عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيه وسَلَّم فِيْمَا رَوَى عَنْ اللهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى أَنَّهُ قَالَ... يَا عِبَادِيْ إِنَّكُمْ تُخْطِئُوْنَ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ وَأَنَا أَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِيْعًا فَاسْتَغْفِرُوْنِيْ أَغْفِرْ لَكُمْ-
আবু যার গিফারী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,... ‘হে আমার বান্দারা! তোমরা অপরাধ করে থাক রাত-দিন, আমি সমস্ত অপরাধ মাফ করে দেই। সুতরাং তোমরা আমার নিকট ক্ষমা চাও, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিব’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২৩২৬; বাংলা মিশকাত হা/২২১৮)। এ হাদীছ দ্বারা বুঝা গেল যে, আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর নিকট সঠিক পথ, খাদ্য, বস্ত্র ও ক্ষমা চাইতে বলেছেন। আর এসব কিছু তিনি প্রদান করবেন বলে ওয়াদা করেছেন। কাজেই তাঁর কাছে আমাদের চাওয়া উচিত।
عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ فِيْ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ رَجُلٌ قَتَلَ تِسْعَةً وَتِسْعِيْنَ إِنْسَانًا ثُمَّ خَرَجَ يَسْأَلُ فَأَتَى رَاهِبًا فَسَأَلَهُ فَقَالَ لَهُ هَلْ مِنْ تَوْبَةٍ قَالَ لَا فَقَتَلَهُ فَجَعَلَ يَسْأَلُ فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ ائْتِ قَرْيَةَ كَذَا وَكَذَا فَأَدْرَكَهُ الْمَوْتُ فَنَاءَ بِصَدْرِهِ نَحْوَهَا فَاخْتَصَمَتْ فِيهِ مَلَائِكَةُ الرَّحْمَةِ وَمَلَائِكَةُ الْعَذَابِ فَأَوْحَى اللهُ إِلَى هَذِهِ أَنْ تَقَرَّبِي وَأَوْحَى اللهُ إِلَى هَذِهِ أَنْ تَبَاعَدِي وَقَالَ قِيسُوا مَا بَيْنَهُمَا فَوُجِدَ إِلَى هَذِهِ أَقْرَبَ بِشِبْرٍ فَغُفِرَ لَهُ-
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘বানী ইসরাঈলের মধ্যে এক ব্যক্তি ছিল যে, নিরানববই জন মানুষকে হত্যা করেছিল। অতঃপর সে ফৎওয়া জিজ্ঞেস করার জন্য বের হল এবং একজন দরবেশের নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করল, এরূপ ব্যক্তির জন্য তওবা আছে কি? তিনি বললেন, নেই। সে তাকেও হত্যা করল এবং বার বার লোকদেরকে জিজ্ঞেস করতে থাকল। এক ব্যক্তি বলল, অমুক গ্রামে যাও, অমুককে জিজ্ঞেস কর। এসময় তার মউত এসে গেল এবং মৃত্যুকালে সে স্বীয় বক্ষকে ঐ গ্রামের দিকে কিছু বাড়িয়ে দিল। অতঃপর রহমতের ফিরিশতা ও আযাবের ফিরিশতা দল পরস্পর ঝগড়া করতে লাগল, কারা তার রূহ নিয়ে যাবে। এসময় আল্লাহ তা‘আলা ঐ গ্রামকে বললেন, তুমি মৃতের নিকট আস আর তার নিজ গ্রামকে বললেন, তুমি দূরে সরে যাও। অতঃপর ফিরিশতাদের বললেন, তোমরা উভয় দিকের দূরত্ব মেপে দেখ। মেপে তাকে এই গ্রামের দিকে এক বিঘত নিকটে পাওয়া গেল। সুতরাং তাকে মাফ করে দেয়া হল’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৩২৭; বাংলা মিশকাত হা/২২১৯)।
এ হাদীছ দ্বারা বুঝা গেল যে, কোন অপরাধী আল্লাহর নিকট খালেছ অন্তরে ক্ষমা চাইলে, তাকে ক্ষমা করা হবে। এই লোকটি তওবা করার সুযোগ পায়নি, ক্ষমা চাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল মাত্র। তবুও আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন এবং ক্ষমা করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ ফিরিশতাদের সামনে এক অভিনব কৌশল অবলম্বন করলেন। এত বড় অপরাধীকে যদি আল্লাহ তা‘আলা কৌশলে ক্ষমা করেন, তাহলে আমাদের কেন ক্ষমা করবেন না। আমরা খালেছ অন্তরে তওবা করলে তিনি নিশ্চয়ই আমাদেরকে ক্ষমা করবেন। বরং আমরা ক্ষমা চাওয়ার ইচ্ছা বা চেষ্টা করলে আল্লাহ আমাদেরকে কৌশলে ক্ষমা করে দিবেন।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ والَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ، لَوْ لَمْ تُذْنِبُوْا، لَذَهَبَ اللهُ بِكُمْ، وَجَاءَ بِقَوْمٍ يُذْنِبُوْنَ، فَيَسْتَغْفِرُوْنَ اللهُ تَعَالَى، فَيَغْفِرُ لَهُمْ-
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘ঐ সত্ত্বার কসম, যার হাতে আমার আত্মা রয়েছে! যদি তোমরা গুনাহ না করতে আল্লাহ তোমাদের সরিয়ে দিতেন এবং এমন এক জাতিকে সৃষ্টি করতেন যারা গুনাহ করে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করত। আর আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দিতেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২৩২৮; বাংলা মিশকাত হা/২২২০)।
ব্যাখ্যা : হাদীছে গুনাহর অনুমতি দেয়া হয়নি বরং ক্ষমার প্রশস্ততা বুঝানো হয়েছে। কোন মানুষ যেন গুনাহ করে নিরাশ না হয়। কারণ গুনাহ করার ক্ষমতা মানুষের আছে ফিরিশতাদের নেই। আর এ ক্ষমতা আল্লাহ দিয়েছেন। অতএব খালেছ অন্তরে ক্ষমা চাইলে নিশ্চিত ক্ষমা হবে।