عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ قِيْلَ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ النَّاسِ أَفْضَلُ قَالَ كُلُّ مَخْمُوْمِ الْقَلْبِ صَدُوْقِ اللِّسَانِ قَالُوْا صَدُوْقُ اللِّسَانِ نَعْرِفُهُ فَمَا مَخْمُوْمُ الْقَلْبِ قَالَ هُوَ التَّقِيُّ النَّقِيُّ لَا إِثْمَ فِيْهِ وَلَا بَغْيَ وَلَا غِلَّ وَلَا حَسَدَ-
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর বলেন, একদা রাসূল (ছাঃ)-কে বলা হল, সবচেয়ে উত্তম মানুষ কে? তিনি বললেন, প্রত্যেক মাখমূমুল ক্বালব এবং ছদূকুল লিসান। ছাহাবীগণ বললেন, আমরা জিহবার সত্যবাদিতা বুঝি কিন্তু মাখমূমুল কবালব বুঝি না। নবী করীম (ছাঃ) বললেন, সে হচ্ছে এমন ব্যক্তি যে পরহেযগার এবং স্বচ্ছ। আর পরহেযগার এমন ব্যক্তি (১) যার মধ্যে পাপ নেই, (২) সীমালংঘন নেই (৩) খিয়ানত নেই (৪) হিংসা নেই’ (ইবনু মাজাহ হা/৪২১৬)।
অত্র হাদীছে পরহেযগার হওয়ার চারটি গুণ বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথমতঃ যার মধ্যে পাপ নেই। অর্থাৎ কোন কারণে পাপ হলে তাড়াতাড়ি তওবা করে। দ্বিতীয়তঃ যার মধ্যে সীমলংঘন নেই। অর্থাৎ যে কোন ছোট বা বড় কাজে বাড়াবাড়ি করে না। তৃতীয়তঃ যার মধ্যে খিয়ানত নেই। অর্থাৎ যে কোন ব্যাপারে অর্থের বা দায়িত্বের ক্ষেত্রে খিয়ানত করে না। চতুর্থতঃ যার মধ্যে হিংসা নেই। অর্থাৎ যে কোন বিষয়ে যে কোন ব্যক্তির প্রতি হিংসা করে না।
عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ مُعَاذًا إِلَى الْيَمَنِ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَوْصِنِيْ قَالَ عَلَيْكَ بِتَقْوَى اللهِ مَا اسْتَطَعْتَ وَاذْكُرِ اللهَ عِنْدَ كُلِّ حَجَرٍ وَشَجَرٍ وَإِذَا عَمِلْتَ سَيِّئَةً فَأحْدُثْ عِنْدَهَا تَوْبَةَ السِّرِّ بِالسِّرِّ وَالْعَلاَنِيَةِ بِالْعَلاَنِيَةِ-
আতা ইবনে ইয়াসার (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) যখন মু‘আয (রাঃ)-কে ইয়ামান পাঠালেন, তখন মু‘আয বলেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাকে কিছু উপদেশ দিন। নবী করীম (ছাঃ) বললেন, তোমার জন্য যথাসম্ভব তাক্বওয়া অবলম্বন করা যরূরী। আর আল্লাহকে স্মরণ কর প্রত্যেক পাথর ও গাছের নিকট। আর কোন পাপ কাজ করলে তার জন্য তওবা কর। পাপ প্রকাশ্যে হলে তওবা প্রকাশ্যে কর। পাপ গোপনে হলে তওবা গোপনে কর’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৩৩২০)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, মানুষকে সম্ভবপর পরহেযগারিতা অবলম্বন করতে হবে। সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। পাপ হলেই তওবা করতে হবে। সামাজিক পাপ হলে সমাজে তওবা করতেই হবে এবং গোপনে পাপ হলে গোপনে তওবা করতে হবে।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِرَجُلٍ أُوصِيْكَ بِتَقْوَى اللهِ وَالتَّكْبِيْرِ عَلَى كُلِّ شَرَفٍ-
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) একজন ব্যক্তিকে বললেন, আমি তোমাকে আল্লাহভীতি অবলম্বন করার আদেশ করছি। আর প্রত্যেক উঁচু স্থানে আল্লাহু আকবার বলার জন্য বলছি’ (ইবনু মাজাহ হা/২৭৭১, হাদীছ ছহীহ)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, মানুষের জন্য তাকওয়াশীল হওয়া এক যরূরী কর্তব্য এবং প্রত্যেক উঁচু স্থানে উঠলে ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে হবে।
عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُوصِيْكَ بِتَقْوَى اللهِ، فَإِنَّهُ رَأْسُ كُلِّ شَىْءٍ، وَعَلَيْكَ بِالْجِهَادِ، فَإِنَّهُ رَهْبَانِيَّةُ الإِسْلاَمِ، وَعَلَيْكَ بِذِكْرِ اللهِ، وَتِلاَوَةِ الْقُرْآنِ، فَإِنَّهُ رَوْحُكَ فِى السَّمَاءِ، وَذِكْرُكَ فِى الأَرْضِ-
জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, হে জাবের! আমি তোমাকে তাকওয়াশীল হওয়ার জন্য উপদেশ দিচ্ছি। নিশ্চয়ই তাক্বওয়াই হচ্ছে সব কিছুর কল্যাণের মূল। তোমার উপর জিহাদ যরূরী। কারণ জিহাদই হচ্ছে ইসলামের বৈরাগ্য। আল্লাহর যিকর কর এবং কুরআন তেলাওয়াত কর। কারণ এ দু’টি হচ্ছে আকাশে শান্তি লাভের মাধ্যম এবং যমীনে সুখ্যাতি অর্জনের মাধ্যম’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৫৫৫)। অত্র হাদীছে নবী করীম (ছাঃ) মানুষকে তাক্বওয়া অবলম্বন করার জন্য আদেশ করেন এবং বলেন, তাক্বওয়াই হচ্ছে সব কল্যাণের মূল। জিহাদ যরূরী, কারণ জিহাদই হচ্ছে ইসলামে বৈরাগ্য। আর কুরআন তেলাওয়াত ও যিকিরের পরিণাম হচ্ছে দুনিয়াতে সুনাম অর্জন করা এবং পরকালে জান্নাত অর্জন করা।