عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللهَ لَا يَنْظُرُ إِلَى صُوَرِكُمْ وَأَمْوَالِكُمْ وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وَأَعْمَالِكُمْ-
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের বাহ্যিক আকৃতি ও সম্পদ দেখেন না; বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমলের প্রতি তাকান’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৫০৮৩)।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ لَا يَظْلِمُهُ وَلَا يَخْذُلُهُ وَلَا يَحْقِرُهُ التَّقْوَى هَاهُنَا وَيُشِيرُ إِلَى صَدْرِهِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ-
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই। কাজেই তার উপর অত্যাচার করবে না, তাকে লজ্জিত করবে না এবং তাকে তুচ্ছ মনে করবে না। আল্লাহর ভয় এখানে থাকে। একথা বলে তিনি তিনবার নিজের বক্ষের দিকে ইশারা করলেন’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭৪২)। অত্র হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, পরহেযগারিতা মানুষের অন্তরের ব্যাপার। অন্তরে পরহেযগারিতা থাকলে কথা ও কাজে তা প্রকাশ পাবে। এজন্য নবী করীম (ছাঃ) তিনবার বুকের দিকে ইশারা করে বললেন, পরহেযগারিতা মানুষের বুকের মধ্যে রয়েছে। মন ভাল আছে, পরিষ্কার আছে এই দোহাই দিয়ে নারী-পুরুষ, যুবক-যুবতী একাকার হয়ে চলবে, অবাধে মেলামেশা করবে; পর্দা-পুশীদার ধার ধারবে না। এটা কোন মুসলিম সমাজের জন্য কাম্য নয়। বরং আল্লাহ প্রদত্ত পর্দার বিধান মেনে চলাই মন ভাল থাকার পরিচয়। যে মনে তাকওয়া থাকে, যে অন্তরে আল্লাহভীতি থাকে তাকেই ভাল মন ও ভাল অন্তর বলা যায়। এতদ্ব্যতীত কোন অন্তর ভাল অন্তর নয়।
عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَلَا وَإِنَّ فِي الْجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلُحَتْ صَلُحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ أَلَا وَهِيَ الْقَلْبُ-
নু‘মান ইবনু বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘মনে রেখ নিশ্চয়ই মানুষের শরীরে একটি মাংস পিন্ড আছে যা, সঠিক থাকলে সমগ্র দেহই সঠিক থাকে। আর তার বিকৃতি ঘটলে সমস্ত দেহেরই বিকৃতি ঘটে। সে মাংসের টুকরাটি হল অন্তর’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৬৪২)। এ হাদীছ দ্বারা বুঝা গেল অন্তর ঠিক থাকলে ব্যক্তি ঠিক থাকে। আর অন্তর খারাপ হলে ব্যক্তিও খারাপ হয়ে যায়। অর্থাৎ মানুষের পরহেযগারিতা নির্ভর করে মানুষের অন্তরের উপর। এখানে অন্তর ঠিক করার অর্থ হচ্ছে খালেছ অন্তরে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ভয় করা। আর যে অন্তর আল্লাহকে ভয় করে, তা গোপন-প্রকাশ্য সকল প্রকার পাপাচার হতে বিরত থাকে।
عَنْ أَبِيْ أُمَامَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ فَقَالَ اتَّقُوا اللهَ رَبَّكُمْ وَصَلُّوْا خَمْسَكُمْ وَصُوْمُوْا شَهْرَكُمْ وَأَدُّوْا زَكَاةَ أَمْوَالِكُمْ وَأَطِيْعُوْا ذَا أَمْرِكُمْ تَدْخُلُوْا جَنَّةَ رَبِّكُمْ-
উমামা বাহেলী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বিদায় হজ্জের খুৎবা প্রদান করতে শুনেছি। তিনি বলছিলেন, ‘হে মানুষ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় কর, রামাযান মাসের ছিয়াম পালন কর, তোমাদের সম্পদের যাকাত প্রদান কর, তোমাদের নেতাদের আনুগত্য কর, তাহলে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের জান্নাতে প্রবেশ করবে’ (তিরমিযী হা/৬১৬; ইবুন হিববান হা/৭৯৫)। এ হাদীছে ৫টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। (১) আল্লাহকে ভয় করা (২) দিনে-রাতে ৫ ওয়াক্ত ছালাত আদায় করা (৩) রামাযান মাসে ছিয়াম পালন করা (৪) সম্পদের যাকাত প্রদান করা (৫) নেতার আনুগত্য করা। আল্লাহকে ভয় করার অর্থ হচ্ছে তাঁর নির্দেশ প্রতিপালন করা এবং তাঁর নিষিদ্ধ বিষয়কে পরিহার করা। সুতরাং তাকওয়া অর্জনের পাশাপাশি ইসলামের মৌলিক ইবাদত সমূহ আদায় করা মানুষের পরহেযগারীতার প্রমাণ।