দাড়ি রাখা পুরুষের জন্য একটি প্রকৃতিগত ব্যাপার। আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, ‘‘প্রকৃতিগত সুন্নাত হল ১০টি; মোচ ছাঁটা, দাড়ি বাড়ানো, দাঁতন করা, নাকে পানি নেওয়া (নাক পরিষ্কার করা), নখ কাটা, আঙ্গুল ধোয়া, বোগলের লোম তুলে পরিষ্কার করা, নাভির নীচের লোম চেঁছে সাফ করা, পেশাব-পায়খানার পর পানি ব্যবহার করা এবং কুলি করা।’’[1]
দাড়ি চাঁছা, ছিঁড়া বা ছোট করে ছাঁটা হারাম ও কাবীরা গোনাহ। যেহেতুঃ
(ক) দাড়ি বর্ধনের উপর রসূলের আদেশ লংঘন এবং তাতে তাঁর বিরোধিতা করা হয়।
আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘‘তোমরা দাড়ি ছেড়ে দাও, মোচ ছেঁটে ফেলো, পাকা চুল রঙিয়ে ফেলো এবং ইয়াহুদী ও খ্রীষ্টানদের সাদৃশ্য অবলম্বন করো না।’’[2]
তিনি আরো বলেন, ‘‘মোচ ছেঁটে ও দাড়ি রেখে অগ্নিপূজকদের বৈপরীত্য কর।’’[3]
(খ) দাড়ি না রাখলে কাফেরদের প্রতিরূপ ধারণ করা হয়। অথচ রসূল (ﷺ) বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি যে জাতির সাদৃশ্য ধারণ করে, সে তাদেরই শ্রেণীভুক্ত।’’[4]
(গ) দাড়ি চেঁছে ফেললে নারীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা হয়। অথচ রাসুল (ﷺ) নারীদের আকৃতি ধারণকারী পুরুষদেরকে অভিসম্পাত করেছেন।
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসুল (ﷺ) নারীদের বেশধারী পুরুষদেরকে এবং পুরুষদের বেশধারিণী নারীদেরকে অভিশাপ করেছেন।[5]
(ঘ) দাড়ি কাটলে (আল্লাহর বিনা অনুমতিতে) আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন এবং শয়তানের প্রতিজ্ঞার আনুগত্য হয়। আল্লাহ তাআলা (শয়তানের প্রতিজ্ঞা উল্লেখ করে) বলেন,
وَلآمُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللهِ
অর্থাৎ, আর আমি তাদেরকে নিশ্চয় নির্দেশ দেব, যাতে তারা আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত করবেই।’’[6]
আর যেহেতু তাতে সেই প্রকৃতি বিনাশ করা হয়, যে প্রকৃতির উপর আল্লাহ সৃষ্টিকে সৃজন করেছেন। কারণ দাড়িকে (নিজের অবস্থায়) বর্জন করা প্রকৃতিগত নিয়মের পর্যায়ভুক্ত।
(ঙ) দাড়ি রাখা সকল নবী-রসূলগণের সুন্নাতী পদ্ধতি (তরীকা)। আর তাঁদের তরীকা থেকে বিচ্যুত হওয়া কোন মুসলিমের উচিত নয়।
(চ) দাড়ি মুসলিমদের এক প্রতীক। এই প্রতীক নিশ্চিহ্ন করা কোন মুসলিমের উচিত নয়।
(ছ) দাড়ি হল পৌরুষ ও সম্মানের নিদর্শন, পুরুষের সৌন্দর্য ও সমীহপূর্ণ ভূষণ। বৃদ্ধ বয়সে টোল পড়া গালের আবরণ।
[2]. আহমাদ, সহীহুল জা’মে হা/১০৬৭
[3]. মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/২৬০
[4]. আহমাদ ২/৫০, আবূ দাঊদ হা/৪০৩১, সহীহুল জা’মে হা/৬০২৫
[5]. বুখারী তাওহীদ পাবঃ হা/ ৫৮৮৫, আসহাবে সুনান
[6]. সূরা নিসা-৪:১১৯