৮ যিলহজের পূর্বে কিরান হজকারীর করণীয়
১- মীকাত থেকে বা মীকাত অতিক্রম করার আগে ইহরাম বাঁধা। কিরান হজ পালনকরী বলবে-
لَبَّيْكَ عُمْرَةً وَحَجًّا
(লাব্বাইকা উমরাতান ওয়া হাজ্জান)
এরপর সাধ্যমত তালবিয়া পাঠ করতে থাকা। ১০ যিলহজ বড় জামরাতে কঙ্কর নিক্ষেপের আগ মুহূর্তে তালবিয়া পাঠ বন্ধ করা।
২- তাওয়াফে কুদূম সম্পাদন করা।
৩- হজের মূল সাঈ অগ্রিম আদায় করার ইচ্ছা করলে তাওয়াফে কুদুমের পর সাঈ করে নেয়া। এ তাওয়াফ সুন্নত, ওয়াজিব নয়। কেননা, এই তাওয়াফ না করে সরাসরি মিনায় চলে যাবার অনুমতিও আছে। তখন সাঈ তাওয়াফে যিয়ারতের পর করতে হবে। কুরবানীর দিন পর্যন্ত ইহরাম অবস্থায় থাকা।
৮ যিলহজ
মিনায় গমন করা এবং সেখানে যোহর, আসর ও ইশা দুই রাক‘আত এবং মাগরিব ও পরদিনের ফজরের সালাত নিজ নিজ ওয়াক্তে আদায় করা।
৯ যিলহজ (আরাফা দিবস)
(১) ৯ যিলহজ সূর্যোদয়ের পর আরাফা অভিমুখে যাত্রা। সেখানে যোহর ও আসর দুই ওয়াক্তের সালাত যোহরের ওয়াক্তে এক আযান ও দুই ইকামতে দু’রাক‘আত করে একসাথে আদায় করা। সালাত আদায় শেষ করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দু’আ ও যিকরে মশগুল থাকা।
(২) সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর ধীরে-সুস্থে শান্তভাবে মুযদালিফা অভিমুখে রওয়ানা হওয়া।
(৩) মুযদালিফায় পৌঁছে ইশার ওয়াক্তে এক আযান ও দুই ইকামতে, মাগরিব ও ইশা একসাথে আদায় করা। ইশার সালাত কসর করে দু’রাক‘আত পড়া এবং সাথে বেতরের সালাতও আদায় করে নেয়া।
(৪) মুযদালিফায় রাত্রিযাপন। ফজর হওয়ার পর আউয়াল ওয়াক্তেই ফজরের সালাত আদায় করা। আকাশ ফর্সা হওয়া পর্যন্ত দো‘আ ও মুনাজাতে মশগুল থাকা।
(৫) সূর্যোদয়ের পূর্বে মিনায় রওয়ানা হওয়া। তবে দুর্বলদের ক্ষেত্রে মধ্যরাতের পর মিনার উদ্দেশে রওনা করা জায়েয।
(৬) মুযদালিফা থেকে কঙ্কর সংগ্রহ করা যেতে পারে তবে জরুরী নয়। কঙ্কর সংখ্যা হবে ৫৯ বা ৭০টি। মিনা থেকেও কঙ্কর সংগ্রহ করা চলে। পানি দিয়ে কঙ্কর ধৌত করার কোনো বিধান নেই।
১০ যিলহজ
১। জামরায়ে আকাবা তথা বড় জামরায় সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করা। নিক্ষেপের সময় প্রত্যেকবার বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বা আল্লাহু আকবার বলা।
২। হাদী তথা পশু যবেহ করা, অন্যকে দায়িত্ব দিয়ে থাকলে হাদী যবেহ হয়েছে কি-না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া। হারামের অধিবাসীদের জন্য হাদী যবেহ নেই।
৩। মাথা মুণ্ডন অথবা চুল ছোট করা। মুণ্ডন করাই উত্তম। নারীদের ক্ষেত্রে আঙুলের অগ্রভাগ পরিমাণ ছোট করা।
৪। মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করার মাধ্যমে ইহরাম হতে বেরিয়ে প্রাথমিক হালাল হয়ে যাওয়া, এতে স্বামী-স্ত্রী মেলা-মেশা ছাড়া ইহরাম অবস্থায় হারাম হয়ে যাওয়া অন্যসব কিছু জায়েয হয়ে যাবে।
৫। তাওয়াফে যিয়ারত সম্পাদন করা। এ ক্ষেত্রে ১১ ও ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত বিলম্ব করার অবকাশ রয়েছে। অধিকাংশ শরীয়তবিদের মতানুসারে এরপরেও আদায় করা যাবে, তবে ১৩ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বে সেরে নেয়া ভাল।
৬। তাওয়াফে কুদুমের সাথে সাঈ না করে থাকলে সাঈ করা।
৭ । ১০ তারিখ দিবাগত রাত মিনায় যাপন।
উল্লেখ্য, তাওয়াফে যিয়ারত আদায়ের পর স্বামী-স্ত্রীর মেলা-মেশাও জায়েয হয়ে যায়।
১১ যিলহজ
সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে যাওয়ার পর তিন জামরার প্রত্যেকটিতে সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ। ছোট জামরা থেকে শুরু করে বড় জামরায় শেষ করা। ছোট ও মধ্য জামরায় নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে দু’হাত উঠিয়ে দীর্ঘ দু’আ করা। বড় জামরায় কঙ্কর নিক্ষের পর দো‘আ নেই।
১২ যিলহজ
১। ১২ তারিখ (১১ তারিখ দিবাগত রাত) মিনায় রাতযাপন।
২। সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে যাওয়ার পর তিন জামরার প্রত্যেকটিতে সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ। শুধু ছোট ও মধ্য জামরাতে নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে দু’হাত উঠিয়ে দীর্ঘ দো‘আ করা।
৩। হাজীদের জন্য ১২ তারিখে মিনা ত্যাগ করা জায়েয। তবে শর্ত হচ্ছে সূর্যাস্তের পূর্বেই মিনার সীমানা অতিক্রম করতে হবে।
৪। মক্কা ত্যাগের পূর্বে বিদায়ী তাওয়াফ সম্পন্ন করা।
১৩ যিলহজ
১। সূর্য হেলে যাওয়ার পর পর তিন জামরায় সাতটি করে কঙ্কর নিক্ষেপ করা। ছোট জামরা থেকে শুরু করে বড় জামরাতে গিয়ে শেষ করা। শুধু ছোট ও মধ্য জামরাতে নিক্ষেপের পর দাঁড়িয়ে দু’হাত উঠিয়ে দীর্ঘ দো‘আ করা।
২। মিনা ত্যাগ করে মক্কায় রওয়ান করা। মক্কা ত্যাগের আগে বিদায়ী তাওয়াফ সম্পাদন করা। প্রসূতি ও স্রাবগ্রস্ত মহিলাদের জন্য বিদায়ী তাওয়াফ না করার অনুমতি আছে।