার চরিত্রকে সুন্দর করবে’ (আবুদাঊদ হা/৪৮০০; বায়াহাক্বী, আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৪১৭৯)।
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ عَنْ أَبِي قُرَادٍ السُّلَمِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا عِنْدَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَدَعَا بِطَهُورٍ فَغَمَسَ يَدَهُ فِيهِ فَتَوَضَّأَ، فَتَتَّبَعْنَاهُ، فَحَسَوْنَاهُ، فَلَمَّا فَرَغَ قَالَ مَا حَمَلَكُمْ عَلَى مَا صَنَعْتُمْ ؟ قُلْنَا: حُبُّ اللهِ تَعَالَى وَرَسُولِهِ قَالَ فَإِنْ أَحْبَبْتُمْ أَنْ يُحِبَّكُمُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ وَرَسُولَهُ، فَأَدُّوا إِذَا ائْتُمِنْتُمْ، وَاصْدُقُوا إِذَا حَدَّثْتُمْ، وَأَحْسِنُوا جِوَارَ مَنْ جَاوَرَكُمْ.
আব্দুর রহমান ইবনু হারিছ (রাঃ) বলেন, আমরা একদা নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকটে ছিলাম। তিনি ওযূর পানি নিয়ে ডাকলেন। তিনি তাতে হাত ডুবালেন এবং ওযূ করলেন। আমরা তাঁকে অনুসরণ করলাম এবং তাঁর নিকট হতে অঞ্জলী ভরে ওযূর পানি নিলাম। তিনি বললেন, তোমরা এ কাজ করতে উৎসাহিত হলে কেন? আমরা বললাম, এটা হল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ভালবাসা। তিনি বললেন, তোমরা যদি চাও যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমাদেরকে ভালবাসবেন তাহলে তোমাদের নিকট আমানত রাখা হলে, তা প্রদান কর। কথা বললে, সত্য বল। তোমাদের প্রতিবেশীর সাথে ভাল আচরণ কর’ (ত্বাবারাণী, আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৪১৮০)।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَرْبَعٌ إِذَا كُنَّ فِيكَ فَلاَ عَلَيْكَ مَا فَاتَكَ مِنَ الدُّنْيَا حِفْظُ أَمَانَةٍ وَصِدْقُ حَدِيْثٍ وَحُسْنُ خَلِيقَةٍ وَعِفَّةٌ فِى طُعْمَةٍ.
আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যখন তোমার মাঝে চারটি জিনিস থাকবে তখন দুনিয়ার সবকিছু হারিয়ে গেলেও তোমার কোন সমস্যা নেই। (১) আমানত রক্ষা করা (২) সত্য কথা বলা (৩) সুন্দর চরিত্র (৪) ধৈর্য ধারণ করা’ (আহমাদ, আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৪১৮১)।
عَنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ حَفِظْتُ مِنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم دَعْ مَا يَرِيبُكَ إِلَى مَا لاَ يَرِيبُكَ فَإِنَّ الصِّدْقَ طُمَأْنِينَةٌ وَالْكَذِبَ رِيبَةٌ.
হাসান ইবনু আলী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ) থেকে অবগত হয়েছি, তিনি বলেছেন, ‘তুমি সন্দেহযুক্ত কথা ও কর্ম ছেড়ে যাতে সন্দেহ নেই সে দিকে ফিরে যাও। নিশ্চয়ই সত্য প্রশান্তির নাম এবং মিথ্যা সন্দেহ ও অশান্তির নাম’ (তিরমিযী, আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৪১৮২)।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ قِيلَ لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَىُّ النَّاسِ أَفْضَلُ قَالَ كُلُّ مَخْمُومِ الْقَلْبِ صَدُوقِ اللِّسَانِ. قَالُوا صَدُوقُ اللِّسَانِ نَعْرِفُهُ فَمَا مَخْمُومُ الْقَلْبِ قَالَ هُوَ التَّقِىُّ النَّقِىُّ لاَ إِثْمَ فِيْهِ وَلاَ بَغْىَ وَلاَ غِلَّ وَلاَ حَسَدَ.
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-কে বলা হল, সবচেয়ে ভাল মানুষ কে? তিনি বলেন, প্রত্যেক হিংসা-বিদ্বেষ মুক্ত অন্তরের অধিকারী এবং সত্য কথার অধিকারী ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম মানুষ। ছাহাবীগণ বললেন, আমরা সত্য কথার অধিকারী জানি। কিন্তু হিংসা-বিদ্বেষ মুক্ত অন্তর কি জিনিস তা জানি না। তিনি বললেন, যে ব্যক্তি স্বচ্ছ ও পরহেযগার। যার মধ্যে (১) পাপ নেই, পাপ হলেই ক্ষমা চায় (২) সীমালংঘন নেই (৩) খিয়ানত নেই (৪) হিংসা নেই (ইবনু মাজাহ হা/৪২১৬)।
عَنْ أَبِيْ بَكْرٍ الصِّدِّيْقِ رضي الله عنه قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْكُمْ بِالصِّدْقِ فَإِنَّهُ مَعَ الْبِرِّ وَهُمَا فِى الْجَنَّةِ وَإِيَّاكُمْ وَالْكَذِبَ فَإِنَّهُ مَعَ الْفُجُورِ وَهُمَا فِى النَّارِ.
আবু বকর ছিদ্দীক (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা সত্য গ্রহণ কর। সত্য নেকীর সাথে রয়েছে। আর উভয়টি জান্নাতে যাবে। আর মিথ্যা থেকে বেঁচে থাক। মিথ্যা পাপের সাথে রয়েছে। উভয়ই জাহান্নামে যাবে (ইবনু হিববান, আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৪১৮৬)।
عَنْ أَبِيْ بَكْرٍ الصِّدِّيْقِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ يَقُولُ إِيَّاكُمْ وَالْكَذِبَ فَإِنَّ الْكَذِبَ مُجَانِبٌ لِلإِيمَانِ.
আবু বকর ছিদ্দীক (রাঃ) বলেন, ‘তোমরা মিথ্যা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয়ই মিথ্যা ঈমানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে’ (বায়হাক্বী কুবরা হা/২০৬১৫)।
عَن أَبِى هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ مَنْ قَالَ لِصَبِىٍّ تَعَالَ هاَكَ ثُمَّ لَمْ يُعْطِهِ فَهِىَ كَذْبَةٌ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে তার বাচ্চাকে বলল, আস নাও। অতঃপর তাকে কিছু দিল না। সে একজন মিথ্যুক মহিলা’ (আহমাদ হা/৯৮৩৫; আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৪২০৭)।