এ বিভক্তি ও দলাদলি দুঃখজনক হলেও এজন্য হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। এর মধ্য দিয়েই দীনী দাওয়াত এগিয়ে চলেছে ও চলবে। আমাদেরকেও দাওয়াত এগিয়ে নিতে হবে। আমরা হয়ত উম্মাতের এ বিভক্তি দূর করতে পারব না, তবে আমাদের দ্বারা যেন কোনো অবস্থাতেই উম্মাতের বিভক্তি ও বেদনা বৃদ্ধি না পায়। আমরা অনেক সময় ঐক্যের কথা বলি, তবে আমাদের বিভিন্ন মতবাদ আমাদের অজ্ঞাতসারেই অনৈক্য ও উগ্রতা উস্কে দেয়। এর অন্যতম বিষয় হলো ‘নিজেদের কর্ম বা কর্মপদ্ধতিকে’ একমাত্র ‘‘সঠিক’’ বা একমাত্র ‘‘পরিপূর্ণ’’ বলে দাবি করা।
অতীতে ও বর্তমানে আমাদের দেশে ও সকল মুসলিম দেশে ইসলামী দাওয়াতের দায়িত্ব বিভিন্নভাবে পালিত হয়েছে ও হচ্ছে। তন্মধ্যে চারটি ধারা উল্লেখযোগ্য: (১) শিক্ষা বিস্তার, (২) গণ-দাওয়াত, (৩) দরবার-খানকা ও (৪) রাজনীতি। এ চারটি ধারার মাধ্যমে সকলেই একটি ইবাদতই পালন করছেন, যার নাম ‘‘আল্লাহর পথে দাওয়াত’’। প্রত্যেকে নিজের পদ্ধতিকে উত্তম প্রমাণ করার জন্য বিভিন্ন দলীল প্রমাণ পেশ করতে যেয়ে এমন ধারণা দিচ্ছেন যে, তার পদ্ধতির বাইরের পদ্ধতিগুলিতে যারা এ ইবাদত পালন করছেন তাদের ইবাদত হচ্ছে না বা কম মানের হচ্ছে। এভাবে মানের কারণে নয়, শুধু পদ্ধতির কারণে অন্যের কর্মকে অবমূল্যায়ন করার ফলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ অপসারিত হচ্ছে, দলাদলি ও গালাগালি বৃদ্ধি পাচ্ছে, পারস্পরিক সহনশীলতা কমছে, উগ্রতা বাড়ছে এবং উগ্রতার পটভূমি প্রসারিত হচ্ছে। সর্বোপরি এভাবে বিচ্ছিন্নতা স্থায়ী হচ্ছে এবং উগ্রতা ও অন্যান্য অবক্ষয় রোধে ঐক্যবদ্ধ ইজতিহাদের সম্ভাবনা রহিত হচ্ছে।